খাবারে সবসময়
প্রয়োজন পড়ে
না। প্রতিদিন
গ্রহণ করা
খাদ্যে খুব
যে বেশি
পরিমাণে আছে
সেটাও নয়।
তবু ‘চিনি’
বা সুগারকে
ঘিরে কিন্তু
কম আদিখ্যেতা
নেই আমাদের।
সকালে চায়ের
কাপ থেকে
শুরু করে
মিষ্টি-পায়েস
দিয়ে অতিথি
আপ্যায়নে, চিনিকে
আমরা কেই-বা
না চিনি!
আবার আমরা
প্রতিদিন যত
খাবার-পানীয়
গ্রহণ করি
তার অনেকগুলোর
মধ্যেই চিনি
থাকে। উল্টোটাও
বলা যেতে
পারে—চিনি
কোথায় নেই? চিনির ইতিহাস
অবশ্য সরল
নয়। যুগে
যুগে পৃথিবীর
বিভিন্ন অঞ্চলে
চিনি নিয়ে
কম ঝঞ্ঝাট
হয়নি। শুভ্র
স্বর্ণ বা
হোয়াইট গোল্ড
নামে পরিচিত
চিনি বড়
ভূমিকা রেখেছে
দাস প্রথা
আর বৈশ্বিক
বাণিজ্যে। পারস্যের
হাত ধরে
আসা চিনি
একটু একটু
করে ভারত,
ইরান, সাইপ্রাস,
মিসর হয়ে
ছড়িয়ে গেছে
সমগ্র বিশ্বে। ১৩০৯ সালে
প্রতি পাউন্ড
চিনির দাম
লন্ডনে ধরা
হতো ২
শিলিং করে।
যা ছিল
তখনকার একজন
মজুরের একদিনের
বেতনের সমান।
চিনি বাণিজ্য
যে বিপুল
মুনাফার হাতছানি,
তা এই
একটি তথ্য
থেকেই ধারণা
করা যায়।
টাকা তো
অনেকটা চিনির
মতোই মিষ্টি।
এ মিষ্টি
আহরণ করতে
দুনিয়ার নানা
প্রান্তে বহু
জানা-অজানা
ব্যবসায়ী এগিয়ে
এসেছিলেন। এদের
মধ্যে পাঁচটি
পরিবার রীতিমতো
চিনির সাম্রাজ্য
প্রতিষ্ঠা করে। মিসরের কারিমি নীলনদের
নিকটবর্তী হওয়ায়
মিসরে বাণিজ্য
ছিল আকর্ষণীয়
পেশা। সেই
বাণিজ্যের একটি
বড় পণ্য
ছিল চিনি।
মধ্যযুগে মিসরে
চিনির উৎপাদন
ও বাণিজ্যে
যুক্ত ছিল
অনেকগুলো ব্যবসায়ী
পরিবার। এদের
মধ্যে সবার
চেয়ে এগিয়ে
ছিল কারিমি
পরিবার বা
গোষ্ঠী। মরুর পথে
পরিশোধনাগার থেকে
উৎপাদিত কয়েকশ
টন চিনি
পিঠে নিয়ে
হেঁটে যাচ্ছে
উটের কাফেলা—এমন
দৃশ্য মধ্যযুগে
মিসরের ছিল
চিরচেনা। চিনি
বাদেও মসলা
আর দাস
ব্যবসায় যুক্ত
ছিল কারিমিরা।
তবে ধীরে
ধীরে তাদের
পুরো মনোযোগ
কেন্দ্রীভূত হয়
চিনির কারখানা
আর বাণিজ্য
ঘিরে। মিসরে
তাদের চিনির
উৎপাদন মামলুক
সুলতানদের আমলে
আরো বৃদ্ধি
পায়, বাণিজ্য
আরো ছড়িয়ে
পড়ে—ভূমধ্যসাগর
থেকে শুরু
করে জর্ডান
উপত্যকা পর্যন্ত। মিসরে কারিমিদের
চিনিসংক্রান্ত এই
দুইশ বছরের
আধিপত্য পরবর্তী
সময়ে চিনিকে
ইউরোপেও পরিচিত
করে তোলে।
রোগীর চিকিৎসা
থেকে শুরু
করে অর্থনৈতিক
স্তম্ভ হিসেবে
চিনি নিয়ে
নেয় অনন্য
এক স্থান।
মুসলিমপ্রধান দেশগুলোতে
মামলুক সাম্রাজ্য
থেকে চিনির
নিয়মিত সরবরাহ
ছিল। তবে কালক্রমে
চলে আসে
প্রতিপক্ষ। বিদেশী
বেনিয়াদের হাতে
যেন মিসরের
এ চিনির
চাহিদা নস্যাৎ
না হতে
পারে, সেই
পদক্ষেপ নেয়
কারিমি জনগোষ্ঠী।
তাদের প্রাণান্ত
চেষ্টা সত্ত্বেও
ইউরোপের ভেনিস
আর জেনোয়া
চিনি আমদানিতে
সাইপ্রাসের দিকে
ঝুঁকে পড়ে।
ক্রুসেডারদের চিনি
উৎপাদনের শুরুটাই
হয়ে ওঠে
চিনির সাম্রাজ্যে
কারিমিদের একক
রাজত্ব সমাপ্তির
প্রথম ধাপ।
তবে ১৪
শতকে চিনি
বাণিজ্যে প্রতাপশালী
কিছু সাম্রাজ্যের
কথা বলতে
হলে কারিমিদের
নাম চলে
আসবেই। বাণিজ্যের সবচেয়ে
লম্বা রাস্তাটা
ছিল তাদের
হাতেই। সঙ্গে
প্রতিপক্ষকে হারিয়ে
দেয়া, স্থানীয়
বণিকদের নেটওয়ার্ক
তৈরি, মুনাফা
বৃদ্ধির চেষ্টা
করা—এই
সবকিছুই ‘চিনি’-কে
ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে
বসিয়ে দেয়।
একদিকে মামলুক
সুলতানরা যেমন
চিনির জন্য
কারিমি আর
ফ্র্যাংকিশদের সঙ্গে
হাত মিলিয়েছিল,
তেমনি বাকি
রাজনৈতিক ক্ষমতাধররাও
হাত মেলাতে
থাকেন চিনির
অন্যান্য উৎপাদনকারী
সাম্রাজ্যের সঙ্গে।
সেকালে পৃথিবীর
বেশির ভাগ
স্থানে চিনি
উৎপাদন ও
নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারটি
সম্পূর্ণ পরিবারকেন্দ্রিক
হয়ে পড়েছিল।
মিসরের কারিমি
নামটি ছিল
তাদের অন্যতম।
সাইপ্রাসের ভেনেসিয়ান কর্নার পরিবার চিনি
নিয়ে স্নায়ুযুদ্ধ
চলেছে বরাবরই।
সেই রেশ
আমাদের এই
আলোচনার একেকটি
সাম্রাজ্য বা
পরিবারকে একসূত্রে
গেঁথে দিয়েছে
কোনো না
কোনোভাবে। ১৩৬১
সালে এ
কর্নার পরিবারের
অধিকৃত অঞ্চলে
বিশাল এক
কর্মযজ্ঞ শুরু
হয়, যেখানে
তিনশ থেকে
চারশ শ্রমিক
আখ উৎপাদন
করত তাদের
তত্ত্বাবধানে। জলচালিত
আধুনিক কারখানা
স্থাপিত হয়
এখানে। চিনি
উৎপাদনের চেষ্টায়
কোনো কমতি
রাখেনি কর্নার
পরিবার। সুদূর
ভেনিস থেকে
এনেছে কপারের
বয়লার। এ
কারখানার উৎপাদন
করা চিনির
পরিমাণ দেখে
চোখ কপালে
উঠেছিল তৎকালের
জ্ঞানী মানুষদের। কর্নারদের জন্য
পরিস্থিতি একদম
সোনায় সোহাগা
হয় ১৩৪৮
সালে, মিসরে
মড়ক লাগলে।
সঙ্গে ছিল
বাড়তি বোঝা,
খরা। তবে
সাফল্য পেতে
কর্নার পরিবারকে
বহু লড়াই
করতে হয়েছে
এর পরও।
সে সময়
চিনির উৎপাদন
সরল কোনো
হিসাব ছিল
না। আখের
জন্য আলাদা
করে ফসলের
জমির বরাদ্দ
নেয়া লাগত।
সঙ্গে দরকার
পড়ত নদীর
পানি। আর
এ প্রাকৃতিক
উপাদানের দখল
পেতে চলত
রেষারেষি। এসব
কারখানা আর
স্থাপনার মালিক
যেহেতু ছিলেন
ধনাঢ্য পরিবাররা,
তাই তাদের
সমস্যার সমাধানও
হতো না
এত সহজে।
সমাধান দিতে
আসতে হতো
পোপ বা
রাজাকে। কর্নার
পরিবারও এমন
সমস্যার মুখোমুখি
হয়েছে বহুবার।
বিশেষ করে
পিস্কোপির পাশে
থাকা কর্নারদের
চিনি কারখানা
যে নদীর
পানি ব্যবহার
করত, সেই
একই নদীর
পানি দিয়ে
চিনি উৎপাদন
করত হসপিটালার্সরাও।
তদের মধ্যে
তাই স্নায়ুযুদ্ধও
চলেছে। বার্বাডোজের ল্যাসেলস পরিবার ইংরেজভাষী
আমেরিকার দ্বিতীয়
বৃহৎ শহর
ব্রিজটাউনে স্যার
সিনিয়র গেডনি
ক্লার্কের পা
পড়ে ১৭৩০-এর
আগে। চিনি
কারখানার জন্য
অসম্ভব জনপ্রিয়
এ শহর
থেকেই ১৭৪২
সালে লন্ডনে
পাড়ি জমান
তিনি। আর
সেখানেই বন্ধুত্ব
করেন হেনরি
ল্যাসেলসের সঙ্গে।
বার্বাডোজে চিনি
কারখানার জন্য
হেনরির সুনাম
তখন সর্বত্র।
এ ল্যাসেলস
পরিবারেই ১৭৬২
সালে বিয়ে
করেন ক্লার্ক
জুনিয়র। হয়ে
যান ল্যাসেলস
পরিবার আর
তাদের ব্যবসায়িক
কাজের অংশীদার।
ক্লার্ক পরিবারও
দাস ব্যবসার
জন্য জনপ্রিয়
ছিল সেই
সময়। ল্যাসেলস
পরিবারে তার
সংযুক্তি দুই
পরিবারের জন্যই
সম্ভাবনার দ্বার
খুলে দিয়েছিল।
আঠারো শতকে
গুয়েনা কোস্টের
ডাচ কলোনি
বার্বিস আর
ডেমেরারায় প্রায়
৪৫০টি কারখানা
স্থাপন করা
হয়। ক্লার্ক
জুনিয়র ও
সিনিয়র এ
স্থাপনাগুলোর পেছনেই
আদাজল খেয়ে
লেগে পড়েন।
ক্লার্ক জুনিয়র
ডাচ নাগরিকত্ব
নিয়ে নেন
বিশেষ কিছু
সুবিধা পেতে।
তাতে লাভ
যে হয়নি
এমন না।
তবে ধীরে
ধীরে স্থানীয়
বাজারে চিনির
নির্দিষ্ট মূল্য,
ব্রিটিশদের চড়া
শুল্ক আর
সর্বশেষ ১৭৬৩
থেকে ১৭৬৫
সালের মধ্যে
দাসদের বিপ্লবী
আন্দোলন বাবা-ছেলের
পরিকল্পনা পুরোটাই
ভেস্তে দেয়।
বাবা মারা
যাওয়ার পর
স্থাপনা বিক্রি
করে দেন
ক্লার্ক জুনিয়র।
বাবা-ছেলের
যখন এ
দুর্দশা, পেছন
থেকে এর
পুরোটা ফল
উপভোগ করে
ল্যাসেলস পরিবার।
ল্যাসেলস পরিবারের
কেমব্রিজ ফেরত
পুত্র এডউইন
ল্যাসেলস একে
একে আর্থিক
সমস্যায় জর্জরিত
মালিকদের স্থাপনা
কিনে ফেলেন।
যার মধ্যে
ছিল ক্লার্ক
জুনিয়রের স্থাপনাগুলোও।
অবশ্য নিজ
থেকে প্রথমে
সেগুলো কেনেনি
ল্যাসেলস পরিবার।
ক্লার্ক জুনিয়র
অনেকটা ভিক্ষা
করে, হাতে-পায়ে
ধরেই স্থাপনা
বিক্রি করেছিল
ঘনিষ্ঠ আত্মীয়
ল্যাসেলসদের কাছে।
ল্যাসেলস পরিবার
পরবর্তী সময়ে
১০টি চিনি
কারখানার স্থাপনার
মাধ্যমে দাসপ্রথা
নিয়ে প্রচণ্ডভাবে
এগিয়ে গেলেও
তাকে নিয়ে
বর্তমানে মাথাব্যথা
নেই কারো।
বরং এডউইন
ল্যাসেলসের নামে
ল্যাসেলস হাউজ
নামের একটি
বাড়িও আছে
এখন এ
অঞ্চলে। তবে
আগের সেই
দাস প্রথা
টিকে নেই
অঞ্চলটির কোথাও।
আগে ১,৫৭০
একর জমি
দখল করে
থাকা ল্যাসেলসরা
অনেকটা বাধ্য
হয়ে, চাপের
মুখে ২০০৭
সালে আয়োজন
করে দাস
প্রথার বিলুপ্তি
উদযাপন করে।
একই সঙ্গে
আঠারো শতকের
মালিকানাসংক্রান্ত সব
কাগজ আর্কাইভ
করতে পাঠিয়ে
দেয় ইউনিভার্সিটি
অব ইয়র্কে। আমেরিকার হেইভমেয়ার্স ও ফানজুলা পরিবার আমেরিকায়
বেশির ভাগ
চিনি উৎপাদনকারী
কারখানার মালিকরা
জার্মান হলেও
এই দুই
ভাই ছিলেন
একদম আলাদা।
ফ্লোরিডার ‘পেপে’
আর ‘আলফি’
নামের এই
দুই কিউবান
ভাই ফানজুলা
নামে বেশি
পরিচিত। তাদের
প্রতিষ্ঠানের নাম
আমেরিকান সুগার
রিফাইনিং ইনক
বা এএসআর।
এ কোম্পানির
অনেক শাখা-প্রশাখার
নাম হয়তো
পাঠক শুনে
থাকবেন। ডোমিনো,
ফ্লোরিডা ক্রিস্টালস,
টেট অ্যান্ড
লাইল নামের
অনেক বিখ্যাত
প্রতিষ্ঠানেরই পেছনে
আছে একসময়ের
‘সুগার
ব্যারন’ উপাধিপ্রাপ্ত
এ ফানজুলা
ভাইদের এএসআর।
১৮ ও
১৯ শতকে
জার্মান-আমেরিকানদের
তৈরি চিনির
কারখানাগুলো এখনো
দখলে আছে
ফানজুলাদের। ১৯৫৯ সালে
ফিদেল কাস্ত্রো
বিপ্লবের ডাক
দিলে ফানজুলা
পরিবার কিউবা
গিয়ে চিনি
উৎপাদনের কাজ
শুরু করে।
দ্রুত প্রচুর
টাকা-পয়সার
মালিক হয়ে
যায় এই
পরিবার। পরবর্তী
সময়ে পরিবারটি
আমেরিকা চলে
আসে। তবে
পুরনো আখ
চাষ আর
চিনি তৈরির
পারিবারিক ব্যবসাকে
হারায়নি তারা।
বর্তমানে আমেরিকায়
প্রায় চার
লাখ একর
আখের চিনির
স্থাপনার মালিক
এই ফানজুলা
পরিবার। একের
পর এক
স্থাপনা আর
জমি কিনেছে
তারা, স্থাপনা
বৃদ্ধি করেছে,
কারখানা বানিয়েছে,
অংশীদারত্ব নিয়েছে।
আর তাদের
এ কাজগুলো
শুধু আর্থিক
দিক দিয়ে
নয়, রাজনৈতিকভাবেও
সাহায্য করেছে
ফানজুলা পরিবারকে।
রাজনৈতিক ক্যাম্পেইনে
ফানজুলাদের আর্থিক
সহায়তা প্রতিটি
দলেরই কাম্য
থাকে। আর
সেই সুযোগ
হাতছাড়াও করেনি
কখনো এই
পরিবার। তবে
জ্যামাইকা থেকে
শ্রমিক এনে
নৃশংসভাবে তাদের
চিনি কারখানায়
ব্যবহার করায়
১৯৮৯ সালে
ফানজুলা ভাইদের
আদালতে ডাক
পড়ে। পরবর্তী
সময়ে তারই
ফলস্বরূপ চিনি
উৎপাদনে দাস
প্রথাসংক্রান্ত রীতিগুলো
থেকে সরে
আসে ফানজুলা
পরিবার। শুধু
চিনি নয়,
আরো নানাবিধ
ব্যবসায়িক কাজে
বর্তমানে যুক্ত
আছে তারা। আমেরিকায় অবশ্য
ফানজুলারাই নয়,
চিনি উৎপাদনের
ক্ষেত্রে এগিয়ে
ছিলেন উইলিয়াম
হেইভমেয়ারও। লন্ডন
থেকে চিনি
উৎপাদনের খুঁটিনাটি
শিখে নিয়ে
নিউইয়র্কে পা
রাখেন ১৫
বছরের উইলিয়াম।
ভাইয়ের সঙ্গে
মিলে নিজস্ব
পরিশোধনাগার খোলার
আগে প্রথমে
অন্য সুগার
হাউজে কাজ
করেন উইলিয়াম।
পরে ভাই
ফ্রেডরিকের সঙ্গে
ডব্লিউ অ্যান্ড
এফ সি
হেইভমেয়ার কোম্পানি
সুগার রিফাইনারিস
নামের প্রতিষ্ঠান
চালু করেন
তিনি। মৃত্যুর
আগে নিজের
সবকিছু ছেলে
উইলিয়াম ফ্রেডরিককে
দিয়ে যান
উইলিয়াম সিনিয়র।
তবে বাবার
বা চাচার
মতো চিনি
বাণিজ্যে মন
ছিল না
ছেলের। ১৮৪২
সালে তল্পিতল্পা
গুছিয়ে রাজনীতিতে
যোগ দেন
উইলিয়াম ফ্রেডরিক।
তিনবার নিউইয়র্কের
মেয়র হিসেবেও
দায়িত্ব পালন
করেন! ভারতের বিড়লা এশিয়ায়
চীন অনেকদিন
চিনি উৎপাদনে
এগিয়ে থাকলেও
ভারত বর্তমানে
সেই জায়গাটা
দখল করে
নিয়েছে। শুধু
এশিয়ায় নয়,
চিনি উৎপাদনকারী
হিসেবে ভারতের
প্রভাব আছে
পুরো পৃথিবীতে।
তবে বর্তমানে
ভারতে চিনি
উৎপাদনের ভিত্তি
তৈরি করার
পেছনে আছে
একটি পরিবার—বিড়লা।
এ পরিবারের
ব্যবসার শুরুটা
হয়েছিল ১৯১৯
সালে, বিড়লা
জুট ম্যানুফ্যাকচারিং
কোম্পানি হিসেবে।
ধীরে ধীরে
যেটা রূপ
নিয়েছে মাল্টিমিলিয়ন
কোম্পানি হিসেবে।
আর সেটারই
একটা বড়
অংশ হিসেবে
আছে বিড়লা
গ্রুপের চিনি
উৎপাদনকারী অংশ—বিড়লা
সুগার বা
তাদের অওধ
সুগার মিলস।
১৯৩২ সালে
পথচলা শুরু
করলেও ধীরে
ধীরে ভারতের
চিনি শিল্পের
পুরোধা হয়ে
উঠতে খুব
একটা সময়
লাগেনি বিড়লা
সুগারের। উত্তর
প্রদেশের হারগাওয়ে
অবস্থিত মাত্র
একটা চিনির
কারখানা দিয়ে
শুরুটা হলেও
এখন বিড়লার
চারটি বিরাট
কারখানা আছে
ভারতে, চিনি
উৎপাদনের জন্য।
এদের একেকটির
চিনি উৎপাদনের
ক্ষমতা অন্যটির
চেয়ে বেশি।
জমজমাট
এই চিনি
সাম্রাজ্যগুলো রাজ
করেছে বহু
বছর। আর
চিনির ইতিহাসে
যুক্ত হয়ে
আছে কারখানার
শোষণ, দাস
প্রথা আর
সহিংসতা। এসবের
বিরুদ্ধে একসময়
ক্ষেপে ওঠে
মানুষ। ১৮১১
সালে ইউরোপে
দাস প্রথার
বিরুদ্ধে সম্ভাব্য
নীতিমালা তৈরির
প্রস্তাব ওঠে।
সাদা, বিশুদ্ধ
চিনির বিপরীতে
দরপতন ঘটে
অপরিশোধিত চিনির।
সেটা ১৮৭০
সালের দিকে।
আধুনিক যন্ত্র-কারখানার
যুগে সময়ের
সঙ্গে সঙ্গে
তাই অতীতের
চিনি উৎপাদনকারী
বেশির ভাগ
পরিবারই ইতিহাসের
পাতায় স্থান
করে নিয়েছে।
তবে হ্যাঁ,
সব মিলিয়ে
দেখতে গেলে
বর্তমান পৃথিবীর
যে চেহারাটা
আজ দেখা
যাচ্ছে বা
চিনি ইতিহাসের
যত বাঁক
বদল করেছে
সেটার পেছনে
কারিমি, কর্নার,
ল্যাসেলসদের ভূমিকা
কম নয়!
সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি: লেখক