আইন,বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে
সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে যাতে কারাগারে যেতে না হয়
সে বিষয়ে সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন হলেও প্রসিকিউশন কিন্তু আইন মন্ত্রণালয়ের
অধীনে। তাই যারা সহিংসতার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, যারা এইচএসসি পরীক্ষার্থী, যারা
মাইনর তাদেরকে জামিন দেয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার জন্য প্রসিকিউশনকে নির্দেশ দেয়া
হয়েছে। তবে আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। যারা অপরাধ করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বেলা দেড়টার দিকে আইন মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের
প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন,
সরকার সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা ১৮ (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং উহার অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী
ছাত্রশিবিরসহ সকল অঙ্গ সংগঠনকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করেছে। তাছাড়া উক্ত
আইনের তফসিল-২ এ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ ছাত্রশিবিরসহ উহার সকল অঙ্গ সংগঠনকে
নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
তিনি বলেন, এই দল বা সংগঠনগুলো নিষিদ্ধ ঘোষিত হওয়ার পর উহার সদস্যরা
আর এ নামে রাজনীতি করতে পারবেন না।
আনিসুল হক বলেন, ১৪ দলের সভায় জামায়াতে ইসলামীকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এর একটা আইনি প্রক্রিয়া আছে। গত পরশুদিন এ আইনি প্রক্রিয়া আমরা শুরু করেছিলাম। গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ শেষে আজকে আমার মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগে পাঠিয়েছিল। আমরা এটাকে ভেটিং করে আবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। আমার মনে হয় কিছুক্ষণের মধ্যেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গেজেট নোটিফিকেশন পাবলিশ করবে। "
বুধবারই জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হবে বলে আইনমন্ত্রী আগে
জানিয়েছিলেন। কিন্তু ‘আইনি প্রক্রিয়ার কারণে’ একদিন বেশি
সময় লেগেছে বলে তার ভাষ্য।
জামায়াতের সম্পদের কি হবে? এ প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আইন
অনুযায়ী সেগুলোর ব্যবস্থা হবে।
দল হিসেবে নিষিদ্ধের পর এর সদস্যদের কী হবে– এমন প্রশ্নের
উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, এ দলের অধীনে তারা রাজনীতি করতে পারবে না। কিন্তু এটা যদি
আপনারা বলেন, গণহারে যারা জামায়াতে ইসলামীর নতুন কর্মী হয়েছেন, ১৯৭১ এর পরে যারা
জন্ম নিয়েছেন, তাদের বিচার করা হবে- এরকম গণহারে বিচার করা হবে না। তবে তারা যদি বাংলাদেশের
কোনো আইনে অপরাধ করে থাকে, তাহলে অবশ্যই তাদের বিচার হবে।"
নিষিদ্ধ করা হলে জামায়াত-শিবির আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যাবে কিনা- এ
বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, তারা আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যেতে পারে। আন্ডারগ্রাউন্ডে অনেক দল
গেছে, নকশালসহ অনেক দলের কী হয়েছে, সেটার ইতিহাস আপনারা জানেন। তবে সেটাকে মোকাবেলা
করার প্রস্তুতি আমাদের আছে।