ঔপনিবেশিক আমলে ইন্দোনেশিয়া থেকে লুট হয়েছে বেশকিছু শিল্পদ্রব্য। এর অনেকগুলোই আছে নেদারল্যান্ডসে। ডাচ সরকার ঘোষণা করেছে ২৮৮টি জিনিস তারা ফেরত দেবে। এর মধ্যে রয়েছে অস্ত্র, মুদ্রা, গহনা ও ১৯০৬ সালের যুদ্ধে বালির কাছ থেকে লুট করা কাপড়। আনুষ্ঠানিক হস্তান্তর ২০ সেপ্টেম্বর আমস্টারডামের ওয়ারেল্ডমিউজিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার সংস্কৃতি বিষয়ক পরিচালক হিলমার ফারিদ। ডাচ শিক্ষামন্ত্রী এপ্পো ব্রুইনস বলেন, ‘ঔপনিবেশিক সময়ে সাংস্কৃতিক বস্তু প্রায় লুট হয়েছে বা তারা জোর করে নিয়েছে।"এ ফেরত দেয়া জিনিসপত্র সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’
এর আগে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে প্রায় ৫০০টি আইটেম ইন্দোনেশিয়া ও শ্রীলংকায় ফিরিয়ে দেয়া হয়েছিল। এসব ফেরত দেয়া হয়েছে বলে শিল্পকর্মের উৎস দেশের দাবি এবং সরকার নিযুক্ত স্বাধীন কলোনিয়াল কালেকশন কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে।
নেদারল্যান্ডসে নতুন সরকার এসেছে জুলাইয়ে। দক্ষিণপন্থী পিভিভির নেতৃত্ব দিচ্ছেন গ্রিট ওয়াইল্ডার্স। নির্বাচনের আগেই তারা বলেছিলেন এ ধরনের শিল্পকর্ম বিক্রির বিপক্ষে তাদের অবস্থান। ঔপনিবেশিক সময়ের লুট বিষয়ের বিশেষজ্ঞ জো ভ্যান বিউদেনও এ বিষয়ে একমত। তিনি নিউ সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট পার্টির সভ্য। তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে এনএসসিও মনে করে শিল্পকর্ম প্রত্যর্পণ বিষয়ের কাজটি সামনেও চলমান থাকবে।’
একটি প্রতিবেদন অনুসারে দক্ষিণ বালির ২৮২টি অবজেক্ট "পুপুটান বাদুং" সংগ্রহ থেকে লুট করা হয়েছিল। ১৯০৬ সালের সামরিক অভিযানে ডাচ সেনাবাহিনী বাদুং ও তাবানান রাজ্যগুলোর বিরুদ্ধে আক্রমণ চালায়। লুট করা জিনিসের মধ্যে রয়েছে"ক্রিস, গিল্ডেড তীরের মাথা, মুদ্রা ও গহনা। কমিটি বলেছে, এ বস্তুগুলো অনিচ্ছাকৃতভাবে হারানো" হয়েছে এবং এগুলোকে শর্তহীনভাবে ফেরত দেয়া উচিত।
এ সেনা আক্রমণে এক হাজারের মতো বালি অধিবাসী নিহত হয়েছিল। অন্যদিকে নেদারল্যান্ডসে সেনা মারা যান মাত্র চারজন। এক সপ্তাহ পর তাবানানে আক্রমণ করে ডাচ আর্মি সেখানকার রাজাকে অন্তরীণ করে। সে সময়ে সৈন্যরা তুমুল লুণ্ঠন চালায়। রাজপ্রাসাদ থেকে তারা লুট করে নেয় অনেক শিল্পকর্ম। সব মিলিয়ে ডাচদের হাতে এসেছিল অনেক কিছুই। এবার তারা সেসব ফেরত দিচ্ছেন।
এছাড়া ফেরত দেয়া জিনিসের মধ্যে চারটি ভাস্কর্য রয়েছে: গনেশের একটি মূর্তি ও সিংগাসারির একটি হিন্দু-বৌদ্ধ মন্দিরের ব্রহ্মা, ভৈরব এবং নন্দীর মূর্তি।