ইংল্যান্ড ব্যাটারদের মারকুটে ব্যাটিংয়ে ৪ উইকেটে হারাল বাংলাদেশ। এদিন ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের অভিজ্ঞ কেউই সুবিধা করতে পারেননি। তবে আগের ম্যাচের মতোই তানজিদ তামিম ও মেহেদি হাসান মিরাজ দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। তাতে লড়াই করার পুঁজি পেয়েছিল টাইগাররা। কিন্তু ইংলিশদের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের সামনে তা যথেষ্ট হয়নি। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ হেরেছে ৪ উইকেটের ব্যবধানে।
৩৭ ওভারে ইংল্যান্ডের লক্ষ্য ১৯৭ রানের। জবাবে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৪ ওভার ১ বলেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইংলিশরা। রান তাড়ায় ইংল্যান্ডের প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন মোস্তাফিজুর রহমান। ডেভিড মালানকে (৪) প্রথম স্লিপে তানজিদ তামিমের ক্যাচ বানান কাটার মাস্টার। তবে জনি বেয়ারস্টো ওসবের ধার ধারেননি। মারকুটে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের বোলারদের কোণঠাসা করে ফেলেন এই ব্যাটার। শেষ ৪ ওভারেই ৫০ রান পার করে ইংল্যান্ড।
অবশেষে পঞ্চম ওভারে বিধ্বংসী বেয়ারস্টোকে সাজঘরে ফেরান মোস্তাফিজই। টাইগার পেসারের দারুণ এক ডেলিভারিতে বেল পড়ে বেয়ারস্টোর। মোস্তাফিজও শুরুতে বুঝতে পারেননি। ২১ বলে ৩৪ রানের ইনিংসে ৬টি বাউন্ডারি আর একটি ছক্কা হাঁকান বেয়ারস্টো।
১৫ বলে ১৭ করা হ্যারি ব্রুককে দুর্দান্ত সুইংয়ে বোল্ড করেন হাসান মাহমুদ। এরপর জস বাটলার দুটো সুযোগ দিয়েছিলেন। উইকেটের পেছনে ক্যাচ ফেলেন মুশফিকুর রহিম, বল কোথায় পড়ছে বুঝতে না পেরে বাউন্ডারিতে মিস করেন তাসকিন আহমেদ। বাটলার জীবন পেয়ে আরও ভয়ংকর হয়ে উঠেন। ১৫ বলে ৫ চার আর এক ছক্কায় ৩০ রানের ঝড় তোলা ইংলিশ ব্যাটারকে অবশেষে ফেরান শরিফুল ইসলাম। ১০৭ রানে ৪ উইকেট হারায় ইংলিশরা। এরপরে লিয়াম লিভিংস্টোনকে থিতু হতে দেননি তাসকিন আহমেদ। তাসকিনের লেংথ বলে মিড অফে নাজমুল হোসেন শান্তর ডাইভিং ক্যাচে আউট হয়েছেন লিভিংস্টোন। তার ব্যাট থেকে এসেছে ১১ বলে ৭ রান।
মঈন আলী উইকেটে এসে দ্রুত গতিতে রান তুলেছেন। দারুণ সব শটে পাত্তায়ই দেননি বোলারদের। শেষ পর্যন্ত ৩৯ বলে ৫৬ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি।
এরপর বাকিটা পথ ক্রিস উইকসকে নিয়ে নিরাপদেই পাড়ি দিয়েছেন জো রুট। এক প্রান্ত আগলে রাখা এই ব্যাটার ৪০ বলে ২৬ রান করে দলকে জিতেয়ে মাঠ ছেড়েছেন।
বাংলাদেশের হয়ে ২৩ রানে ২ উইকেট শিকার করে সেরা বোলার মুস্তাফিজ। তাছাড়া একটি করে উইকেট পেয়েছেন হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ ও নাসুম আহমেদ।
এর আগে বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি কমে আসে ৩৭ ওভারে। বাংলাদেশ তবু অলআউট হওয়ার শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য একটি উইকেট বাঁচিয়ে রেখে কোনোমতে ইনিংস শেষ করেছে টাইগাররা। ৯ উইকেটে ১৮৮ রানে থেমেছে তাদের ইনিংস। তবে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ইংল্যান্ডের লক্ষ্য কিছুটা বেড়েছে। ৩৭ ওভারে তাদের করতে হবে ১৯৭ রান।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই বিশ্বকাপ প্রস্তুতি ম্যাচে বৃষ্টির আগে ৩০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৫৩ রান ছিল বাংলাদেশের। মেহেদি হাসান মিরাজ ৬০ আর তাওহিদ হৃদয় ৫ রান নিয়ে ব্যাটিং করছিলেন। বৃষ্টির পর হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে টাইগাররা।
বিরতির পর খেলা শুরু হতে না হতেই উইকেট বিলিয়ে দেন হৃদয় (১৩ বলে ৫)। মিরাজ ছিলেন শেষ ভরসা হয়ে। অবশেষে ৮৯ বলে ১০ বাউন্ডারিতে ৭৪ করে ডেভিড উইলির বলে বোল্ড হন এই অলরাউন্ডার। এরপর আর কেউ বলার মতো কিছু করতে পারেননি। ১২ বলে ১২ রানে অপরাজিত থাকেন তাসকিন আহমেদ।
তানজিদ হাসান তামিমের মতো টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ফিফটির দেখা পেয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তবে তামিম আর মিরাজ দারুণ ব্যাটিং করলেও টপ আর মিডল অর্ডারের বাকিরা করেছেন হতাশ।
লিটন দাস ৫, নাজমুল হোসেন শান্ত ২, মুশফিকুর রহিম ৮ আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আউট হয়েছেন ১৮ রান করেই।