সিলেটের দুই পর্যটন কেন্দ্র থেকে লুট হয়েছে পাথর

সরকারের পদত্যাগ দাবিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে গত সপ্তাহে অস্থিশীল হয়ে পড়ে দেশ। সোমবার শেখ হাসিনা পদত্যাগ করলে ভেঙে পড়ে আইন-শৃঙ্খলা।

সরকারের পদত্যাগ দাবিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে গত সপ্তাহে অস্থিশীল হয়ে পড়ে দেশ। সোমবার শেখ হাসিনা পদত্যাগ করলে ভেঙে পড়ে আইন-শৃঙ্খলা। এ সুযোগে সিলেটের পর্যটন কেন্দ্র সাদাপাথর ও জাফলং থেকে লুট হয়েছে কয়েক কোটি টাকার পাথর। যদিও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে সেটা এখন বন্ধ হয়েছে। জেলা প্রশাসন বলছে, শুধু পর্যটন কেন্দ্র নয়, আরো অনেক কিছু লুটপাট হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সেনাবাহিনী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জ ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর পর্যটন কেন্দ্রের মূল আকর্ষণ সাদা পাথর। সীমান্ত থেকে বয়ে আসা স্বচ্ছ পানি সাদা পাথরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মিলিত হয় ধলাই নদীতে। পর্যটন কেন্দ্রটির পাথরের দিকে সবসময় দৃষ্টি থাকে পাচারকারীদের। সরকারি নিষেধাজ্ঞা ও প্রশাসনের নজরদারির পরও প্রতি বছর লুট হয়ে আসছিল সাদা পাথর। এবার সরকার পতনের সুযোগে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে লুট করা হয়েছে পাথর। ৫-৬ আগস্ট শত শত ছোট-বড় নৌকায় করে পাথর লুট হয়। তারা সরকার পতনের পর নিরাপত্তাহীনতার সুযোগ কাজে লাগায়। তবে খবর পেয়ে ছাত্র-জনতা পাথর লুটকারীদের তাড়িয়ে দেয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরাও পাথর লুট থামাতে এগিয়ে আসেন। এরপর সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে চলে অভিযান। বিপুল পরিমাণ পাথর জব্দও করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, সাদাপাথর এলাকায় কোটি কোটি ঘনফুট ছোট-বড় পাথর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। দেখলে মনে হয় কেউ তা বিছিয়ে রেখেছে। সে পাথর নৌকাভর্তি করতে মাত্র ১০-১৫ মিনিট সময় লাগে। পুলিশ, আনসার ও বিজিবি না থাকার সুযোগে যে যার মতো করে লুটপাট শুরু করে। স্থানীয়দের অনেকে এসব পাথর নিয়ে নদীর চর কিংবা বাসাবাড়ির সামনে স্তূপ করে রেখেছে। দূর-দূরান্ত থেকে এসেও লোকজন নৌকায় করে পাথর নিয়ে গেছে। অনেকেই ছোট নৌকা দিয়ে পাথর ঘাটে নিয়ে এসে বিক্রি করছিল।

রফিকুল ইসলাম নামে এক বাসিন্দা জানান, সেনা সদস্যরা এগিয়ে না এলে এতদিনে পুরো পর্যটন কেন্দ্র ধ্বংস হয়ে যেত। আপাতত রক্ষা পেয়েছে। এর মধ্যেও অনেকেই লুকিয়ে পাথর উত্তোলনের চেষ্টা করছে।

অন্যদিকে সরকার পতনের পরপর জাফলং কোয়ারি থেকেও পাথর লুট হয়েছে। ৫ ও ৬ আগস্ট জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকেও শত শত নৌকায় এসে লোকজন পাথর লুট শুরু করে। গত বৃহস্পতিবার জাফলং এলাকায় সেনাবাহিনী ছাড়াও স্থানীয়রা পাথর লুট রোধে কাজ শুরু করে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও জাফলং থেকে পাথর চুরি না করতে মাইকিং করছেন।

গোয়াইনঘাট প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মনজুর আহমদ বলেন, ‘সরকার পতনের পর অনেকেই পাথর লুটপাটে নামে। পরে স্থানীয় লোকজন ও সেনাবাহিনীর নজরদারিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।’

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, ‘শুধু পর্যটন কেন্দ্র নয়, আরো অনেক কিছু লুটপাট হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সেনাবাহিনী।’

আরও