জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৪২ মিনিটে জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমানটি অবতরণ করে। প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার বণিক বার্তাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
২৩ সেপ্টেম্বর সকাল পর্যন্ত নিউইয়র্কে অবস্থান করবেন প্রধানমন্ত্রী। গতকাল ১৮ সেপ্টেম্বর ‘খাদ্যের জন্য চিন্তা—খাদ্য সরবরাহ চেইন উদ্ভাবনের জন্য এসডিজিকে ত্বরান্বিত করতে সহযোগিতা’ শীর্ষক একটি উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে তার মূল বক্তব্য দেয়ার কথা। ইউএনআইডিও ও ডেলয়েটের পক্ষ থেকে নিউইয়র্কের রকফেলার সেন্টারে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। একই দিন ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিল চেম্বারে ‘এসডিজি সামিট-লিডার্স ডায়ালগ ৪’ শীর্ষক আরেকটি সম্মেলনে ভাষণ দেয়ার কথা প্রধানমন্ত্রীর। সন্ধ্যায় তিনি জাতিসংঘের ২০২৩ সালের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) শীর্ষক সম্মেলন উপলক্ষে একটি উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিগত নৈশভোজে যোগ দিতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী ১৯ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের উচ্চপর্যায়ের প্রথম দিনের সাধারণ বিতর্কে অংশ নেবেন। যোগ দেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নৈশভোজেও। একই দিন জাতিসংঘ সদর দপ্তরে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় কাউন্সিল ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সভাপতি আয়োজিত ‘টুওয়ার্ডস আ ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল আর্কিটেকচার’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশ, অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডা, ভুটান, চীন, মালয়েশিয়া, চ্যাথাম হাউজ ও সূচনা ফাউন্ডেশনের সহ-আয়োজিত চিকিৎসা পরিষেবাভিত্তিক কমিউনিটি ক্লিনিকের একটি উচ্চপর্যায়ের সাইড ইভেন্টেও শেখ হাসিনা যোগ দেবেন।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে ২০ সেপ্টেম্বর উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন (এফএফডি) বিষয়ে ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিল চেম্বারে উচ্চপর্যায়ের বিতর্কে প্রধান বক্তা হিসেবে ভাষণ দেবেন বাংলাদেশের সরকারপ্রধান। একই দিন তিনি জাতিসংঘ মহাসচিবের ক্লাইমেট অ্যাম্বিশন সামিটে যোগ দেবেন। অংশ নেবেন মহামারী প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়াসংক্রান্ত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে। যোগ দেবেন নারী নেতাদের সাধারণ পরিষদের বার্ষিক সভায়। এছাড়া ন্যাশনাল জুরিসডিকশনের বাইরের এলাকার সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য আইনের ওপর জাতিসংঘের কনভেনশনে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ, কানাডা, গাম্বিয়া, মালয়েশিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র আয়োজিত উচ্চপর্যায়ের সাইড ইভেন্টে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি ‘সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে সৃষ্ট হুমকি মোকাবেলা’ শীর্ষক ব্রেকফাস্ট সামিট ও ইউনিভার্সাল হেলথ কাভারেজ নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সভায় যোগ দেবেন। ২২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় বেলা ১টা-২টার মধ্যে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। নিউইয়র্কে অবস্থানকালে বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় ও সৌজন্যমূলক বৈঠকেও অংশ নেবেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিব, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার, জাতিসংঘ মহাসচিবের জেনোসাইড উপদেষ্টা, নবনির্বাচিত ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) মহাপরিচালক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক ও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন ও শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের সঙ্গেও জাতিসংঘ সদর দপ্তরের দ্বিপক্ষীয় বুথে বৈঠক করবেন শেখ হাসিনা।
