রাজশাহীর মতিহার থানা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে ছাড়িয়ে এনেছেন শিক্ষকরা। দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর বুধবার রাত ১টার দিকে আটক তিন শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। তারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সৈয়দ সামিউল বাসিত ও মাজেদ হাসান এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাইম ইসলাম।
শিক্ষার্থীরা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা রাজশাহী আদালতের মূল ফটকের সামনে থেকে মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচির ডাক দেন। তবে পথে পুলিশের বাধার কথা চিন্তা করে তারা কর্মসূচি পরিবর্তন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে যাত্রা শুরু করার ঘোষণা দেন। দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের সামনে থেকে বাসিত ও মাজেদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে নাইমকে আটক করে পুলিশ। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুন, সহযোগী অধ্যাপক সেলিম রেজা নিউটনসহ অন্তত ২০ শিক্ষক সাড়ে ৯ ঘণ্টা থানায় অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীদের ছাড়িয়ে আনেন।
তবে মতিহার থানার ওসি শেখ মোবারক পারভেজ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পুলিশের গাড়ি ভাংচুরসহ বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সন্দেহভাজন অবস্থায় ঘোরাফেরা করতে দেখে তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।’
ফোকলোর বিভাগের শিক্ষক ড. আমীরুল ইসলাম কণক বলেন, ‘আসলে শিক্ষার্থীদের ভুলটা কোথায়? কিসের জন্য পুলিশ তাদের আটক করেছে। শিক্ষার্থীরা অধিকার আদায়ের জন্য কথা বলছে। ২-৩ ঘণ্টা অবস্থান করার পর আমরা তাদের মুক্ত করেছি। আমরা এখনো বেঁচে আছি। আমি শিক্ষকদের বলব, এখনো সময় আছে ছাত্রদের পাশে দাঁড়ান।’
এর আগে বুধবার দুপুর আড়াইটায় রাজশাহী আদালত চত্বরে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া এবং পুলিশের গাড়ি ভাংচুর করা হয়। পরে পুলিশ ওই এলাকা থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে ১৮ জনকে আটক করে।