জামায়াতের নিবন্ধন: খারিজ আপিল পুনরুজ্জীবিত করলেন আপিল বিভাগ

এক রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় হাইকোর্ট। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরবর্তীতে হাইকোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জামায়াতে ইসলামী।

রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণার রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলটি পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন মঞ্জুর করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। খবর বাসস।

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বিভাগ বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) এই আদেশ দেন।

আদালতে জামায়াতের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এহসান আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। আজকের এই আদেশের ফলে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণার রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলটি আবার শুনানি হবে সর্বোচ্চ আদালতে।

এক রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরবর্তীতে হাইকোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জামায়াতে ইসলামী। তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানিতে জামায়াতের মূল আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় গত নভেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ বলে আপিল খারিজের আদেশ দেন। ফলে রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল থাকে।

অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, আপিল বিভাগে পেন্ডিং মামলাটি পূর্ণাঙ্গ শুনানি হয়ে নিষ্পত্তি হয়নি। ‘ডিসমিসড ফর ডিফল্ড’ হয়েছে। সেজন্য আমরা মামলাটি পুনরুজ্জীবনের আবেদন করি। এখন আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পর মেরিট অনুযায়ী শুনানি হবে। সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তে যদি আমাদের আপিল অ্যালাউ হয় তখন আমরা নিবন্ধন ফিরে পাব। দলীয় প্রতীক ফিরে পাব। একইভাবে নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পাওয়ার মধ্য দিয়ে আগামী নির্বাচনগুলো যখন আয়োজন করা হবে তখন জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক দল হিসেবে অংশগ্রহণ করতে কোনো আইনগত বাধা থাকবে না।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে শেখ হাসিনার সরকার। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮(১) ধারায় জামায়াত, ছাত্রশিবিরসহ তাদের অন্যান্য অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। তবে গত ২৮ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

তিনি বলেন, দেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালীন গত ১ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ২০০৯ এর ধারা ১৮(১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে দেশে জামায়াত ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। বিগত সরকারের ওই সিদ্ধান্তের পুনঃবিবেচনা চেয়ে আমরা নতুন সরকারের কাছে আবেদন করি। তারা বিষয়টি আমলে নেয়। এই বিষয়ে ২৮ আগস্ট নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

আরও