
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ এ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ, ফাইনালও এখানে। এছাড়া ১৪ অক্টোবর ভারত-পাকিস্তান মহারণ বসবে এ মাঠে। ১ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি দর্শক ধারণক্ষম এ স্টেডিয়াম গতকাল আলোকিত করেন ত্রয়োদশ ওয়ানডে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী ১০ দলের অধিনায়ক। বিশ্বকাপের ঝলমলে ট্রফি মাঝে রেখে ফটোসেশন করেছেন তারা, সেই সঙ্গে বিশ্বকাপে নিজেদের লক্ষ্যের কথাও তারা বলেছেন রবি শাস্ত্রী ও ইয়োন মরগানকে। গ্রুপ ছবির যথার্থ এক ক্যাপশন দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড: ১০ অধিনায়ক, এক লক্ষ্য—ট্রফি।
এ সোনার ট্রফির জন্যই আগামী ৪৫ দিন ভারতের ১০টি স্টেডিয়ামে ধুন্ধুমার ক্রিকেট লড়াই হবে বিশ্বের সেরা ১০টি দেশের মধ্যে। আগামী ১৯ নভেম্বর এ নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ফাইনাল শেষে শিরোপা উঁচিয়ে ধরবেন একজন। তিনি কি রোহিত শর্মা, বাবর আজম, প্যাট কামিন্স, জস বাটলার, নাকি কেন উইলিয়ামসন?
বিশ্বকাপ জয়ের দাবিদার এখনো হয়ে না উঠলেও বড় মঞ্চে ভালো করার প্রত্যয়ের কথা জানালেন বাংলাদেশ দলনায়ক সাকিব আল হাসান। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি ভালোই হয়েছে। ২০১৯ বিশ্বকাপের পরের চার বছরের কথা যদি আমরা বলি তবে দেখা যায়, আইসিসির বাছাই পর্বের পয়েন্ট সিস্টেমে আমরা তিন কিংবা চারে ছিলাম। কাজেই একটি গ্রুপ হিসেবে আমরা ভালোই করেছি। এখন আমাদের বিশ্বকাপে ভালো কিছু দেখানোর সময়। আমাদের দল তৈরি। এখন দেশের জন্য আমাদের এমন কিছু করতে হবে, যা আগের আসরগুলোয় করতে পারিনি।’
সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানের দলনায়ক বাবর আজম সরাসরি কাপ জয়ের কথা নয়, কূটনৈতিকভাবে উত্তর দিয়েছেন প্রশ্নের। তিনি বলেছেন, ‘আমরা এক সপ্তাহ হায়দরাবাদে আছি, মনেই হয়নি আমরা ভারতে আছি, বাড়ির মতোই মনে হয়েছে। আমরা উপভোগ করেছি অনেক। এটা দলের জন্য বেশ ভালো ছিল এবং আমি মনে করি এখন শতভাগ দেয়ার একটা ভালো সুযোগ এসেছে। আর টুর্নামেন্টটি উপভোগ করতে হবে।’
সবচেয়ে বেশি চাপে থাকবেন ভারতীয় দলনায়ক রোহিত শর্মা। তিনিও সরাসরি কিছু বলেননি। রোহিত বলেছেন, ‘এখানে বসা প্রতিটি নেতাই তার দেশের হয়ে বিশেষ কিছু অর্জন করতে চান। এখানে প্রত্যেকেরই লক্ষ্য এই মুকুট জয় করা। আমিও শিশুকাল থেকেই এমন স্বপ্ন দেখি। এটুকু নিশ্চিত করতে পারি, এটি উপভোগ্য এক বিশ্বকাপ হবে, মাঠগুলো দর্শকে ঠাসা থাকবে। আমাদের সমর্থকরা ক্রিকেট যেমন ভালোবাসে, তেমনি আমাদের দলকেও। এটা অসাধারণ এক টুর্নামেন্ট হতে চলেছে।’
পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্বে এবার পেস বোলার প্যাট কামিন্স। তিনি অজিদের লক্ষ্য নিয়ে নয়, বরং ভারত-পাকিস্তান উন্মাদনা নিয়েই কথা বলেছেন। তার ভাষায়, ‘আমার মনে হয় বিশ্বে এমন কম ইভেন্টই আছে যেটি ভারত-পাকিস্তানের বিশ্বকাপ ম্যাচের মতো দেখা হয়। এতে আমরা সম্পৃক্ত না থাকলেও এ ম্যাচ নিয়ে আলোচনা, ধারাভাষ্য শোনা কিংবা তর্ক-বিতর্ক অবলোকন করা অবিশ্বাস্য অনুভূতি এনে দেয়। এবং তা এই মাঠে (নরেন্দ্র মোদি) হওয়াটা অবিশ্বাস্য, যেখানে এক লাখেরও বেশি দর্শক আসবে।’
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলার বলেছেন, ‘২০১৫ সালের পর দীর্ঘ সময় এ দলটা একসঙ্গে রয়েছে। এখন তো সম্ভামনাময় তরুণরা দলে আসছে, তারাও আমাদের ব্র্যান্ডের ক্রিকেটটা এগিয়ে নিতে চায়। এটাই আমাদের সাফল্যের সেরা সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে।’
লংকান দলনায়ক দাসুন শানাকার কথা, ‘আমাদের জন্য রোমাঞ্চকর সময়। ইনজুরির কারণে আমরা কিছুদিন ধরে ধুঁকছি। একই সঙ্গে আমাদের কিছু ভালো রেকর্ডও আছে। বিশ্বকাপ আমরা একটি দল হিসেবে এগোতে চাই। সবাই বড় মঞ্চে পারফর্ম করতে চায়।’
প্রোটিয়া দলনায়ক তেম্বা বাভুমা বলেন, ‘অনেকেই ভারতে খেলে, এখানে সাফল্য পাচ্ছে। তাই আমি বলব না, এটি আমাদের জন্য বাড়তি কোনো সুবিধা। আমরা যা করতে পারি তা হলো একটি দল হিসেবে খেলা, অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান বিনিময় করা।’
ডাচ অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস বলেছেন, ‘আমি মনে করি এ টুর্নামেন্টের সব ম্যাচই কঠিন হবে। অবশ্যই পাকিস্তান ভালো একটি দল। আমরাও টুর্নামেন্ট শুরু করতে উদগ্রীব এবং সেটি হায়দরাবাদে পাকিস্তানের বিপক্ষে।’
৪০ মিনিটের এ আলাপচারিতায় কিউই দলনায়ক উইলিয়ামসন কথা কমই বলেছেন। আজ যখন উদ্বোধনী ম্যাচের টস হবে তখনো তাকে দেখা যাবে না, আজ টস করবেন টম ল্যাথাম।
অধিনায়কদের কথা শেষ। আগামী ৪৫ দিন লড়াই হবে ব্যাট-বলের।