দেশব্যাপী পণ্য পরিবহন ও বিক্রয়ে চাঁদাবাজির ঘটনা বেশ পুরনো। পণ্য পরিবহনের সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য থেকে শুরু করে সরকারি দলের নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজির অভিযোগ বহুদিনের। এ চাঁদাবাজির প্রভাব পড়ে পণ্যের বিক্রয় মূল্যের ওপর। বাড়তি খরচ যুক্ত হয়ে দাম বেড়ে যায় পণ্যের। ব্যবসায়ী ও বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শুধু চাঁদাবাজি বন্ধ হলেই পণ্যের দাম অন্তত ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব।
তুমুল গণ-আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। বাজার তদারকিতে নামে শিক্ষার্থীরা। ফলে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে চাঁদাবাজ ও ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট। আবার বর্তমান পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেরও চাঁদাবাজি করতে দেখা যাচ্ছে না। এতে বাজারে পণ্যমূল্য অনেকটাই কমে আসে।
এ বিষয়ে নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘সম্প্রতি ট্রাফিক পুলিশের অবর্তমানে সড়কে যান চালাচল নিয়ন্ত্রণ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে কমে আসে পুলিশের হয়রানিও। এভাবে কিছুদিন চাঁদাবাজিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত হওয়ায় শাকসবজির মতো নিত্যপণ্যের দাম ৩০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসে। চাঁদাবাজি বন্ধ হলে এর প্রভাবে ব্যবসার পরিচালন ব্যয়ও ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসবে। পণ্য পরিবহনের সময় কমে আসবে। কারণ মোড়ে মোড়ে চাঁদা দিতে গিয়ে পণ্যবাহী যানকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তাই চাঁদাবাজি ও হয়রানিমুক্ত ব্যবসায়িক মডেল দাঁড় করাতে দেশকে ঘুস-দুর্নীতি মুক্ত করা প্রয়োজন।’
পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির পেছনে প্রধানত ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট দায়ী ছিল। এখন সেটা ভেঙে পড়ায় আগের চেয়ে দাম অনেকটা কমে আসতে শুরু করেছে বলে মনে করছেন কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘নতুন প্রশাসনের অধীনে হয়তো সিন্ডিকেট সেভাবে থাকতে পারবে না। তাই দাম কমে আসবে। তবে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। আগে যারা চাঁদাবাজি করত তারা সিনে নেই। নতুন কেউ যেন আবার পরিবহন থেকে চাঁদাবাজি শুরু করতে না পারে, সেটা খেয়াল রাখতে হবে।’