সেচে ডিজেলের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা প্রয়োজন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা

দেশে প্রতি বছর ডিজেলের মোট চাহিদার প্রায় ২৩ শতাংশ ব্যবহার হয় কৃষিতে। বিশেষ করে ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সেচ মৌসুমে ডিজেলের বাড়তি চাহিদা থাকে। নিরবচ্ছিন্নভাবে কৃষিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহে প্রতি বছর আলাদাভাবে বাড়তি প্রস্তুতি নেয় বিদ্যুৎ বিভাগ ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। আসন্ন সেচ মৌসুমেও কৃষির ভালো ফলন নিশ্চিত করতে জ্বালানি তেল ডিজেলের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিসংশ্লিষ্টরা। 

দেশে কৃষিতে বিশেষত সেচযন্ত্রে প্রয়োজনীয় জ্বালানি তেল আমদানি করে বিপিসি। এরই মধ্যে সংস্থাটি জ্বালানি কৃষিতে তেলের বাড়তি মজুদের বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। তবে সেচ মৌসুমে ডিজেলের বাড়তি চাহিদা নিয়ে এখনো কোনো বৈঠক হয়নি বলে বিপিসি ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

দেশে প্রতি বছর ডিজেলের বড় চাহিদা থাকে উত্তর অঞ্চল, চট্টগ্রাম ও বৃহত্তর যশোর জেলাকে ঘিরে। বিশেষত যেসব জেলায় কৃষিজমির পরিমাণ অনেক বেশি, সেসব জেলায় সেচকৃত যন্ত্রের পরিচালনায় ডিজেলের চাহিদাও থাকে সবচেয়ে বেশি। 

২০২৩-২৪ অর্থবছরে কৃষি সেচ মৌসুমে ডিজেলের প্রাক্কলন ছিল মোট ১২ লাখ ৫০ হাজার ৩৫৫ টন। ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত এ পরিমাণ ডিজেল সেচকাজে প্রয়োজন হবে বলে প্রাক্কলন করেছিল বিপিসি। এর মধ্যে গত বছরের নভেম্বরে সেচ মৌসুমের শুরুতে ডিজেলের চাহিদা ছিল ৬২ হাজার ৫১৮ টন, ডিসেম্বরে তা দ্বিগুণের বেশি হয়ে ১ লাখ ২৫ হাজার ৩৬ টন উঠে যায়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১ লাখ ৫০ হাজার টন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ লাখ টন, মার্চে ৩ লাখ ২৫ হাজার টন, এপ্রিলে ২ লাখ ২৫ হাজার টন, মে মাসে ৬২ হাজার ৫১৮ টন। এছাড়া ওই সংশ্লিষ্ট সময়ে লুব অয়েলের চাহিদার প্রাক্কলন ছিল ৪৪ হাজার ১২৩ টন। 

বিপিসির চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘প্রতি বছরের মতো এবারো বিপিসি সেচ মৌসুমে ডিজেলের বাড়তি চাহিদা কী পরিমাণ হতে পারে; সেটি নিয়ে কাজ করছে। বিপিসির লক্ষ্য সেচ মৌসুমে ডিজেলের সংকট যাতে না হয়। এরই মধ্যে বিপিসি কৃষিসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত নেয়া শুরু করেছে।’

দেশে ডিজেলের লিটারপ্রতি মূল্য চলতি মাসের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৫ টাকা ৫০ পয়সা, যা গত ফেব্রুয়ারিতে ছিল ১০৯ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করার জন্য দেশে চালু রয়েছে স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে বিগত ছয় মাসে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় হলেও তাতে লিটারপ্রতি কখনো ৫০ পয়সা আবার কখনো ১ টাকা কমবেশি হয়েছে। উচ্চ মূল্যের এ জ্বালানি কিনে কৃষিতে ব্যবহার করায় কৃষকের উৎপাদন খরচও বেড়ে গেছে ব্যাপক হারে। এ পরিস্থিতি উত্তরণে জ্বালানি তেল হিসেবে ডিজেলের দাম আরো কমানোর প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরছেন কৃষিসংশ্লিষ্টরা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন