
কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করতে নেমে লংকানরা খেলতে পেরেছে কেবল ৯২ বল। এই সময়ে সবকটি উইকেট হারিয়ে তারা স্কোরবোর্ডে তুলতে পেরেছে ৫০ রান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১৭ রান এসেছে কুশল মেন্ডিসের ব্যাট থেকে। দলের ৯ ব্যাটারই এদিন দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। ভারতের হয়ে ২১ রানে ৬ উইকেট শিকার করে সেরা বোলার মোহাম্মদ সিরাজ। ৫১ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬ ওভার ১ বলেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ভারত।
এ দিন কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে আজ টস জিতেছিলেন শ্রীলংকার অধিনায়ক দাসুন শানাকা। কে জানতো, প্রথমে ব্যাট করতে নেমে এমন হাল হবে! প্রথম ওভারে আঘাত হানেন ভারতীয় পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ। ইনিংসের তৃতীয় বলে তাকে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দেন কুশল পেরেরা (২ বলে ০)।
ইনিংসের চতুর্থ ওভারে শুরু হয় সিরাজের ঝড়। নিজের প্রথম ওভার মেইডেন দিয়ে শুরু করেছিলেন সিরাজ। পরের ওভারে এসেই তিনি দেখিয়েছেন ভয়ংকর রূপ। একে একে সাজঘরে ফিরিয়েছেন লংকান ৪ ব্যাটারকে। ওই ওভারের প্রথম বলে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন পাতুম নিশাঙ্কা, কিন্তু যেভাবে চেয়েছিলেন সেভাবে হয়নি। বল গেছে পয়েন্টে। ডানদিকে ড্রাইভ দিয়ে ক্যাচ নিয়েছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা ফিল্ডার জাদেজা। ১৯ বলের মধ্যে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে শ্রীলংকা। সিরাজের পরের বলে ডট যায়।
তার তৃতীয় বলে সামারাবিক্রমার ইনসাইড-এজ ফাঁকি দিয়ে আঘাত করেছিল প্যাডে। এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরলেন সামারাবিক্রমা। ৮ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে চরম বিপদে শ্রীলংকা! অফ স্টাম্পের বাইরে ফুললেংথের চতুর্থ বল করলেন সিরাজ। ড্রাইভ করতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ তুলেছেন আসালাঙ্কা। এতে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি হয় সিরাজের। কিন্তু হ্যাটটট্রিক বলে পাঞ্চ করেছিলেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। সেটি গিয়েছিল লং অনে। বোলিংয়ের ফলো থ্রু থেকে নিজেই ছুটেছিলেন সিরাজ। সঙ্গে অবশ্য গিয়েছিলেন কিষানও। তবে শেষ পর্যন্ত বাউন্ডারি আটকাতে পারেননি সিরাজ। হ্যাটট্রিক তো পাননি। ওই ওভারে ৪ উইকেট নেন সিরাজ।
নিজের পরের ওভারে (লংকান ইনিংসের ষষ্ঠ) চতুর্থ বলে আরো এক শিকার সিরাজের। উড়িয়ে দিলেন লংকান অধিনায়ক দাসুন শানাকার অফস্টাম্প। সিরাজ ৪ রানেই পূরণ করে নেন ফাইফার।বলের হিসেবে এটি চামিন্দা ভাসের সঙ্গে যৌথভাবে দ্রুততম পাঁচ উইকেট নেয়ার রেকর্ড। ২০০৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে তার সমান ১৬ বলে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন সাবেক লংকান পেসার।
ধাক্কা সামাল দেয়ার চেষ্টায় কিছুক্ষণ আগলে থাকার চেষ্টা করেছেন কুশল মেন্ডিস। তাতে ভেল্লালাগের সঙ্গে মিলে ২১ রান যোগ করেছেন। কিন্তু শক্ত ছিল না সেই প্রতিরোধ। ৩৩ রানে মেন্ডিসকে বোল্ড করে সেই প্রতিরোধটাও ভেঙে দিয়েছেন সিরাজ। পরের ওভারে ভেল্লালাগেকে পান্ডিয়া ফিরিয়ে দিলে এটা নিশ্চিত হয়ে যায় যে শেষটা বেশি দূর গড়াচ্ছে না। শেষটা করেন হার্দিক পান্ডিয়া। তার দুই স্পেলে ৬ বলের মধ্যে শেষ তিন ব্যাটার আউট। ১২তম ওভারে দুনিথ ভেল্লালাগেকে লোকেশ রাহুলের ক্যাচ বানান তিনি। ১৬তম ওভারে প্রথম দুই বলে প্রমোদ মাদুশান ও মাথিশা পাথিরানাকে ফিরিয়ে ভারতকে গুটিয়ে দেন হার্দিক।