ডিবি অফিসে জোর করে আটকে রাখার অভিযোগ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক। তারা আরো বলেছেন, আটক
থাকা অবস্থায় জোর করে খাবার টেবিলে বসে ভিডিও করানো হয় এবং গণমাধ্যমের সামনে মিথ্যা
বিবৃতি দিতে বাধ্য করা হয়।
আজ শুক্রবার (২ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো
এক বিবৃতিতে এসব অভিযোগ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক—মো. নাহিদ ইসলাম, সারজিস
আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, আসিফ মাহমুদ, নুসরাত তাবাসসুম এবং আবু বাকের মজুমদার।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৬ জুলাই ঢাকার
গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক মো. নাহিদ
ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে ডিবি পুলিশ জোরপূর্বক মিন্টো রোডের ডিবি
অফিসে তুলে নিয়ে আসে। মো. নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় ছিল।
২৭ জুলাই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে সাইন্সল্যাব থেকে জোরপূর্বক ডিবি
অফিসে তুলে নিয়ে আসা হয়। ২৮ জুলাই সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুমকে ভোররাতে বাসা ভেঙে জোরপূর্বক
ডিবি অফিসে নিয়ে আসা হয়।
ডিবি অফিসে আটকে রাখা হয়েছিল বলে
অভিযোগ করেছেন ছয় সমন্বয়ক। বিবৃতিতে তারা বলেন, মূলত আন্দোলন ও নেতৃত্বকে ছত্রভঙ্গ
করতেই ১৯ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের গুম, গ্রেফতার, নির্যাতন
ও হয়রানি করা হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় 'নিরাপত্তা'র নামে ছয় সমন্বয়ককে সাতদিন ধরে ডিবি
হেফাজতে জোরপূর্বক আটকে রাখা হয়। অসাংবিধানিক ও আইনবহির্ভূতভাবে আমাদেরকে ডিবি হেফাজতে
আটকে রাখা হয়। যারা নিরস্ত্র ছাত্র-নাগরিককে গুলি করে হত্যা করে তাদের হেফাজতে কেউই
নিরাপদে থাকতে পারে না। সরকারের কাছে আমরা এই প্রহসনের নিরাপত্তা চাই না ৷ আমরা আমাদের
ভাই বোনদের খুনের বিচার চাই।
ভিডিওবার্তা প্রসঙ্গে ছয় সমন্বয়ক
বিবৃতিতে বলেন, আন্দোলন প্রত্যাহার করে ডিবি অফিস থেকে প্রচারিত ছয় সমন্বয়কের ভিডিও
স্টেটমেন্টটি আমরা স্বেচ্ছায় দিইনি। ডিবি অফিসে আমাদের জোর করে খাবার টেবিলে বসিয়ে
ভিডিও করা হয়। আমাদের ছেড়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে পরিবারকে ডেকে ১৩ ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়
এবং মিডিয়ায় মিথ্যা স্টেটমেন্ট দেয়ানো হয়। আমাদের শিক্ষকরা দেখা করতে আসলে, দেখা করতে
দেয়া হয়নি। গত সাতদিন ডিবি অফিসে আমাদের ও আমাদের পরিবারের সঙ্গে নানা হয়রানি, নির্যাতন
ও নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
ছয় সমন্বয়ক আরো বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
নির্দেশেই আমাদের অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছিল। ছাত্র-নাগরিক হত্যার বিচার ও আটককৃত
নিরপরাধ ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি অব্যাহত
থাকবে।