দেশে শুকনা মসলাজাত পণ্যের অন্যতম জিরা। পণ্যটির প্রায় শতভাগ আমদানি করতে হয়। অতীতের রেকর্ড ভেঙে সম্প্রতি জিরার দাম ওঠে কেজিপ্রতি ১ হাজার ২০০ টাকায়। তবে আমদানি স্বাভাবিকের পাশাপাশি উৎপাদনকারী দেশের বাজার স্থিতিশীল হওয়ায় দেশের বাজারে পণ্যটির দাম নেমে এসেছে কেজিপ্রতি ৬০০ টাকার ঘরে। জিরার পাশাপাশি কমেছে অন্যান্য মসলার দামও।
বাজার সূত্রে জানা গেছে, জিরার দাম এক বছরের বেশি সময় ধরে বেড়েছে। একসময় প্রতি কেজি আমদানীকৃত জিরা পাইকারিতে বিক্রি হতো ২৮০-৩৫০ টাকায়। চাহিদা অনুপাতে সরবরাহ সংকটের পাশাপাশি আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় পণ্যটির দাম রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে হাজার টাকা ছাড়িয়ে যায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ২০২৩ সালে ফলন কম হওয়ায় প্রধান উৎস দেশ ভারতে জিরার দাম বেড়ে যায়। পরবর্তী সময়ে দেশের বাজারে ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধি, টাকার বিপরীতে রুপির দরপতন ছাড়াও এলসি (ঋণপত্র) খুলতে দীর্ঘসূত্রতার কারণে চাহিদার তুলনায় জিরার সরবরাহ কম ছিল। ফলে এক বছরের বেশি সময় ধরে জিরার পাইকারি দাম ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে।
একসময় ইরান, আফগানিস্তান ও তুরস্ক থেকে জিরা আমদানি হলেও ভারতই ছিল সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী। এ কারণে জিরার বাজার অস্থির হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশে। বর্তমানে তুরস্ক ও আফগানিস্তানের জিরা দেশে পাওয়া গেলেও ভারতের জিরাই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়। সরবরাহের এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামীতে দাম আরো কমতে পারে বলে ধারণা করছেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে রোজার শেষার্ধে এসে দেশের পাইকারি বাজারে জিরার পাশাপাশি প্রায় সব ধরনের মসলার দাম কমেছে। শুকনা মসলার মধ্যে মরিচ, হলুদ, লবঙ্গ, ধনিয়া, মেথি, কালোজিরা, দারচিনির দাম কমে এসেছে। গোলমরিচ, এলাচের দাম কিছুটা বেড়েছে। স্থিতিশীল জয়ত্রি ও জায়ফলের দাম।
এর মধ্যে শুকনা মরিচের আমদানি মূল্য কেজিপ্রতি ৫০-৬০ টাকা কমে ২৯০ টাকা, দেশীয় শুকনা মরিচ কেজিপ্রতি ৬০-৭০ টাকা কমে ২৩০-২৩৫, দেশীয় শুকনা হলুদ কেজিপ্রতি ৮-১০ টাকা কমে ২২৫, আমদানীকৃত হলুদ ১০-১২ টাকা কমে ২৫৫, মেথি কেজিপ্রতি ১০-১৫ টাকা কমে ১২০, কালোজিরা কেজিপ্রতি ২৫ টাকা কমে ২৭৫ ও দারচিনির দাম কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা কমে ৩০০-৩৩০ টাকায় লেনদেন হচ্ছে।
জানা গেছে, প্রায় সব ধরনের মসলার দাম কমলেও ঊর্ধ্বমুখী এলাচের বাজার। দুই সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি এলাচ ২ হাজার ৬০০ টাকায় লেনদেন হয়েছে, যা বর্তমানে ২ হাজার ৯০০ টাকা। লবঙ্গর দাম কেজিপ্রতি ৬০-৭০ টাকা বেড়ে লেনদেন হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ টাকায়। এছাড়া জয়ত্রির দাম কেজিপ্রতি ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা (মানভেদে) ও জায়ফলের দাম কেজিপ্রতি ৬৫০-৬৬০ টাকার মধ্যে স্থিতিশীল।