
বর্তমানে সরকারি কেনাকাটায় সর্বনিম্ন
দরদাতাকে টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ দেয়া হয়। কিন্তু ভালো মানের দরদাতারা থাকতে নিম্ন দরদাতারাই
কেনাকাটার কাজ বাগিয়ে নেয়। এতে কাজের মান নিয়ে যেমন ওঠে প্রশ্ন তেমনি কম মূল্যে দরপত্র
আহ্বান করে আবারো ব্যয় বাড়াতে হয়। কিন্তু উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সর্বনিম্ন দরদাতাকে
কাজ না দিয়ে ভিন্ন পদ্ধতিতে কাজ দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, কোরিয়াসহ বেশ কয়েকটি
দেশ যেসব পদ্ধতি ব্যবহার করে তা অনুসরণ করতে পারে বাংলাদেশ। এতে সর্বনিম্ন দর দেয়ার
প্রবণতা কমার পাশাপাশি কাজের মানও বাড়বে।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ
উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন । সেমিনারে
সভাপতিত্ব করেন সংস্থার মহাপরিচালক ড.বিনায়ক সেন।
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের
অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফাহাদ খলিল, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক
ড. আব্দুস সাত্তার মণ্ডলসহ বিআইডিএসের গবেষকেরা।
অধ্যাপক ফাহাদ খলিল বলেন, সর্বনিম্ন
দরদাতার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রে এবং যুক্তরাজ্যেও অনেক আলোচনা হয়েছে একসময়। কম দরদাতাই
যে ভালো বিষয়টি এমন নয়। আবার অনেক প্রতিযোগী থাকাটাও কোনো কোনো ক্ষেত্রে সঠিক প্রতিষ্ঠান
বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অন্তরায় হতে পারে। তাই চিলি, চীন, ইতালি, জাপান, পেরু, সুইজারল্যান্ড
এবং তাইওয়ানসহ কয়েকটি দেশে একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ের প্রতিযোগীরা অটোমেটিক বাতিল হয়ে
যায়। প্রতিযোগী কমানোর জন্য এট্রি ফি, প্রাথমিক পর্যালোচনা, ডিপোজিটসহ বিভিন্ন ধরণের
পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি বর্তমানে পদ্ধতির সঙ্গে বেমানান মনে হলেও প্রতিযোগী
কমিয়ে রাখাটা একটি কৌশল।
এ সময় ড. বিনায়ক সেন বলেন, বাংলাদেশে
তিন বছরের কাজ ১৩ বছর লেগে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই দেখা যায়। সর্বনিম্ন দরদাতা কাজ পাওয়ায়
কারণে এমনটি ঘটে বলে আশঙ্কা করেন তিনি। নতুন প্রজন্মের কিছু ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত ব্যাংক
থেকে বেশি হারে ডিপোজিট সুদ দিয়ে থাকে। এটা সর্বনিম্ন বিডারের মতো কোনো বিষয় কিনা সে
প্রশ্নও রাখেন তিনি।
ড. আব্দুস সাত্তার মণ্ডল বলেন, আইসিটি
খাতে এখন আর ভালো বিডার পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ সেখানে সর্বনিম্ন দরদাতারা সব কাজ পাচ্ছে।
রাজনৈতিক হস্তক্ষেপও একটি কারণ। তবে অনলাইন টেন্ডার চালু হওয়ায় কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে
বলে মনে করছেন তিনি।
প্রশ্নোত্তর পর্বে অধ্যাপক ফাহাদ খলিল বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে নিউট্রাল বিশেষজ্ঞ দিয়ে বিডারের সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়। প্রতিযোগী কম হলে দুর্নীতি এবং অসুস্থ প্রতিযোগিতার হারও কমে আসে বলে জানান তিনি।