পদ্মায় পানি বৃদ্ধি, কুষ্টিয়ার পানিবন্দি ৪০ গ্রাম

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া

ছবি -বণিক বার্তা

পদ্মা নদীর কুষ্টিয়া অংশে আকস্মিক পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে চারটি উপজেলার প্রায় ৪০টি গ্রাম এখন পানিবন্দি। নদী সংলগ্ন এসব এলাকার নিম্নাঞ্চলে ফসলি জমি ডুবে গেছে। ডুবে গেছে সড়ক। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এ অঞ্চলের প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, পদ্মাতে বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। যা আজ শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা পর্যন্ত অপরিবর্তিত রয়েছে। পদ্মা হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে ১২ দশমিক ৩৮ সেন্টিমিটার উচ্চতা দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ পয়েন্টে বিপদসীমা ধরা হয় ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার।

পাউবো’র কর্মকর্তারা বলছেন, আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং এ মাসের শেষের দিকে কমতে শুরু করে। গত এক সপ্তাহ ধরে পদ্মায় ফের পানি বাড়তে শুরু করেছে।

পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কুষ্টিয়ার সীমান্তবর্তী দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চলের মরিচা, ফিলিপনগর, রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী  ইউনিয়নের অন্তত ৪০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ফসলি জমি ও সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ভাঙন আতঙ্কে আছে চরবাসী। চারপাশে পানি উঠে যাওয়ায় এরই মধ্যে উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান জানান, ইউনিয়নের ২১ গ্রামই প্রায় পানিবন্দি। রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। যাতায়াত ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। চর এলাকার আবাদি জমিগুলো ডুবে গেছে। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে। তিনি জানান, চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস বন্ধ রাখা হয়েছে।

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজ মণ্ডল জানান, ইউনিয়নের ১৯টি গ্রামের মধ্যে ১৬টি গ্রামের চারপাশে পানি চলে এসেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলামের দেয়া তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, মরিচা, ফিলিপনগর, চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের প্রায় ১ হাজার ৬২০ হেক্টর জমির মাষকলাই পানিতে ডুবে গেছে। এ ছাড়া মরিচ ৭০ হেক্টর, কলা ৭৩ হেক্টর ও ১৩ হেক্টরের মতো সবজি ক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে। তিনি আরো বলেন, পানি কয়েকদিন স্থির থাকলে এসব ডুবে যাওয়া ফসল পচে যাবে।

এদিকে, কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান জানান, পদ্মার পানি আরো কয়েক দিন বাড়তে পারে। তিনি জানান, উজান থেকে বৃষ্টিপাতের পানি নেমে আসছে। তিনি জানান, ঐসব এলাকায় প্রায় শত কিলোমিটার নদী পাড়ে কোনো বাঁধ নেই। পানি সরাসরি প্রবেশ করে। তার মতে, নিমজ্জিত চরাঞ্চলের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম জানান, যদি বৃষ্টিপাত না বাড়ে, তবে পানি তিনদিনের মধ্যে কমতে শুরু করবে। দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওবায়দুল্লাহ জানান, উপজেলায় সেল খোলা হয়েছে। মনিটরিং চলছে।পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন