রাঙ্গামাটিতে চালের লক্ষ্য পূরণ হলেও ধান সংগ্রহে ঘাটতি

বোরো মৌসুমে ধান ও চাল সংগ্রহের সময়সীমা ছিল ৭ মে থেকে ৩১ আগস্ট। তবে নির্ধারিত প্রায় চার মাস ধান-চাল সংগ্রহের পর রাঙ্গামাটিতে আর সময়সীমা বাড়ানো হয়নি।

বোরো মৌসুমে ধান ও চাল সংগ্রহের সময়সীমা ছিল ৭ মে থেকে ৩১ আগস্ট। তবে নির্ধারিত প্রায় চার মাস ধান-চাল সংগ্রহের পর রাঙ্গামাটিতে আর সময়সীমা বাড়ানো হয়নি। নির্ধারিত সময়ে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। তবে ধান সংগ্রহে ৪৫ শতাংশ ঘাটতি রয়েছে।

কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজার দামের চেয়ে খাদ্য বিভাগ নির্ধারিত দাম কম। এ কারণে খাদ্য বিভাগের কাছে ধান বিক্রিতে অনেক কৃষকের অনীহা রয়েছে। বাড়তি লাভের আশায় তারা বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছে ধান বিক্রি করছেন।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের তথ্যমতে, চলতি বছর রাঙ্গামাটি জেলায় ৮২৩ টন বোরো ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল খাদ্য বিভাগের। তবে ৪৫৬ টন সংগ্রহ করে গুদামজাত করা গেছে। ঘাটতি রয়েছে ৩৬৭ টন। অন্যদিকে চুক্তিভিত্তিক আটটি রাইস মিলের কাছ থেকে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৬১৬ টন আতপ চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। এ বছর প্রতি কেজি বোরো ধানের ক্রয়মূল্য ছিল ৩২ টাকা এবং প্রতি কেজি আতপ চালের দাম ধরা হয় ৪৪ টাকা।

উপজেলাভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ১০ উপজেলা থেকে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও কেবল তিনটি উপজেলা থেকে সংগ্রহ করা গেছে। বাঘাইছড়ি ও জুরাছড়ি থেকে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। লংগদুতে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় অর্ধেক; ৯০ টন ধান সংগ্রহ হয়। এছাড়া সদর উপজেলা থেকে ৫৫, কাউখালীতে ৫১, কাপ্তাইয়ে ৩১, রাজস্থলীতে ২৮, বিলাইছড়িতে ২৫, জুরাছড়ি ৪৭, নানিয়ারচরে ৪৯, বরকলে ৪০, লংগদুতে ১৭৮ এবং বাঘাইছড়ি থেকে ৩১৯ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এ বছর বোরো মৌসুমে ধান ও চাল সংগ্রহের সময়সীমা ছিল ৭ মে থেকে ৩১ আগস্ট। তবে নির্ধারিত প্রায় চার মাস ধান-চাল সংগ্রহের পর আর সময়সীমা বাড়ানো হয়নি।

খাদ্য বিভাগ সংশ্লিষ্টরা জানান, রাঙ্গামাটির ১০ উপজেলায় ধান আবাদ ও উৎপাদন হলেও সব উপজেলা থেকে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সংগ্রহ করা যায়নি। বিশেষ করে বিভিন্ন উপজেলায় কৃষক পরিবারের বার্ষিক চাহিদা অনুযায়ী ধান উদ্বৃত্ত থাকায় তারা বিক্রি করে না।

মানিকছড়ির মেসার্স তন্ময় অটোরাইচ মিলের স্বত্বাধিকারী তপন কান্তি পাল বণিক বার্তাকে বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী আমার মিল থেকে ৪৩ টন আতপ চালের চাহিদা ছিল। পরবর্তী সময়ে আরো ৪৩ টন চাল নেয়া হয়েছে। মোট ৮৬ টন আতপ চাল ৪৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাঙ্গামাটি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কানিজ জাহান বিন্দু বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বোরো মৌসুমে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান সংগ্রহ না হলেও অর্ধেকের বেশি পূরণ হয়েছে। জেলার কয়েকটি উপজেলায় এবার বন্যা পরিস্থিতির কারণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল না। এজন্য আমরা সংগ্রহ কার্যক্রম সমাপ্ত করেছি।’

আরও