মিরসরাইয়ে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে বাড়ছে অগ্নিকাণ্ড

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে বাড়ছে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। বিগত পাঁচ বছরে উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় ২৯৪টি অগ্নিকাণ্ড হয়েছে।

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে বাড়ছে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। বিগত পাঁচ বছরে উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় ২৯৪টি অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। সবচেয়ে বেশি অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে। পাঁচ বছরে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে ৮৮টি অগ্নিকাণ্ড হয়েছে।

এছাড়া রান্নাঘরের চুলা থেকে আগুন লেগেছে ৩৪ বার ও জ্বলন্ত বিড়ি-সিগারেট থেকে ২৩ বার অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। সবচেয়ে বেশি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে ২০২২ সালে। ওই বছর ৭২টি অগ্নিকাণ্ড ঘটে। তবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে সবচেয়ে বেশি অগ্নিকাণ্ড হয়েছে ২০১৮ সালে। ওই বছর বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে আগুন লেগেছে ২২টি স্থানে।

মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে উপজেলায় ৪৬টি অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এগুলোর মধ্যে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে ২২ বার। রান্নাঘরের চুলা থেকে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে আটটি। ৪৬টি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতি হয় প্রায় ৪৭ লাখ ৫ হাজার টাকার। ২০১৯ সালে ৬০টি অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এর মধ্যে ১৮টি ঘটে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে। আটটি অগ্নিকাণ্ড ঘটে রান্নাঘরের চুলা থেকে। ৬০টি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতি হয় প্রায় ৫২ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। ২০২০ সালে উপজেলায় ৫১টি অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এগুলোর মধ্যে ১১টি অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয় বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে। নয়টি অগ্নিকাণ্ড হয় রান্নাঘরের চুলা থেকে। এতে ক্ষতি হয় প্রায় ৩৫ লাখ ৩৬ হাজার টাকার। ২০২১ সালে উপজেলায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে ৬৫টি। এর মধ্যে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় ২০টি স্থানে। চুলা থেকে আগুন লাগে চারটি বাড়িতে। এছাড়া জ্বলন্ত বিড়ি-সিগারেট থেকে আগুনের সূত্রপাত ১০টি স্থানে। ৬৫টি অগ্ণিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতি হয় ২১ লাখ ২১ হাজার টাকার। ২০২২ সালে উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় আগুন লাগে ৭২টি স্থানে। এতে ১৭টি স্থানে আগুন লেগেছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে। ১৩টি স্থানে আগুন লেগেছে জ্বলন্ত বিড়ি-সিগারেটের কারণে। এছাড়া রান্নাঘরের চুলা থেকে আগুন লাগে পাঁচটি স্থানে। ৭২টি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতি হয় ৩৬ লাখ ২০ হাজার টাকার। 

বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত কেন বেশি হয় এমন প্রশ্নের জবাবে বারইয়ারহাট পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম আবু জাফর বণিক বার্তাকে বলেন, ‘অসতর্কতার কারণে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। অগ্নিকাণ্ড কমাতে হলে আমাদের আরো বেশি সচেতন হতে হবে। ব্যবহার করতে হবে মানসম্মত বৈদ্যুতিক সামগ্রী।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা ইমাম হোসেন পাটোয়ারী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত কমাতে হলে আমাদের সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে কোনো বৈদ্যুতিক সুইচে ত্রুটি দেখা গেলে দ্রুত সারিয়ে ফেলা উচিত। এছাড়া বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগলে দ্রুত লাইন বন্ধ করে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিতে হবে।’

আরও