বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের নিয়ে জার্মানভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ‘ডয়চে
ভেলে’র (ডিডব্লিউ) তথ্যচিত্রের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ডয়চে ভেলের
ওই প্রতিবেদনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রশ্নবিদ্ধ বলেও মন্তব্য করেছে সেনাবাহিনী সদর দফতর।
শনিবার (২৫ মে) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) মাধ্যমে
পাঠানো সেনা সদরের ওই প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, অতি সম্প্রতি ডয়চে ভেলে কর্তৃক ‘টরচারার্স
ডেপ্লয়েড অ্যাজ ইউএন পিসকিপারস’ শিরোনামে প্রচারিত তথ্যচিত্রে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা
মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে একটি বিভ্রান্তিমূলক প্রতিবেদন উপস্থাপন
করা হয়।
সেনা সদর বলেছে, শান্তিরক্ষী নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
জাতিসংঘের কঠোর নির্বাচন এবং যাচাইকরণ প্রক্রিয়া অনুসরণপূর্বক সকল সময়ে সবচেয়ে যোগ্য
এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাইকৃত সেনাসদস্যদের মোতায়েন নিশ্চিত করে। সর্বদা এ প্রক্রিয়া
অনুসরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শান্তিরক্ষী নির্বাচনে উচ্চমানের আচরণবিধি এবং
পেশাগত দক্ষতার দায়বদ্ধতা প্রমাণ করেছে। অথচ ওই তথ্যচিত্রে উপস্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে
ডয়চে ভেলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাছ থেকে কোনো মন্তব্য গ্রহণ করেনি।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, পক্ষপাতমূলক ও একপেশে এ প্রতিবেদনের লক্ষ্য
ও উদ্দেশ্য প্রশ্নবিদ্ধ। তথ্যচিত্রে অপ্রাসঙ্গিকভাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভিডিও ফুটেজ
ব্যবহার করে অপর একটি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মানহানি করাই এর মূল অভিপ্রায়
ছিল বলে প্রতীয়মান। এটি সম্পূর্ণরূপে একটি পক্ষপাতদুষ্ট অভিপ্রয়াস, যা তথ্যচিত্রের
বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা বিনষ্ট করেছে।
সেনাবাহিনী সদর দফতর জানিয়েছে, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা ও মানবতার
কল্যাণে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৩১ জন বীর সেনানী সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ স্বীকার
করেন এবং ২৩৯ জন আহত হন, যা জাতিসংঘের পতাকা সমুন্নত রাখার চেষ্টায় বিরল উদাহরণ। এছাড়াও
বিগত তিন দশকে জাতিসংঘের অধীনে দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষীরা
কোনো রূপ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ মুক্ত, যা একটি দৃষ্টান্তমূলক অর্জন।
উপরোক্ত বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আইএসপিআর জানায়, আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষার
মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে গণমাধ্যমসমূহের ন্যায্য এবং ভারসাম্যপূর্ণ প্রতিবেদনের
নীতি মেনে চলা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এছাড়া বিভ্রান্তিমূলক প্রতিবেদন উপস্থাপন এবং সংবাদ
প্রচার বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষী বাহিনীর বিশ্বাসযোগ্যতা ও কার্যকারিতা বহুলাংশে ক্ষুণ্ণ
করবে।