কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের ২৭ জন সিনিয়র রাজনৈতিক নেতাকে গ্র্যাজুয়েশন সার্টিফিকেট দিয়েছে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল। সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে ইউএসএআইডির স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ প্রকল্পের আওতায় নেতৃত্ব এবং রাজনৈতিক দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত ফেলোশিপ প্রোগ্রাম সফলভাবে শেষ করার জন্য তাদের এই সার্টিফিকেট দেয়া হয়।
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের সিনিয়র লিডারস ফেলোশিপ প্রোগ্রামের এই ফেলোশিপে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশের তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জাতীয় পার্টির সিনিয়র নেতারা।
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল জানায়, কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের সিনিয়র পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতাদের নেতৃত্ব এবং রাজনৈতিক দক্ষতা বিকাশের লক্ষ্যে উচ্চমানের এই কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। নিজ এলাকায় ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং তরুণ রাজনীতিকদের সঙ্গে সম্পর্কন্নোয়নে এ ফেলোশিপ সহায়তা করে থাকে।
এ গ্রাজুয়েশন কর্মসূচির অষ্টম ক্লাসের গ্রাজুয়েশন করা ফেলোরা গত জুলাই থেকে ‘গণতন্ত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা, দলীয় অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র, ক্যাম্পেইন ম্যানেজমেন্ট, ভোট দান প্রক্রিয়া এবং রাজনীতিতে নারীদের অন্তর্ভুক্তি’সহ বিভিন্ন বিষয়ে নিবিড় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন এবং মাঠ পর্যায়ে কাজ করেছেন।
কর্মসূচির সমাপনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন– বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক এবং সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান এবং ইউএসএআইডির রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বিষয়ক উপদেষ্টা লুবাইন চৌধুরী মাসুম। এ সময় ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের চিফ অব পার্টি ডানা এল ওল্ডস সিনিয়র ফেলোদের মাঝে সার্টিফিকেট বিতরণ করেন।
গ্র্যাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে অনুষ্ঠানে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তনের আশা করি। বাংলাদেশের রাজনীতি কতই না ভালো হতে পারতো, যদি পরস্পরের মতকে আমরা শ্রদ্ধা করতাম এবং পরস্পরকে শত্রু হিসেবে না দেখে শুধু প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখতাম।’
তিনি বলে, ‘আমরা ভিন্নমত ধারণ করলেও, ভিন্নদল করলেও, আমাদের উদ্দেশ্য একই।’ দলগুলোর মধ্যে কমন বিষয়গুলো নিয়ে একসঙ্গে কাজ করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।
ওয়াসিকা আয়শা খান তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের মধ্যে ভিন্নতা থাকলেও দেশকে এগিয়ে নেওয়ার স্বার্থে ক্ষতিকর বিষয়গুলি একযোগে পরিহার করতে হবে।’ রাজনীতির সঙ্গে অন্য পেশার তুলনা হয় না উল্লেখ করে তিনি নারী সহকর্মীদের প্রতি ফেলোদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। অন্যান্য দলের চেয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে অধিক সংখ্যক নারী প্রতিনিধিত্ব রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
মার্কিন জনগণের অর্থে ইউএসএআইডি পরিচালিত হয় জানিয়ে সংস্থাটির রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বিষয়ক উপদেষ্টা লুবাইন চৌধুরী মাসুম বলেন, ‘তরুণ নেতাদের ফেলোশিপ প্রোগ্রামের সাফল্যের পর ২০১৯ সাল থেকে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল সিনিয়র নেতাদের জন্য ফেলোশিপ অনুষ্ঠান চালু করে। এ পর্যন্ত প্রায় দুই শতাধিক সিনিয়র নেতারা এই গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন।’
সিনিয়র ফেলোদের অভিনন্দন জানিয়ে অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্যে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের এসপিএল প্রকল্পের চিফ অব পার্টি ডানা এল ওল্ডস বলেন, ‘অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক নেতাদের পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ তাকে অনুপ্রাণিত করেছে। এখান থেকে নেওয়া শিক্ষা ফেলোদের নিজ নিজ এলাকায় তরুণ নেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব রয়েছে। এর মাধ্যমে যদি নেতৃত্বে সামান্যতমও গুণগত পরিবর্তণ আসে, সেটাই আমাদের বড় অর্জন হবে।’
সমাপনী অনুষ্ঠানে তিন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, জয়পুরহাট জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম আজিজ এবং জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল আহসান।