সততা, নিষ্ঠা ও জবাবদিহি নিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকারের সব পর্যায়ে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে গতকাল সচিবদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর এই প্রথম সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধান উপদেষ্টা। এর আগে নিজের অধীনে রাখা মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন তিনি।
বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস ইউং থেকে একটি বার্তা পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, বৈঠকে সচিবদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘সৃষ্টিশীল ও নাগরিকবান্ধব মানসিকতা নিয়ে সব মন্ত্রণালয় বা বিভাগ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার কর্মসূচির সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা দাখিল করবে, যা নিয়মিত মূল্যায়ন বা পরিবীক্ষণ করা হবে। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে সৃষ্ট নতুন বাংলাদেশ নিয়ে বিশ্বব্যাপী যে আগ্রহ ও ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে, দেশের স্বার্থে তা সর্বোত্তম উপায়ে কাজে লাগাতে হবে।’
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা বৈষম্যহীন মানবিক দেশ গড়ার যে প্রত্যয়, যে ভয়হীন চিত্ত উপহার দিয়েছে, তার ওপর দাঁড়িয়ে বিবেক ও ন্যায়বোধে উজ্জীবিত হয়ে স্ব স্ব ক্ষেত্রে সততা, নিষ্ঠা ও জবাবদিহি নিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে। নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য গৎবাঁধা চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে, চিন্তার সংস্কার করে, সৃজনশীল উপায়ে জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সরকারি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।’
সভায় ড. ইউনূস সচিবদের সরকারি অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন। সরকারি কেনাকাটায় যথার্থ প্রতিযোগিতা এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সংস্কার কর্মসূচি প্রণয়নে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা ও মতামত গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘দুর্নীতির মূলোৎপাটন করে সেবা সহজীকরণের মাধ্যমে জনগণের সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে। একই সঙ্গে সরকারি অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি ক্রয়ে যথার্থ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে হবে।’