মেঘনায় বালি উত্তোলন নদীপারে ভাঙনের শঙ্কা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে মেঘনা নদীতে বালুমহালের নির্ধারিত সীমানার বাইরে থেকে ড্রেজার দিয়ে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। ২০-২৫টি খননযন্ত্র দিয়ে বালি উত্তোলনে নদীতীরবর্তী ফসলি জমিসহ কয়েকটি গ্রাম ভাঙনের কবলে পড়েছে। এভাবে বালি উত্তোলন অব্যাহত থাকলে গ্রামসহ ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন নদীপারের বাসিন্দারা।

গত ৭ আগস্ট পশ্চিম কেদেরখোলা বালুমহালের সঠিক সীমানা নির্ধারণসহ অপরিকল্পিত ও নিয়মবহির্ভূত বালি উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন বীরগাঁও ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার শফিকুল ইসলাম। কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কেদেরখোলা পশ্চিম বালুমহালের আয়তন ২০ একর। গত ১৫ জুলাই করা বিআইডব্লিউটিএর হাউড্রোগ্রাফিক জরিপের নিয়মকে তোয়াক্কা না করে যেখানে দুই-তিনটি ড্রেজার চালানোর অনুমতি আছে, সেখানে ১০০-১২০ একর জায়গায় ৮০-৯০ ফুট গভীর থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় ২০-২৫টি ড্রেজার দিয়ে গড়ে ১৫-২০ লাখ ঘনফুট বালি তোলা হচ্ছে। এভাবে উত্তোলন অব্যাহত থাকলে উপজেলার শিবপুর, দাসকান্দি, নজরদৌলত, ছয়ঘরহাটি হয়ে কেদেরখোলা পর্যন্ত গ্রামের ফসলি জমি ও বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

নবীনগর উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কবির আহমেদ ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী সরকার বলেন, ‘বীরগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হোসেন সরকার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন ও বীরগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, সাবেক ইউপি সদস্য ইউসুফ মিয়া ও বিএনপি কর্মী হাবিব মিয়ার নেতৃত্ব দিয়ে চলছে বালি উত্তোলন।’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সর্বোচ্চ দরদাতা হওয়ায় গত ১৩ জুলাই মো. বরকত উল্লাহ সাগরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জাহানারা কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড সাপ্লায়ার্সকে আড়াই কোটি টাকায় বাংলা সনের ৩০ চৈত্র পর্যন্ত কেদেরখোলা বালুমহাল ইজারা দেয়া হয়। প্রতিদিন সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কেদেরখোলা থেকে বালি উত্তোলনে ইজারা পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ১০টি ড্রেজার ব্যবহার করার শর্ত দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর ফরহাদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ইজারার নির্ধারিত জায়গার বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এর ব্যতিক্রম হলে আমরা ব্যবস্থা নেব। তারা ১০টির বেশি ড্রেজার ব্যবহার করতে পারবে না। ১০টির বেশি ড্রেজার ব্যবহার করলে আমরা সেগুলো জব্দ করব।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন