‘কার্তিক ব্রতে’ বাবা লোকনাথকে স্মরণ

বণিক বার্তা অনলাইন

ছবি: কাজী সালাহউদ্দিন রাজু

কেউ বলেন ‘কার্তিক ব্রত’, আর কারো কাছে ‘রাখের উপবাস’। কেউ আবার ‘গোসাইর উপবাস’ কিংবা ‘ঘৃত প্রদীপ প্রজ্বালন’ উৎসব নামেও জানেন।

এ মজমার শুরু বাবা লোকনাথের মাধ্যমে। প্রাণঘাতী রোগ থেকে বাঁচার জন্য কার্তিক মাসে উপবাসের নির্দেশনা দিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন আশ্রম প্রাঙ্গণে ঘিয়ের প্রদীপ ও ধূপ-ধুনা জ্বালাতে। তখন থেকেই রোগমুক্তি ও আপনজনের কল্যাণ কামনা করে ভক্তরা পালন করেন ‘রাখের উপবাস’।

উৎসবের অন্যতম বড় কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার বারদী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম। প্রতিবছর ঘটা করে এ উৎসব পালিত হয়। দূরদূরান্ত থেকে এসে জড়ো হন ভক্তরা।

প্রতি বছরের ১৫ কার্তিকের পর থেকে মাসের পরবর্তী প্রতি শনি ও মঙ্গলবার লোকনাথ অনুসারীরা এই ব্রত পালন করেন। গতকাল মঙ্গলবারও (৮ নভেম্বর) ব্যতিক্রম ছিল না। লোকনাথের আরাধনায় নিমগ্ন থাকেন অনুসারীরা।

ছবি: কাজী সালাহউদ্দিন রাজু

ঘটা করে পালন করা হয় এ উৎসব। প্রদীপ, ধুপ, ফুল-ফল সামনে নিয়ে একাগ্রচিত্তে নারী-পুরুষ, শিশু-তরুণ-বৃদ্ধ নির্বিশেষে মগ্ন থাকেন আরাধনায়। প্রদীপ জ্বালানো অবস্থায় কথা বলা বন্ধ রাখতে হয়। একাগ্রচিত্তে ডাকেন লোকনাথকে। প্রদীপ আলো নিভে গেলে মন্দির থেকে চাল-কলা দিয়ে দেয়া হয় পূণ্যার্থীদের। কেউ খেয়ে নেন, আর কেউ সেগুলো রেখে দেন বিপদ-আপদে খাওয়ার জন্য।

১৭৩৫ সালে ব্রিটিশ ইনডিয়ার পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার চাকলা গ্রামে জন্ম বাবা লোকনাথের। বাবা রামনারায়ণ ও মা কমলাদেবী। মাত্র ১১ বছর বয়সে তাকে উপনয়ন করিয়ে, পাশের গ্রামের ভগবান গাঙ্গুলির হাতে সন্ন্যাসের জন্য তুলে দেয়া হয়। অনেকেই তাকে শিবের অবতার মনে করেন। 

কথিত আছে, সিদ্ধি প্রমাণ দেয়ার জন্য স্বেচ্ছায় বিষ গ্রহণ করেছিলেন লোকনাথ। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে তিনি চিতা থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে আসেন। এরপর ব্রাহ্মণ সমাজও তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিলেন। আরো অনেক লৌকিক কথা প্রচলিত রয়েছে তার প্রসঙ্গে।

নারায়ণগঞ্জের বারদী আশ্রমে তিনি সমাধিস্থ হয়েছিলেন। তাই এখনকার উৎসবকে ভীষণ গুরুত্ব দিয়ে থাকেন ভক্তরা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন