মৌসুমের সাত মাসে ভারতে চিনি উৎপাদন ৮ শতাংশ কমেছে

বণিক বার্তা ডেস্ক

ভারতের কলকাতায় একটি পাইকারি বাজারে চিনির বস্তা ট্রাকে তুলছেন শ্রমিকরা ছবি: রয়টার্স

চলতি বিপণন মৌসুমের প্রথম সাত মাসে ভারতে চিনি উৎপাদন ৮ শতাংশ কমেছে। উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ২২ লাখ ৪০ হাজার টনে। গত বছরের একই সময় উৎপাদন হয়েছিল ৩ কোটি ৫১ লাখ ৯০ হাজার টন। শিল্পসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে। খবর দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন। 

দেশটির বিভিন্ন প্রদেশে গত মাসে প্রায় ২০টি মিল তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। মে মাস পর্যন্ত চালু থাকা মিলের সংখ্যা ছিল ১৭। এর মধ্যে ১০টিই তামিলনাড়ুর। গত বছরের একই সময় চালু থাকা মিলের সংখ্যা ছিল ৪৫।

এদিকে মোট উৎপাদন কমলেও উত্তর প্রদেশে উৎপাদন ৩ শতাংশ বেড়েছে। উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ২ লাখ টনে। গত বছরের এ সময় মহারাষ্ট্রে উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ৩৬ লাখ ৯০ হাজার টন চিনি। চলতি বছর তা কমে ১ কোটি ৫ লাখ ৩০ হাজার টনে নেমেছে। ‍কর্ণাটকে উৎপাদন ৫৮ লাখ ২০ হাজার টন থেকে কমে ৫৫ লাখ টনে নেমেছে। মহারাষ্ট্র, উত্তর প্রদেশ ও কর্ণাটক ভারতের শীর্ষ তিন চিনি উৎপাদক প্রদেশ। 

অন্যদিকে তামিলনাড়ুতে সাত মাসে উৎপাদন বেড়েছে ২৭ দশমিক ২ শতাংশ। সেখানে মোট উৎপাদন হয়েছে ১১ লাখ ৭০ হাজার টন। গত বছরের একই সময় যা ছিল ৯ লাখ ২০ হাজার টন। বিহারে উৎপাদন লক্ষণীয় মাত্রায় বেড়েছে। সাত মাসে প্রদেশটিতে উৎপাদন হয়েছে ৬ লাখ ৩০ হাজার টন। গত বছরের একই সময় যা ছিল ৪ লাখ ৬০ হাজার টন। সে হিসাবে উৎপাদন বেড়েছে ৩৭ দশমিক ২ শতাংশ। হারিয়ানা পাঞ্জাব, উত্তরখণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানাসহ অন্যান্য প্রদেশে উৎপাদন গত বছরের চেয়ে বেড়েছে।

ইন্ডিয়ান সুগার মিলস অ্যাসোসিয়েশন এপ্রিলে চিনি উৎপাদন পূর্বাভাস কমিয়ে ৩ কোটি ২৮ লাখ টন নির্ধারণ করে। এর আগে ৩ কোটি ৪০ লাখ টন উৎপাদনের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল। মূলত মহারাষ্ট্র ও উত্তর প্রদেশে উৎপাদন কমার আশঙ্কায় পূর্বাভাস কমানো হয়। বার্ষিক চিনি ব্যবহারের পরিমাণ ধরা হয়েছে ২ কোটি ৭৫ লাখ টন। ২০২১-২২ মৌসুমে দেশটি উৎপাদন করেছিল ৩ কোটি ৫৭ লাখ ৬০ হাজার টন চিনি।

ভারতের কৃষকরা বর্তমানে বৃষ্টির অপেক্ষায় আছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, বৃষ্টির পরিমাণ বাড়লে আগামী মৌসুমে আখের আবাদ বাড়বে। পাশাপাশি বাড়বে উৎপাদনও। বিষয়টি চিনি উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করবে।

এল নিনো আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে বিশ্বজুড়ে চিনির সরবরাহ হুমকির মুখে পড়ছে বলে মনে করছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। ফলে এফএও সূচকে অন্যান্য পণ্যের দাম কমলেও চিনির দাম বেড়েছে। এ নিয়ে টানা পাঁচ মাসের মতো পণ্যটির বৈশ্বিক দাম বাড়ল। গত মাসে চিনির মূল্যসূচক বেড়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।

তবে চিনির বাজারের জন্য স্বস্তির খবর ব্রাজিলের আবহাওয়া পরিস্থিতি ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের নিম্নমুখী দাম। এক মাসের ব্যবধানে বাড়লেও রেকর্ড সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে পণ্যটির দাম কমে এসেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন