বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে

প্রকাশ: আগস্ট ০২, ২০২৪

বণিক বার্তা ডেস্ক

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে গতকাল। বুধবার ইরানে হামাসের শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়া নিহত হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে জ্বালানি তেলের ওপর এর প্রভাব পড়ার আশঙ্কায় জ্বালানি পণ্যটির দাম বেড়েছে। খবর রয়টার্স।

অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম ফিউচার মার্কেটে গতকাল ১ শতাংশ বা ৭৮ সেন্ট বেড়েছে। এর মূল্য দাঁড়িয়েছে প্রতি ব্যারেলে ৮১ ডলার ৬২ সেন্ট। একই হারে দাম বেড়েছে মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডাব্লিউটিআই) দামও। প্রতি ব্যারেলে দাম বেড়েছে ৭৯ সেন্ট। প্রতি ব্যারেল ডাব্লিউটিআই ৭৮ ডলার ৭০ সেন্টে উন্নিত হয়েছে। ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া বেঞ্চমার্ক দুটির দাম আগের সেশনের তুলনায় ৪ শতাংশ বেড়েছে।

বুধবার ইরানের রাজধানী তেহরানে এক হামলায় হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া নিহত হন। এর ২৪ ঘণ্টারও কম সময় আগে বৈরুতে ইসরায়েলি এক হামলায় নিহত হন লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর শীর্ষস্থানীয় এক নেতা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব হত্যাকাণ্ড ১০ মাস ধরে চলা গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটাবে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্য সংকটে হামাসের জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে এ অঞ্চল থেকে জ্বালানি তেলের সরবরাহে বিঘ্ন ঘটবে।

কমনওয়েলথ ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়ার বিশ্লেষক বিবেক ধর বলেন, ‘‌হানিয়া হত্যাকাণ্ডের জেরে ইরান সরাসরি ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে পারে। তাই জ্বালানি তেল বাজারে আশঙ্কা তৈরি হওয়াই স্বাভাবিক। কেননা যুদ্ধের কারণে ইরানের জ্বালানি তেল সরবরাহ এবং এ-সংক্রান্ত অবকাঠামোগুলো ঝুঁকিতে পড়বে।’

তিনি বলেন, ‘‌হরমুজ প্রণালি দিয়ে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ইরান আশঙ্কা আরো বাড়িয়ে দেয়ার সক্ষমতা রাখে।’ বিবেক ধর বলেন, ‘‌প্রণালিটি দিয়ে বিশ্বের তেলবাহী জাহাজগুলোর ১৫-২০ শতাংশ চলাচল করে। এটি অবরুদ্ধ হলে বৈশ্বিক জ্বালানি তেল পরিবহন ঝুঁকিতে পড়বে। পাইপলাইনে জ্বালানি তেল আমদানি-রফতানির মাধ্যমে এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করা দুঃসাধ্য।’

যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের শীর্ষ জ্বালানি তেল ব্যবহারকারী। সম্প্রতি জ্বালানি তেল নিয়ে প্রকাশ হওয়া মার্কিন তথ্যও তেলের দাম বাড়িয়ে দিতে পারে। এছাড়া ডলারের অবমূল্যায়নও জ্বালানি পণ্যটির দাম বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।

যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইইএ) তথ্যমতে, রফতানি চাহিদা বাড়ায় ২৬ জুলাই নাগাদ শেষ হওয়া সপ্তাহে দেশটির অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুদ ৩৪ লাখ ব্যারেল কমে গেছে। এদিকে গতকাল পর্যন্ত বিদ্যমান সুদহার ধরে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ। তবে সেপ্টেম্বর নাগাদ সুদহার কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে গতকালও আগের সেশনের তুলনায় মার্কিন ডলারের অবমূল্যায়ন হয়েছে।

তবে আর্থিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফিলিপ নোভার বিশ্লেষক প্রিয়াংকা সাচদেভা বলেন, ‘‌চীনের জ্বালানি তেলের চাহিদার ওপর বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদে আস্থা পাচ্ছেন না। তেলের দাম বৃদ্ধি ঠেকাতে এটি ভূমিকা রাখবে।’ 

চীনের সরকারি তথ্য বলছে, নতুন কার্যাদেশ না পাওয়া এবং দাম হ্রাসের কারণে দেশটিতে শিল্পোৎপাদন পাঁচ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কমে গেছে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫