সিল্করুট

মাজার শরিফ

নূরুল হোসেন খন্দকার


মদনপুরের শাহ সুলতান ছিলেন তুর্কি রাজপরিবারের লোক। যুদ্ধক্ষেত্রে রাজবাড়ির নিয়মকানুন প্রভৃতি ক্ষেত্রে ডঙ্কা, দামামা, মাদল, ভেরি ইত্যাদি রাজকীয় প্রয়োজনে ব্যবহার হতো। মদনপুরে ডঙ্কা বাজিয়ে সংকেত জ্ঞাপন বা অনুষ্ঠান ঘোষণার প্রচলন তিনি শুরু করে গিয়েছিলেন। সেই থেকে পর্যন্ত ডঙ্কার শাহী ঘোষণা চলে আসছে।

সকাল সন্ধ্যা দুবার ডঙ্কা বাজিয়ে ঘোষণা দেয়া হয়। আদি ১০ জন খাদেম থেকে এখন প্রায় শত খাদেম পরিবার হয়েছে। অতিথিশালাটিকে তোষাখানা বলা হয়। তোষাখানার অতিথিদের আপ্যায়নের কাজ এসব পরিবার পালাক্রমে করে। যার ভাগে যেদিন যেসব মেহমান পড়ে, সেদিন সেই মেহমানদের তাদেরই আপ্যায়ন করাতে হয়। হযরত শাহ সুলতানের আমল থেকে পর্যন্ত তোষাখানায় সকাল বিকাল দুবেলা দূরবর্তী মেহমানদের পালাক্রমে সংশ্লিষ্ট খাদেমদের বাড়ি থেকে ভাত এনে খাওয়ানোর ব্যবস্থা চলে আসছে। সুলতান সাহেবের উদ্দেশ্যে নিয়ত করে এসে কেউ যেন থাকা খাওয়ার জন্য কষ্ট না করেন, আগে থেকেই এই সেবা ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল ডঙ্কা পিটিয়ে কেবল হযরত শাহ সুলতানের রাজকীয় আভিজাত্যই ঘোষণা করা হয় না, সকাল বিকাল দুবেলা তোষাখানায় যতজন অতিথি থাকেন, ততগুলো (একটি বেশি) ডঙ্কা-ধ্বনি করে তাদের সংখ্যা ঘোষণা করা, জুমার নামাজের সময়, ঈদের চাঁদ দেখা, ঈদের গোসলের সময়, জামাতের সময়, কোনো জরুরি অবস্থায় খাদেমদের একত্র হওয়ার জন্য, সূর্যোদয় অস্তের সময় ডঙ্কা পিটিয়ে ঘোষণা করা হয়। ডঙ্কা সম্পর্কে মি. মেক্সী শাহের নিম্নোক্ত অভিমত প্রকাশ করেন

‘A big drum is beaten by the guard of the Shirni, the number of strokes exceeding by one, the number guest awating for entertainment’

অর্থ শিরনির পাহারাদার কর্তৃক একটি বড় ঢোল (ডঙ্কা) পিটিয়ে যতজন মেহমান উপস্থিত থাকেন, সেই সংখ্যার চেয়ে একটি আঘাত বেশি দিয়ে প্রতিটি ঢোলের শব্দ দ্বারা একেকজন মেহমানের সংখ্যা ঘোষণা করা হয়।

মাজার শরিফে যারা ভৃত্যের কাজ করেন, তোষাখানার মেহমানদের খাওয়ানোর পালা কোন দিন কার বা কাদের কার কতটুকু অংশের পাক-সাফ করতে হবে এসব খবরাখবর দেয়া, রান্না হলে ভাত-তরি-তরকারি এনে মেহমানদের পরিবেশন করা, খাওয়া-দাওয়ার পর থালাবাসন যার যার বাড়িতে ফিরিয়ে দেয়া ইত্যাদি কাজ যারা করেন, তাদের ঝাড়ু ফরাস বলা হয়।

সংরক্ষিত ভূমিতে হযরত শাহ সুলতানের মাজার শরিফ, মসজিদ, মাজার শরিফের বিভিন্ন ঘর, শাহ সুলতান উচ্চ বিদ্যালয়, সুলতানিয়া আলিয়া মাদ্রাসা, সুলতানিয়া দাতব্য চিকিৎসালয় রেস্ট হাউজ অবস্থিত। মাজার শরিফসহ এসব প্রতিষ্ঠান খাদেম কমিটির নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের আয়-উপার্জন জনহিতকর কাজে ব্যবহার হয়।

হযরত শাহ সুলতানের ওফাতের পর ১০ জন প্রিয় বিশ্বস্ত খাদেম তার পবিত্র মাজার শরিফের হেফাজতের নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সেই থেকে পর্যন্ত তাদের ওয়ারিশরা দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আগে থেকেই একেকজন খাদেম এক মাস করে পালাক্রমে মাজার শরিফের হেফাজত, পরিচালনা আয়-ব্যয় প্রভৃতির যাবতীয় দায়িত্ব পালন করে এসেছেন। যে মাসে যে খাদেম দায়িত্ব পালন করতেন, সেই মাসকে তারই নামানুসারে ডাকা হতো। এই কয়েকশ বছরে এখন সেই মাসগুলোর স্থায়ী নামকরণ হয়ে গেছে। যেন একটি স্বতন্ত্র জগৎ। এই ১০ জন খাদেম নামীয় ১০ মাসে এক বছর ধরা হয়। আগে যেখানে ১০ জনের ১০ মাসের একটি পালা বা পর্যায় ধরা হতো, এখন প্রায় ২০০ পরিবারের স্বার্থসংরক্ষণের জরুরি কারণ থাকায় একেকটি পর্যায়কেই একেকটি বছর না ধরে উপায় নেই। হযরতে আলার সঙ্গে ১০ জনের স্থলে যদি ১২ জন খাদেম থাকতেন, তাহলে পৃথিবীর বর্ষপঞ্জিগুলোর সঙ্গে রকম বৈসাদৃশ্যের প্রশ্ন থাকত না। তিনি নিজেই যেখানে সাধারণ ছিলেন না, তার পরবর্তী জীবন-পঞ্জিকাটিই বা আর সাধারণ থাকবে কেন।

আগে যেমন প্রতি মাসে একজনকেই আয়-ব্যয়ের যাবতীয় হিসাব রাখার দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবেই পালন করতে হতো, এখনো তদানুরূপ ওয়ারিশ-খাদেমের নিজ নিজ পালার প্রাপ্য সময়সীমায় আয়-ব্যয় হিসাব করে খরচ বাদ দিয়ে লাভটুকু তাকে ভাগ করে নিতে হয়। আগে একজন খাদেমের দখলে থাকত এক মাস। এখন পরিবার হয়েছে ২০০। তাই এক মাসকে ৩০ দিনে ভাগ করেও কুলায় না, একটি হিসাবের সুবিধার জন্য ৩২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি ভাগকে বলা হয় এক ঘড়ি। দিনটিকে চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এই চার ভাগের একভাগকে বলা হয় একপ্রহর। আট ঘড়িতে একপ্রহর। প্রয়োজনের তাগিদেই দিনকে এরূপ ক্ষুদ্রতম অংশে ভাগ করা হয়েছে। পরিবারগুলোর মাসিক পালার কমবেশি হিস্যা অনুসারে সারা দিনে যে কয়জন অংশীদার পাওনাদার হয়, মাজার শরিফের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত মানত, শিল্পী, নেয়াজ-নজর ইত্যাদি টাকা, জিনিসপত্র, গরু, ছাগল প্রভৃতি যা কিছু হয়, দিনের শেষে খরচ বাদে যা থাকে, হিস্যানুযায়ী ওই দিনের অংশীদার সবাই যার যার পাওনা নিয়ে যান। সূর্যোদয় অস্ত সম্বন্ধে ডঙ্কা পিটায়ে সময়সীমা ঘোষণা করা হয়।

এজন্য কাগজপত্রে নিয়ম-শৃঙ্খলা সংরক্ষণের জন্য একখানি রেকর্ড রেজিস্টার বই আছে। খাদেম কমিটির নেতৃত্বে পরিচালিত এই রেকর্ড বইটি হলো মূল দলিল। এই বইয়ের মারফত যাবতীয় হিসাবনিকাশের শৃঙ্খলা রক্ষা করা হয়। খাদেমদের অবস্থার পরিবর্তনের কারণে এসব হিস্যা স্বত্বের ক্রয়-বিক্রয় হয়। এজন্য কোনো পৃথক দলিল করতে হয় না। রেকর্ড বইয়ে বিক্রেতার নামের স্থলে ক্রেতার নাম লিখে রাখলেই হয়। বইটিকে খাদেমদের মূল গঠনতন্ত্র বলা যেতে পারে। তাদের অংশস্বত্বের যাবতীয় খুঁটিনাটি হিসাবনিকাশ, নিয়ম-শৃঙ্খলা খাদেম কমিটির মারফত সংরক্ষণ পরিচালনা করা হয়।

আল্লাহর ওয়াস্তে, মাজার শরিফে মানুষ বিভিন্ন নিয়ত-উদ্দেশ্যে যেসব মানত শিল্পীর অর্থ, দ্রব্য, গরু-ছাগল, মোরগ প্রভৃতি যা প্রদান করে, তা রাখার জন্য পূর্ব হতেই পূর্বতন খাদেমরা একটি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করে গিয়েছিলেন। ওই স্থানটি সিড়ি নামে প্রসিদ্ধ। যত মানত শিল্পী, সিড়িতে রাখা হয়। দরগা শরিফের সম্মানার্থে স্থানটি একটু পৃথকভাবে রাখা হয়েছে। পূর্বে প্রচলিত নিয়মানুসারে মাজার শরিফের এসব শিরনি রক্ষণাবেক্ষণ প্রভৃতি যাবতীয় অভ্যন্তরীণ দায়িত্ব ফারাম বংশীয় খাদেমরা পালন করেন। পূর্বোল্লেখিত পালাক্রমিক ওয়ারিশান, স্বত্বাধিকার মূলে তারা এসব শিল্পী প্রভৃতির ভোগ-ব্যবহার করে থাকেন। মাজার শরিফের অভ্যন্তরীণ খিদমত সিড়ির সংরক্ষণাদি প্রভৃতি দায়িত্ব পালনের জন্য প্রতি রোববার বৃহস্পতিবারের সিড়ির আয়-উপার্জন তাদের জন্য পূর্ব প্রচলন অনুযায়ী অতিরিক্ত আয় হিসাবে বরাদ্দ করা হয়। ফারামরা সাধারণভাবে সিঁড়িতে অর্জিত আয়ের টাকা প্রতি এক আনা এবং মাজার শরিফের ভেতরকার আশপাশের আয়-উপার্জনের টাকা প্রতি চার আনা পূর্ব প্রচলন অনুযায়ী পেয়ে থাকেন। সব ধরনের শিরনির এক-দশমাংশ মাজার শরিফের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে জমা দেয়া হয়। একে সরকারি টাকা বা খাত বলে অভিহিত করা হয়। সরকারি টাকা বাদে সেই অবশিষ্ট টাকা দিয়ে প্রতিদিন দুবেলা মেহমানদের জন্য খরচ করে যা থাকে, তা নিজ নিজ হিস্যানুযায়ী বণ্টন করে থাকেন। - হলো খাদেমদের আয়। দুই শতাধিক পরিবার এই আয়ের অংশীদার। ওরশের সময় হাজার হাজার লোক মদনপুর আসে। মদনপুর লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। এসব অগণিত লোককে খাদেমদের পক্ষে খাওয়ানো সম্ভব নয়, সুতরাং ওরশের মেহমানদের খাওয়ানো হয় না।

হযরত শাহ সুলতান ১২০ জন সুদক্ষ আউলিয়া সৈনিক নিয়ে বাংলাদেশে আগমন করেন। যুদ্ধে কয়েকজন শহীদ হন। বিভিন্ন স্থানে প্রচারাভিযানেও নিয়োগ করা হয় কয়েকজনকে। সবশেষে যখন তিনি মদনপুরে পদার্পণ করেন, তখন তার সঙ্গে ছিলেন ৪০ জন আউলিয়া। তাকে নিয়ে ৪১ জন। ওরা সবাই যে মদনপুর আস্তানা করেছিলেন, তা নয়। বাংলার চতুর্দিকেই তারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়েছিলেন। যেসব স্থানকেই তারা আপন করে নিয়েছিলেন। তাদের কে কোথায় আস্তানা স্থাপন করেছিলেন বা কার পবিত্র মাজার শরিফ কোথায় সেসব ইতিহাস এখনো অজ্ঞাত। সম্বন্ধে আমরা ছিটেফোঁটা যা কিছু জানতে পাই, তাদের মাজার শরিফ জনগণের নিকট খুবই শ্রদ্ধা সম্মানের। হয়তো সবাই সর্বত্রই সসম্মানে সমাহিত আছেন। অথবা তাদের কারো কারো সমাধি স্থানের চিহ্নই খুঁজে পাওয়া যায় না বা কারো কারো মাজার শরিফ এখনো বিদ্যমান কিন্তু আউলিয়ার নাম কী, কেউ বলতে পারে না। মদনপুরের অবস্থাও তাই।

খাস মদনপুরে মাত্র নয়জন আউলিয়ার মাজার চিহ্নিত আছে। কয়েকজনের মাজার শরিফ স্বনামে মদনপুর পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোয় পাওয়া যায়, বাকি আউলিয়াদের নাম সমাধি চিহ্ন নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। ১০ জন খাস খাদেমের মাজার শরিফ হযরতে আলার মাজার শরিফের সন্নিকটেই চিহ্নিত আছে, তন্মধ্যে বুড়া পির সাহেবের মাজার বিবি (সোয়া বিবি) সাহেবের মাজার সুপ্রসিদ্ধ। বুড়া পির সাহেব মানে শাহ সুলতানের উস্তাদ হযরত সৈয়দ মহীউদ্দীন সুরখুল আম্বিয়া সুরতীন। সংক্ষেপে ছুরুখ সাহেব। তিনি পশুরামের সহিত যুদ্ধে নিহত কায়কাউস সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি সৈয়দ মাহমুদ মাহীসওয়ারের পিতা। তার মাজার শরিফ সুলতান সাব-এর মাজার শরিফ থেকে প্রায় আড়াই মাইল দূরে অবস্থিত।

মদনাল পুকুরের দক্ষিণ পাড়ে বিবি সাবের মাজার শরিফ বিদ্যমান। চারকোণের চারটি স্তম্ভের ওপর সুন্দর কারুকার্য খচিত, অনুচ্চ পাকা ছাদের নিচে তার মনোরম শুভ্র মাজার শরিফ। চারদিকে অযত্নে লালিত ছোট ছোট গাছপালা, সবুজ মখমলের মতো কোমল ঘাসে পরিবৃত মাজারখানি যেন শ্যামল প্রকৃতি-নিকুঞ্জে একখানি প্রস্ফুটিত সুন্দর শুভ্র গোলাপ ফুল। হযরত সোয়া বিবি তরুণ বয়সে এসে মদনাল পুকুরের পাড়ে যেমন সারাটি জীবন নিঃসঙ্গভাবে শুধু আল্লাহকে মূলধন করে একাকিনী কাটিয়েছিলেন, তেমনি তার মাজারখানিও শ্যামল প্রাকৃতিক পরিবেশে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন নিঃসঙ্গ একাকীভাবেই অবস্থিত। ছোট ছোট গাছ-ঝোঁপ ছাড়া ধারেকাছে কোনো বাড়িঘর নেই। পুকুরটির পূর্ব নাম হয়তো ছিল মদন লাল পুকুর। বর্তমানে মদনাল নামে পরিচিত। বিভিন্ন বনজ লতাপাতা জারমুনিতে পুকুরটি ভরাট হয়ে আছে। এখন পুকুরের সুবিশালত্ব সৌন্দর্য বোঝা না গেলেও যে একটি বিরাট ঐতিহাসিক প্রাচীন পুকুর, তা সহজেই বোঝা যায়। কিন্তু আর মাত্র কয়েক যুগ পরেই পুকুরটি হয়তো এক শ্রেণীর কৃষকের খেতে পরিণত হবে। পুকুরের অস্তিত্ব আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। এরূপ প্রাচীন কীর্তি রক্ষায় সরকারের এগিয়ে আসা উচিত। কিন্তু পুকুরের দক্ষিণ পাড়টি বিবি সাহেবার মাজার শরিফের সংস্রবে বেঁচে থাকবে সুদীর্ঘ সময়। মাজারখানিও হয়তো টিকে থাকবে শত সহস্র বছর। একজন তুর্কি মহীয়সী মহিলা, বিশ্বের এমন নজিরহীন পতিভক্তি অদ্বিতীয় সতীত্বের কৃচ্ছ্রসাধনার অগ্নিপরীক্ষা দিতে ছুটে এসেছিলেন বাংলার মাটিতে।

আমরা ১০ জন খাদেম-আউলিয়ার নাম উল্লেখ করেছি মাত্র, কিন্তু তাদের বিস্তারিত পরিচয় দিতে পারিনি। তাদের মাজার শরিফ হযরতে আলার আশপাশে যে আজও চিহ্নিত, তাও আমরা নামসহ উল্লেখ করেছি। এই ১০ জনসহ অবশিষ্ট ১০ জনের নয়জনের নাম নিম্নে উল্লেখ করা হলো। মাজার আছে কিন্তু তার নাম জানা নেই। হযরত সৈয়দ আলী শাহ, হযরত শাহ জালাল খন্দকার, হযরত শাহ দবীর উদ্দীন, হযরত মালিক রুস্তম আউলিয়া, হযরত শাহ দেওয়ান, হযরত শাহ কামাল, হযরত শাহ মোগল গরীবুল্লাহ, হযরত শাহ করিম উল্লাহ, হযরত সৈয়দ সুরখুল আম্বিয়া সুরতনী (বুড়াপির) ১০ জন খাদেম আউলিয়া এবং বাকি নয়জন মদনপুর গ্রামের অন্যান্য স্থানে সমাধিস্থ আছেন। এই ২০ জনের মাজার শরিফ চিহ্নিত আছে।

মদনপুরকে সাধারণত ৪০ আউলিয়ার গ্রাম বলা হয়। এর অর্থ এই নয় যে, সবারই সমাধি মদনপুরে থাকতে হবে। তবে তাদের কর্মকেন্দ্র স্থল যে মদনপুরেই ছিল, কথা অবধারিত সত্য। যে যে আউলিয়া অন্যান্য গ্রামে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন, সেখানেই তাদের রওজা শরিফ হয়েছে। হযরত শাহ সুলতানের নির্দেশেই তারা চতুর্পার্শ্বে ছড়িয়ে পড়ে এক মহান উদ্দেশ্যে কর্মব্যস্ত জীবন কাটিয়ে গেছেন।

 

[রচনাটি লেখকের শাহ সুলতান রুমী (.) (১৯৮৭) গ্রন্থের মাজার শরিফ অধ্যায়ের সংক্ষেপিত রূপ]

 

নূরুল হোসেন খন্দকার: সাহিত্যিক