চলতি ২০২৩-২৪ মৌসুমে সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলায় ২৭২ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। এরই মধ্যে গাছে ফলন আসতে শুরু করেছে। আর এই সময়ে দেখা দিয়েছে ল্যাদা পোকার আক্রমণ। গাছের ডগা ও পাতা কেটে দিচ্ছে পোকা।
কৃষক বলছেন, বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করেও প্রতিকার মিলছে না। কৃষি কর্মকর্তাদের দাবি, যেসব কৃষক একটু দেরিতে ভুট্টা চাষ করেছেন, মূলত তাদের খেতেই পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। তাছাড়া বিরূপ আবহাওয়ার কারণেও ল্যাদা পোকার উপদ্রব দেখা দিতে পারে। পোকা দমনে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার নলকুড়া গ্রামের কৃষক গোলাম রসুল জানান, চলতি মৌসুমে দুই বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। গাছও বেড়ে উঠছিল। কিন্তু গাছে থোড় আসার আগমুহূর্তে ল্যাদা পোকা ডগা ও পাতা কেটে দিচ্ছে। সিন্যারেল, কারবোমেট, এগ্রিজিনন, অটোভা এবং টাটাফিয়ান ব্যবহার করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।
পাশের লাবসা গ্রামের খলিলুর রহমান ও আবু সাইদ জানান, গাছ দেড়-দুই ফুট লম্বা হওয়ার পর ল্যাদা পোকা আক্রমণ শুরু করে। গাছের পাতা ও ডগা কেটে দিচ্ছে। চলতি মৌসুমে তারা এক-দেড় বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। তবে পোকার আক্রমণে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনির হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘যেসব কৃষক একটু দেরিতে ভুট্টা চাষ করেছেন তাদের খেতেই পোকার আক্রমণ দেখা গেছে। কৃষক যাতে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পান, সেজন্য কীটনাশক ব্যবহারের পাশাপাশি পরামর্শও দেয়া হচ্ছে।’
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ৫০ হেক্টর, কলারোয়ায় ৪১, তালায় ১২৪, দেবহাটায় সাত, কালীগঞ্জে ২৫, আশাশুনিতে ১৩ ও শ্যামনগরে ১৩ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়েছে। সব মিলিয়ে সাতক্ষীরায় ২৭২ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ২৯ হেক্টর বেশি। গত মৌসুমে জেলায় ২৪৪ হেক্টর জমিতে ফসলটি চাষ হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘জেলায় ভুট্টার আবাদ বাড়াতে সরকারের পক্ষ থেকে কৃষককে প্রণোদনাসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে। ভুট্টা লাভজনক একটি ফসল। তবে বিচ্ছিন্ন কিছু এলাকার ভুট্টা খেতে ল্যাদা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। দ্রুত সেসব এলাকায় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’