বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্রুত পণ্য পরিবহনের জন্য প্রশস্ত করা হচ্ছে মিরসরাইয়ের বারইয়ারহাট-হেঁয়াকো-রামগড় সড়ক। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খাগড়াছড়ির রামগড় স্থলবন্দর দিয়ে ৩ ঘণ্টায় পণ্য যাবে ভারতে। এতে সময় ও পরিবহন ব্যয় সাশ্রয় হবে। গতি ফিরবে আমদানি ও রফতানিতে। প্রকল্পটি ভারত সরকারের এলওসি-৩ এবং বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়ন তহবিলের অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। ১৮ ফুট প্রস্থের সড়কটি উন্নীত করা হচ্ছে ৩৮ ফুটে। এরই মধ্যে প্রকল্পের ২০ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের জুনে সেতু নির্মাণের মাধ্যমে সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হয়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা। প্রকল্পের বিষয়ে ২০১৭ সালের ৫ এপ্রিল দিল্লিতে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকার দেবে ৫১৩ কোটি ৭ লাখ টাকা। বাকি ৫৯৪ কোটি ৭ লাখ টাকা ঋণ দেবে ভারত সরকার। প্রকল্পের আওতায় রয়েছে ২৪৯ দশমিক ২০ মিটারের নয়টি সেতু ও ১০৮ মিটারের ২৩টি কালভার্ট এবং ৩৮ ফুট প্রস্থের ৩৮ কিলোমিটার সড়ক। এর আগে জাইকার অর্থায়নে অন্য একটি প্রকল্পের মাধ্যমে রামগড় থেকে বারইয়ারহাট পর্যন্ত ১৬টি সেতু ও কালভার্টের কাজ শেষ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিপিসিএল। এজন্য ব্যয় হয়েছে ২৮১ কোটি টাকা। সেতু ছাড়াও ২০০-৩০০ মিটার সংযোগ সড়কও নির্মাণ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, গত বছর জুন-জুলাইয়ে প্রচুর বৃষ্টি থাকায় কাজের অগ্রগতি তেমন হয়নি। দেড় বছর মেয়াদের এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর। কাজ শেষ হলে ঢাকা থেকে রামগড়ের যোগাযোগও সহজ হবে। এছাড়া রামগড় স্থলবন্দর ব্যবহার করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মাত্র ৩ ঘণ্টায় ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে পণ্য যাবে ভারতে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে উৎপাদিত পণ্য খুব সহজে ভারতে রফতানি করা যাবে। সড়কটি প্রশস্তকরণের কাজ পেয়েছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অশোকা বিল্ডকন লিমিটেড। রামগড়ের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ স্থাপনে এরই মধ্যে মিরসরাই ও ফটিকছড়িসহ উত্তর চট্টগ্রামের সড়ক ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন উন্নয়ন। এছাড়া মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল ও চট্টগ্রাম বন্দরের পাশাপাশি মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরের কর্মকাণ্ডে বারইয়ারহাট-হেঁয়াকো-রামগড় সড়ক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বণিক বার্তাকে বলেন, ‘গত বছরের জুনে বারইয়ারহাট-হেঁয়াকো-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হয়েছে। তবে জুন-জুলাইয়ে বৃষ্টি থাকায় কাজের তেমন অগ্রগতি হয়নি। এখন দ্রুত গতিতে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। উদ্বোধনের পর থেকে প্রকল্পের অগ্রগতি ২০ শতাংশ। প্রকল্পের মেয়াদ চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত রয়েছে।’