ওষুধ ও রসায়ন খাতের তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি রেকিট বেনকিজার বাংলাদেশ পিএলসি গত চার বছরের রয়্যালটির অর্থ মূল কোম্পানি যুক্তরাজ্যভিত্তিক রেকিট বেনকিজার হেলথ লিমিটেডকে পরিশোধ করেছে। এতে কোম্পানিটির নিট পরিচালন নগদ প্রবাহে ঘাটতি দেখা গেছে। কোম্পানিটির দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য অনুসারে, গত জুনে রেকিট বেনকিজার বাংলাদেশ রয়্যালটি বাবদ ৭৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা রেকিট বেনকিজার হেলথকে পরিশোধ করেছে। এতে রেকিট বেনকিজার বাংলাদেশের নিট পরিচালন নগদ প্রবাহে ৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট পরিচালন নগদ প্রবাহ (এনওসিএফএস) ১৮ টাকা ৯০ পয়সায় ঋণাত্মক অবস্থানে রয়েছে।
চলতি ২০২৪ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) রেকিট বেনকিজার বাংলাদেশ ২৬৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা আয় করেছে, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ২৬৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আয়ের পাশাপাশি এ সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফাও কিছুটা কমেছে। প্রথমার্ধে রেকিট বেনকিজারের কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ২৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ২৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা। প্রথমার্ধে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬২ টাকা ২২ পয়সা, যা আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ৬৩ টাকা ২৯ পয়সা। গত ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৫৯ টাকা ৯১ পয়সায়।
এছাড়া চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩০ টাকা ১২ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই প্রান্তিকে যা ছিল ৩১ টাকা ১১ পয়সা।
সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে রেকিট বেনকিজার বাংলাদেশের ইপিএস হয়েছে ১৭৩ টাকা ৬৫ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১৩৯ টাকা ৫০ পয়সা। সে হিসাবে কোম্পানিটির ইপিএস বেড়েছে ২৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ। গত ৩১ ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ২৫২ টাকা ৬৯ পয়সায়, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১৭৬ টাকা ৮০ পয়সা। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ৫৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে।
২০২২ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ৯৮০ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে রেকিট বেনকিজার। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১৩৯ টাকা ৫০ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১৭১ টাকা ৩ পয়সা।
১৯৮৭ সালে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রেকিট বেনকিজার বাংলাদেশ পিএলসির অনুমোদিত মূলধন ২৫ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৪ কোটি ৭২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১১৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ৪৭ লাখ ২৫ হাজার। এর মধ্যে ৮২ দশমিক ৯৬ শতাংশ শেয়ারই রয়েছে মূল কোম্পানি যুক্তরাজ্যভিত্তিক রেকিট বেনকিজার পিএলসির কাছে। এছাড়া সরকারের কাছে ৩ দশমিক ৭৭, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫ দশমিক ২৮, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে ২ দশমিক ৭৮ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বাকি ৫ দশমিক ২১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল রেকিট বেনকিজার বাংলাদেশের শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ৪ হাজার ৭৪৬ টাকা ৬০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির দর ৩ হাজার ৭৯৯ থেকে ৫ হাজার ২৭১ টাকার মধ্যে ওঠানামা করেছে।