সিল্করুট

আমেরিকার চিনি সাম্রাজ্য

আহমেদ দীন রুমি

পুয়ের্তো রিকোর একটি চিনি কারখানা। শিল্পী: ফ্রান্সিসকো ওলার, ১৮৮৫

তিন মাস তিন সপ্তাহের পর শেষ হলো যুদ্ধ। আধিপত্য গুটিয়ে নিল ঔপনিবেশিক স্পেন। বিপরীতে আমেরিকা পরিণত হলো আঞ্চলিক মোড়লে। ১৮৯৮ সালের আগস্ট মাস। অর্জিত বিজয়কে চিনি খাওয়ার মাধ্যমে উদযাপন করল আমেরিকা। প্রতিটি যুদ্ধ শেষেই বিজয়ী পক্ষের কিছু না কিছু প্রাপ্তি থাকে। যুদ্ধের প্রাপ্তি বলতে আমেরিকা বিবেচনা করেছে চিনিকে। কারণ দ্বীপের অধিকার পাওয়ার অর্থ চিনি উৎপাদনে আধিপত্য সম্প্র্রসারিত হওয়া।  বাস্তবিক অর্থেই চিনি ছড়িয়ে গেল সর্বত্র। রান্নাঘর থেকে ওয়াশিংটন ডিসির গোলটেবিল পর্যন্ত গুরুত্ব পেল চিনির খবর। চিনিই তখন নতুন শক্তি, যার ওপর ভর করে দাঁড়িয়ে আমেরিকার নয়া সাম্রাজ্য।

১৪৯৩ সালে যখন কলম্বাস আমেরিকা যাত্রা করেন, সঙ্গে নিয়ে ফিরেছিলেন আখ। নতুন জমিনে নতুনভাবে শুরু হয় চিনির যুগ। কলম্বাস-পরবর্তী আমেরিকার ৪০০ বছরের ইতিহাসে চিনিই ছিল প্রধান নায়ক। সেটা মেক্সিকো, গায়ানা ব্রাজিলের মতো মূল ভূখণ্ডেই হোক কিংবা কিউবা, বার্বাডোজ জ্যামাইকার মতো দ্বীপে। আর সে যাত্রার মূল্য দিতে হয়েছে অসংখ্য আদিবাসীকে। এক কোটির বেশি আফ্রিকানকে বরণ করতে হয়েছে দাসত্ব। আটলান্টিকের ব্যবসাই ছিল মূলত ত্রিমুখী। আফ্রিকার দাস, আমেরিকার চিনি ইউরোপের পয়সা। চিনির বাণিজ্যকে আমেরিকায় রমরমা করেছে শ্বেতাঙ্গরাই। ১৭২০ সালে নিউইয়র্কের বন্দরে আসা প্রতি দুটি জাহাজের একটি থাকত ক্যারিবীয় অঞ্চলের। জাহাজে থাকত দাস আর চিনি। একই জাহাজে বাইরে যেত ময়দা, গোশত নির্মাণসামগ্রী। চিনির অবস্থান স্পষ্ট হয় ওয়াল স্ট্রিটের স্থাপনায়। তখন দুটি ঈর্ষণীয় স্থাপনা ছিল সেখানে। হাডসন নদীর দিকে ট্রিনিটি চার্চ ইস্ট রিভারের কাছে পাঁচতলা চিনির গুদাম। চিনির গুদামের পাশেই দাস বাজার। নিউইয়র্কের জনসংখ্যার ২০ শতাংশ তখন দাস। ১৭৫১ সালে জেসুইট যাজকরা নিউ অরলিন্সে আখ আবাদ শুরু করেন। তবে চিনির উৎপাদন গতি পায় নিউ অরলিন্সেরই ইটিয়েন দি বোরের মাধ্যমে। ১৭৯৫ সালে লুইজিয়ানায় স্থানীয়ভাবে আখ মাড়াই করে চিনি উৎপাদনের ব্যবস্থা করেন তিনি। ক্রমে মিসিসিপির দুই ধার দিয়ে তৈরি হতে থাকে চিনি উৎপাদনের জায়গা। এক দশকের মধ্যেই বিশ্বে উৎপাদিত আখের এক-চতুর্থাংশই জোগান দিতে লাগল লুইজিয়ানা। ১৮৪০ সালে মাথাপিছু সম্পদের দিক থেকে লুইজিয়ানার অবস্থান ছিল নিউইয়র্ক ম্যাসাচুসেটসের পরই। কেবল দাসের পেছনেই বিনিয়োগ ছিল লাখো কোটি ডলার। কৃষিতে সবচেয়ে শক্তিশালী খাত চিনি। সেখানকার কারখানায় রাখা বিপুল বিনিয়োগ। চিনির বিস্তার কিন্তু লুইজিয়ানায় আটকে থাকেনি। ১৮২০-এর দশকজুড়ে টেক্সাস ফ্লোরিডায় গড়ে উঠতে থাকে চিনি উৎপাদন কারখানা। ফ্লোরিডা যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হলে ১৮১৯ সালে বাইশটি খামার গড়ে ওঠে ইস্ট কোস্টে। যদিও ১৮৩৫ সালেই সেগুলো বিধ্বস্ত হয় আদি আমেরিকানদের হাতে। চিনি ব্যবসায় জড়িত ছিলেন সালেম ম্যাসাচুসেটসের ব্যবসায়ীরা। কিউবা, মারটিনিক গুয়াডলোপ থেকে চিনির যোগাযোগ হতো হাওয়াই, ক্যান্টন, ফিলিপিন্স, কোচিন, চায়না পেনাংয়ের সঙ্গে। মার্কিন সিদ্ধান্তেই নির্ধারিত হতে শুরু করে আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম। ১৮৭৫ সালে চিনি আমদানিবিষয়ক চুক্তি করে যুক্তরাষ্ট্র। ক্যারিবিয়ান অঞ্চল থেকে চিনি আনার ব্যবসায় মার্কিন নৌবাহিনীর সরব হাজিরা ছিল স্পষ্ট।

উনিশ শতকের শেষ দিকটা ছিল মূলত মার্কিনদের জন্য ট্রানজিশন পিরিয়ড। কৃষিনির্ভরতা থেকে ক্রমে শিল্পনির্ভরতার দিকে ঝুঁকতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। ১৮৯০ সালে ম্যাককিনলে শুল্ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে চিনি ব্যবসায়ীরা যেন রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হলেন। চিনি সরবরাহে সার্বিকভাবে যুক্ত ছিল সামরিক সহযোগিতা। ১৮৯৩ সালেই হাওয়াইয়ে বিদ্রোহ দেখা দিলে তার ওপর আনুষ্ঠানিকভাবে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা হয়। সেখানকার চিনি শিল্প বিবেচিত হতে থাকে অভ্যন্তরীণ শিল্পের মতোই। ১৮৯৮ সালে স্পেনের সঙ্গে যুদ্ধের পর কিউবা, পুয়ের্তো রিকো ফিলিপিন্সের মাথার ওপর প্রসারিত হয় ক্ষমতার হাত। ডোমিনিকান রিপাবলিক, হাইতি, নিকারাগুয়া কিউবা ক্রমে আমেরিকান চিনি সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। ব্রিটেন বা স্পেনের মতো উপনিবেশ স্থাপন করতে চায়নি মার্কিনরা। কিন্তু ঠিকই অর্থনৈতিক বাণিজ্যিক ফায়দা নিয়েছে সব রকমভাবে। আর সেটা সফল হয়েছে চিনির সূত্র ধরেই। যেন চিনি শিল্পকে কেন্দ্র করে নতুন ধরনের উপনিবেশ ব্যবস্থা। পুয়ের্তো রিকো পরিণতি হয়েছে ডি ফ্যাক্টো কলোনি, সেখানকার শুল্ক বিলুপ্ত হয় ১৯০১ সালে। ১৯০৯ সালে মার্কিন প্রবেশের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায় ফিলিপিন্স। কিন্তু সমস্যা বাঁধে কিউবা নিয়ে। কিউবার বিপুল চিনি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত অভিজাতরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় আপত্তি ছিল না। কিন্তু যুক্ত করার বিপক্ষে আপত্তি ছিল মার্কিন অভিজাতদের দিক থেকেই। ফলে আনুষ্ঠানিক উপস্থিতি না রেখেও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে অর্থনৈতিক প্রবাহ। ডলার ডিপ্লোম্যাসি পরিকল্পনাটি খ্যাতি পায়। ১৯২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় চিনির ৬২ শতাংশেরই জোগান দিত কিউবা। কিউবার মতো নিয়তি আরো অনেককেই বরণ করতে হয়েছে। ১৯১৬ সালে ডোমিনিকান রিপাবলিক অধিকৃত হয় মার্কিন নৌবাহিনীর দ্বারা। ততদিনে হাইতিও চলে গেছে নাগালে। আনুষ্ঠানিক অনানুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন অধীনতা বিস্তারের পেছনে চিনিকেন্দ্রিক অর্থনীতিই পালন করেছে প্রধান অনুঘটকের ভূমিকা। চিনি উৎপাদনকারী ক্যারিবীয় মধ্য আমেরিকান দেশ নিয়ে তৈরি হয়েছিল স্বতন্ত্র ধারার সাম্রাজ্য। কৃষ্ণাঙ্গ জনগণকে নিয়ে সেসব দেশকে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত করার বিরুদ্ধে খোদা মার্কিনদের মধ্য থেকেই মতামত ছিল। নতুন ধারার শ্বেতাঙ্গ আমেরিকান পুঁজিবাদের শরীরে চিনি হলো রক্তপ্রবাহের মতো।

১৮৮০-এর দশকে আমেরিকার চিনি শিল্পে আবির্ভূত হয় দ্য ট্রাস্ট প্রায় অর্ধশতকজুড়ে একচেটিয়া নীতিনির্ধারকের ভূমিকায় থেকেছে প্রতিষ্ঠানটি। নিউইয়র্কের বুর্জোয়ারা নিয়েছে চিনিকেন্দ্রিক অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণের ভার। উইলিয়াম এফ হ্যাভেনমেয়ের ছিলেন একাধারে নিউইয়র্কের মেয়র, ব্যাংকার চিনি পরিশোধন কারখানার মালিক। তার মতো কয়েকজন বণিক পালন করেন নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা। ১৮৮৬ সালে চিনির ওপর থেকে শুল্কনীতি পরিত্যাগ করে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। ঠিক পরের বছর ১৮৮৭ সালে আমেরিকার প্রায় সব প্রতিষ্ঠিত চিনি বণিকের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় সুগার রিফাইনারিজ কোম্পানি। তাতে যুক্ত ছিলেন এডউইন এফ অ্যাটকিনস। কিউবা বোস্টনের চিনি কারখানার মালিক তিনি। ছিলেন ক্যালিফোর্নিয়া মিডওয়েস্টের চিনি কারখানার মালিক অক্সনার্ড ব্রাদার্স। কোম্পানির অধীনে ২৩টির মতো মার্কিন রিফাইনারিজ অন্তর্ভুক্ত হয়। কোটি ৪০ লাখ মূলধন নিয়ে যাত্রা করে প্রতিষ্ঠানটি। ১৯২০ সালে অ্যাটকিনসের কারখানায় প্রায় পাঁচ লাখ টন চিনি উৎপাদন হতো, যা কিউবার মোট উৎপাদনের এক-তৃতীয়াংশ। দীর্ঘদিন তিনি কারখানায় বসবাস করেছেন। কিন্তু জীবনের শেষ দিকে পৌঁছে সময় অতিবাহিত করেন মার্কিন অর্থনৈতিক অভিজাত হিসেবে। কিউবা বিষয়ে মার্কিন রাজনৈতিক অবস্থানে সরাসরি অংশগ্রহণ থাকত অ্যাটকিনসের। কংগ্রেসম্যান, সিনেট সদস্য, পররাষ্ট্র সচিব মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাকে অগ্রাহ্য করতে পারত না। ১৮৯৪ সালে স্পেনের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে গেলে আমেরিকা অপরিশোধিত চিনিতে ৪০ শতাংশ পরিশোধিত চিনিতে ৪৮ শতাংশ কর ধার্য করে। স্পেনও জবাব দিতে শুরু করে। যা রূপ নেয় যুদ্ধে। ১৮৯৮ সালে আমেরিকার কিউবায় আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে ট্রাস্ট নয়া রূপে শুরু করে কার্যক্রম। প্রতিষ্ঠিত হয় ন্যাশনাল সুগার রিফাইনিং কোম্পানি (এনএসআরসি) কিউবা, পুয়ের্তো রিকো ডোমিনিকান রিপাবলিকজুড়ে ছড়িয়ে ছিল কার্যক্রম। আনাচেকানাচে ছড়িয়ে পড়েছে কারখানা। যুক্তরাষ্ট্রের হাত আরো মজবুত হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে চিনির সূত্রে তৈরি হয় ভিন্ন সম্পর্ক। কিউবা যেখানে পালন করে নতুন ভূমিকা। দ্য ট্রাস্ট এনএসআরসির বাইরেও আখ চিনি ব্যবসায়ী ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান কিউবায় হাজির ছিল। চিনিকে কেন্দ্রে রেখে বেড়ে উঠেছে পানীয়, ক্যান্ডি চকলেট শিল্প। বিশ শতকের শুরুর দিকে মার্কিন সরকার আগ্রহী হয়ে ওঠে ক্যারিবীয় মধ্য আমেরিকায় ব্যাংকের শাখা খোলার জন্য। কিউবা, পুয়ের্তো রিকো, হাইতি, ডোমিনিকান রিপাবলিক অন্যান্য প্রদেশে স্থাপিত হয় সিটি ব্যাংক জেপি মরগ্যানের শাখা। ক্যারিবিয়ান অঞ্চল থেকে ইউরোপীয় বিশেষ করে স্প্যানিশ অর্থনৈতিক প্রভাব দূর করতে ব্যাংকগুলোই পালন করে কফিনে শেষ পেরেকের ভূমিকা। পেছন থেকে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। পুয়ের্তো রিকো কিউবার মতো ওয়াল স্ট্রিটের অভিজাতদের নাগালে ধরা দেয়। ১৮৯৯ সালে সেখান থেকে ৪০ হাজার টন চিনি রফতানি হতো নিয়মিত। ১৯২৯ সালে উৎপাদন বেড়ে দাঁড়ায় ১০ লাখ টনের ওপরে। ওয়াল স্ট্রিটের পৃষ্ঠপোষকতায় দ্য ট্রাস্ট এনএসআরসি সেখানে জানান দেয় সরব উপস্থিতি। চিনি উৎপাদনের খাতিরেই ডোমিনিকান রিপাবলিকের অনেক কৃষককে সরিয়ে দেয়া হয়, যার পরিণামে দেখা দেয় বিদ্রোহ। দমন করতে এগিয়ে আসতে হয় মার্কিন মিলিটারিকে। চিনি শিল্পকে প্রসারিত করার জন্যই ১৯০৮ সালে ফিলিপিন্সকে নেয়া হয় অধিকারে। ১৯০৩ থেকে ১৯৩৩ সালের মধ্যেই দখল করে নেয়া হয় নিকারাগুয়াকে।

১৮৫৩ সালে আত্মস্মৃতি লিখেছিলেন সোলোমন নরথাপ। নাম টুয়েলভ ইয়ার্স স্লেভ সোলোমনকে শ্বেতাঙ্গ বণিকরা ধরে নিয়ে গিয়ে দাস বানিয়ে রাখে লুইজিয়ানায়। উৎপাদন বাড়ানোর জন্য চিনিকলগুলো চলত রাতদিন। কোনো বিশ্রাম নেই। সামান্য ক্লান্তি বা অসতর্কতার অর্থ মাড়াইকলে নির্মমভাবে হাত খোয়ানো। সবিশেষ মালিকপক্ষের শাস্তি তো আছেই। সে দিনগুলোর স্মৃতি বেদনাময় হয়ে ফুটে উঠেছে লাখো দাসের চিৎকার। চিনির ইতিহাসের থেকে দাসের ইতিহাস বিচ্ছিন্ন নয়। চিনি চাষের বিস্তার ঘটছে, সমান্তরালে রমরমা হয়েছে দাসবাণিজ্য। উনিশ শতকের মাঝামাঝি কেবল দাসের সংখ্যাই দাঁড়িয়েছিল লাখ ২৫ হাজারে। নিউ অরলিন্স পরিণত হয় মানুষ বেচাকেনার রাজধানীতে। দাসরা জড়িত চিনি ছিল উৎপাদন প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে। প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি কাজ করতে হতো শিশুদেরও। তবে চিত্র সবসময় এক থাকেনি। ক্রমে আফ্রো-আমেরিকানরা আখের জমির মালিকানা পেতে সচেষ্ট হতে শুরু করে। ক্রমে ভূমি অধিগ্রহণ মালিকানায় তাদের অংশগ্রহণ বাড়তে থাকে। তারা হয়ে ওঠে চিনি কলগুলোর জন্য কাঁচামালের অন্যতম সরবরাহকারী। অন্তত আমেরিকার পরিপ্রেক্ষিতে চিনি কেবল রসুইঘরের বস্তুটি নয়। তার সঙ্গে মিশে আছে বর্ণবাদ, উপনিবেশ, সাম্রাজ্যবাদ দাস প্রথার গল্প। কারো উল্লাস কারো আর্তনাদের গল্প।

 

আহমেদ দীন রুমি: লেখক