প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অবস্থিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহামায়া লেক। ১৯৯৯ সালে মহামায়া খালের ওপর স্লুইস গেট স্থাপনের মাধ্যমেই এর সৃষ্টি। দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করায় আবর্জনা ও কচুরিপানা জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে লেকটি। চলতি বছর পর্যটন কেন্দ্রটি প্রায় ২ কোটি টাকায় ইজারা দেয়া হলেও পরিষ্কারের দায়িত্ব নিচ্ছে না বন বিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। দিন দিন লেকের পানি হয়ে উঠছে দুর্গন্ধময়।
বন বিভাগ ও পাউবো সূত্রে জানা গেছে, জলাবদ্ধতা ও পাহাড়ি ঢল রোধ এবং শুষ্ক মৌসুমে কৃষি খাতে সেচ সুবিধার লক্ষ্যে ১৯৯৯ সালে মহামায়া খালের ওপর স্লুইস গেট নির্মাণ করে পাউবো। পরবর্তী সময়ে পুরো প্রকল্প বাস্তবায়নে ২৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। প্রায় ১১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের প্রকল্পটি রূপ নেয় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম লেকে। ২০১০ সালের ২৯ ডিসেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সেচ প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ভ্যাট ও ট্যাক্স ছাড়া ১ কোটি ৪১ লাখ টাকায় মহামায়া ইকোপার্ক ইজারা নেয় হক অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট। এরই মধ্যে তথ্য কেন্দ্র নির্মাণসহ বেশকিছু উন্নয়নকাজ করেছে বন বিভাগ। আর সড়ক সংস্কারের কাজ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
বন বিভাগ উত্তরের মিরসরাই রেঞ্জ কর্মকর্তা শাহান শাহ নওশাদ বলেন, ‘লেকের পানি পরিষ্কারের দায়িত্ব পাউবোর। পানি পরিষ্কার ও সড়ক সংস্কারে আমরা গত বছর মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখেছি। তবে সড়কটি সংস্কার করা হলেও পানি পরিষ্কার করা হয়নি। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ডিএফও বরাবর আরো একটি চিঠি লিখেছি। কিছুদিন আগে পাউবোর এক কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানালে তিনি লেক পরিষ্কারের জন্য বরাদ্দ নেই বলে জানান।’
তবে চট্টগ্রাম পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদের বণিক বার্তাকে বলেন, ‘লেকের পানি পরিষ্কারের দায়িত্ব পাউবোর নয়। এটি করবে বন বিভাগ। কারণ মহামায়া ইজারা দিয়ে যে রাজস্ব আহরণ হয়, তা বন মন্ত্রণালয়ে জমা হয়। আমরা শুধু পানি নিষ্কাশনের মাধ্যমে কৃষকদের চাষাবাদ নিশ্চিত করি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মহামায়ার পানি দিয়ে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার কৃষকরা চাষাবাদ করেন।’