যুক্তরাজ্যে বাড়ির দাম বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির আবাসন ব্যবসাবিষয়ক প্লাটফর্ম জুপলা। সংস্থাটির মতে, সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে বাড়ি বিক্রি বেড়েছে, যা আবাসন খাতের স্থিতিশীল অবস্থা নির্দেশ করে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ যুক্তরাজ্যে বাড়ির দাম ২ শতাংশ বাড়তে পারে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
জুপলা বিক্রিযোগ্য বাড়ির সংখ্যা বাড়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে হালনাগাদকৃত পূর্বাভাস দিয়েছে। ২১ জুলাইয়ের আগের চার সপ্তাহে বিক্রির সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেড়েছে। এ সময় ব্যবসায়ীদের হাতে থাকা বিক্রিযোগ্য বাড়ির পরিমাণও গত ছয় বছরের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেড়েছে।
জুপলার বাড়ির মূল্যসূচক অনুসারে, যুক্তরাজ্যের বাড়ি ক্রেতারা এখন বিক্রেতাদের হাঁকানো দামের ৯৬ দশমিক ৮ শতাংশ পর্যন্ত দিচ্ছেন, যা ১৮ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক রিচার্ড ডোনেল বলেন, ‘২০২৩ সালের মন্দা পরিস্থিতির পর আবাসন খাত ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। ক্রেতা-বিক্রেতারাও আত্মবিশ্বাস ফিরে পাচ্ছেন। বিক্রেতাদের হাতে যেমন বিক্রির জন্য পর্যাপ্ত বাড়ি রয়েছে, অন্যদিকে ক্রেতারাও বিক্রেতাদের হাঁকানো দামের কাছাকাছি দিচ্ছেন। এর অর্থ, বাজার এখন ভালো সময় পার করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি দেশজুড়ে বিক্রি বাড়বে। তবে বিক্রিযোগ্য বাড়ির অধিক সরবরাহ ও ক্রয়ক্ষমতার চাপের মতো অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতার কারণে বাড়ির দাম ততটা বাড়বে না। বিশেষ করে দক্ষিণ ইংল্যান্ড অঞ্চলের জন্য বিষয়টি বেশি প্রাসঙ্গিক, যেখানে বাড়ির দাম এরই মধ্যে বেশি।’
সম্প্রতি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জুনে সম্পত্তি বন্ধকের নিট অনুমোদন আগের মাসের তুলনায় প্রায় অপরিবর্তিত আছে। অর্থাৎ গ্রাহকের ঋণ গ্রহণের পরিমাণে খুব একটা পার্থক্য হয়নি। এছাড়া সাধারণ নির্বাচন ও সুদহার নিয়ে সিদ্ধান্তকে সামনে রেখে আবাসন খাতে স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে।
রিচার্ড ডোনেল জানান, নতুন সরকারের পরিকল্পনায় আবাসন খাতকে আগামী ১২-১৪ মাস এমনকি দীর্ঘমেয়াদে প্রভাবিত করতে পারে এমন কিছু নেই। তবে তার মতে, ‘ব্যাংক অব ইংল্যান্ড স্বল্প মেয়াদে আবাসন খাতের ওপর বেশি প্রভাব ফেলবে। এছাড়া কবে নাগাদ সুদহার কমানো হবে, তার ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করছে।’
বিশেষজ্ঞরা ১ আগস্ট সুদের হার কমানো হবে কিনা তা নিয়ে একমত নন। তবে ব্রিটিশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০২৪ সালের মধ্যে ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ ভিত্তি সুদহার কমাতে পারে।
ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব এস্টেট এজেন্টসের সাবেক সভাপতি সাইমন জেরার্ড বলেন, ‘মুদ্রাস্ফীতি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে ২ শতাংশে স্থিতিশীল রয়েছে। তাই আগস্ট বা সেপ্টেম্বর নাগাদ ভিত্তি সুদহার কমানোর সম্ভাবনা প্রবল।’
২০২২ সালে যুক্তরাজ্যের সুদহার বাড়ানো শুরু হয়। এরপর উচ্চ বন্ধকি ব্যয়ের সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছে দেশটির আবাসন খাত। গত ১২ মাসে বাড়ির দাম দশমিক ১ শতাংশ (গড়ে ২ লাখ ৬৫ হাজার পাউন্ড) বেড়েছে। ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে দেশটির সব অঞ্চলে বাড়ির দাম বেড়েছে। জুপলা বলছে, বেশি বিক্রেতার উপস্থিতি স্বাভাবিকভাবে আরো ক্রেতার সৃষ্টি করে। সম্ভাব্য অনেক ক্রেতা পরিবার নিয়ে বাস করার জন্য বড় আকারের বাড়ি খুঁজছেন। প্রত্যাশিত বাড়ি ও অন্যান্য সুবিধা পেতে দূরবর্তী এলাকায় খোঁজ করছেন তারা।