
তিন দিন ধরে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সূর্যের
আলো পড়ছে। এ আবহে চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞানকে জাগানোর চেষ্টা
করে এখনো সফল হতে পারেননি ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা ইসরো।
গত শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) শুরু হয়
প্রজ্ঞান ও বিক্রমের ঘুম ভাঙানোর চেষ্টা। সেই চেষ্টা আগামী ৬ অক্টোবর পর্যন্ত চালিয়ে
যাবেন বিজ্ঞানীরা।
ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ সংবাদমাধ্যম
টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, চাঁদে যতক্ষণ সূর্যের আলো থাকবে, ততক্ষণ বিক্রম ও
প্রজ্ঞানের জেগে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ইসরো এক চন্দ্রদিবস অর্থাৎ পৃথিবীর হিসাবে
আগামী ১৪ দিন অপেক্ষা করবে।
তিনি বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত কোনো সাড়া
পাওয়া যায়নি। কিন্তু সাড়া যে পাওয়া যাবেই না, তেমন কথা বলতে পারছি না। আমরা চাঁদের
হিসাবে পুরো একটা দিন অপেক্ষা করতে পারি। কারণ, এই সময়ের মধ্যে অনবরত সূর্যের আলো পড়বে
চাঁদের মাটিতে। ফলে, তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। ১৪তম দিনেও সাড়া মিলতে পারে।’
ল্যান্ডার ও রোভারের ঘুম ভাঙাতে পারলে
তা ইসরোর জন্য বড় অর্জন হিসেবে বিবেচিত হবে বলে জানান সোমনাথ।
গত ২৩ আগস্ট চাঁদে অবতরণের পর ব্যাপক
ব্যস্ততায় থাকে বিক্রম ও প্রজ্ঞান। এরপর সূর্যের আলোর অভাবে ২ সেপ্টেম্বর রোভারকে ‘ঘুম’
পাড়িয়ে দেয়া হয়। ৪ সেপ্টেম্বর ল্যান্ডার বিক্রমও একই পথ অনুসরণ করে। সূর্যাস্তের পর
চাঁদের দক্ষিণ মেরুর তাপমাত্রা হু হু করে নেমে যায়। হিমাঙ্কের নিচে প্রায় ২০০ ডিগ্রি
পর্যন্ত পৌঁছে যায়। এখন বিজ্ঞানীদের আশা, দক্ষিণ মেরুতে সামনের কয়েকদিনে তাপমাত্রা
বাড়লে আবার সচল হয়ে উঠতে পারে প্রজ্ঞান ও বিক্রম।
এদিকে ইসরো আগেই জানিয়েছিল, নিজের মিশনের
লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে গিয়ে সফল হয়েছে চন্দ্রযান ৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম। চাঁদের তাপমাত্রা
খতিয়ে দেখেছে যন্ত্রটি। মাপা হয়েছে চাঁদের মাটিতে থাকা প্লাজমার ঘনত্ব মেপছে।
ইসরো জানায়, ঘুমাতে যাওয়ার আগে সফলভাবে
‘হপ এক্সপেরিমেন্ট’ সম্পন্ন করেছে বিক্রম। অর্থাৎ, চাঁদের মাটি থেকে লাফিয়ে উঠে দ্বিতীয়বারের
জন্য সফলভাবে সফট ল্যান্ডিং বা অবতরণ করেছে।
প্রজ্ঞানও অনেক ছোটাছুটি করেছে। রোভারটি
চাঁদে অক্সিজেন, সালফারের মতো বিভিন্ন পদার্থ থাকার কথা জানিয়েছে। প্রজ্ঞানের সঙ্গে
রয়েছে একাধিক স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরা। সেই ক্যামেরা দিয়েই চাঁদের মাটির ছবি পাঠিয়েছে প্রজ্ঞান।
বর্তমানে পরিস্থিতিতে চন্দ্রযানের
‘ঘুম’ ভাঙিয়ে তার দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার চেষ্টায় রয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে সেই সম্ভাবনা
অতি ক্ষীণ। বিক্রম ও প্রজ্ঞানকে জাগানো না গেলে চাঁদের মাটিতেই তারা চিরকাল থেকে যাবে।