অর্থনীতিতে শ্লথগতির আশঙ্কায় কমেছে জ্বালানি তেলের দাম

বণিক বার্তা ডেস্ক

বিশ্ব অর্থনীতিতে শ্লথগতির কারণে কমছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে গতকাল পণ্যটির দাম আরো এক দফা কমেছে। এ পরিস্থিতিতে সৌদি আরবের উত্তোলন কমিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারছে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর রয়টার্স। 

আইসিই ফিউচারস এক্সচেঞ্জে গতকাল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম ২১ সেন্ট বা দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য স্থির হয়েছে ৭৬ ডলার ৭৪ সেন্টে। অন্যদিকে নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দামও ২১ সেন্ট বা দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। প্রতি ব্যারেলে মূল্য স্থির হয়েছে ৭২ ডলার ৩২ সেন্টে।

এর আগের দিন সৌদি আরব উত্তোলন কমানোর ঘোষণা দেয়ায় উভয় বাজার আদর্শের দাম ১ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি তেলের ক্রমবর্ধমান মজুদ ও চীনের রফতানি উপাত্ত মূল্যবৃদ্ধির ধারাকে আটকে দিয়েছে।

বিশ্লেষকরা জানান, জ্বালানি তেলের দাম ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু আবারো তাতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। সংকুচিত সরবরাহের বিপরীতে দুর্বল চাহিদার কারণে বছরের শুরু থেকেই জ্বালানি তেলের দামে উত্থান-পতন অব্যাহত আছে। ব্রেন্টের দাম এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলার পর্যন্ত উঠেছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি তেলের মজুদ প্রত্যাশার চেয়ে বেশি বেড়েছে। এতে শীর্ষ ব্যবহারকারী দেশটিতে পণ্যটির চাহিদা কম। বিশ্লেষকরা জানান, দেশটির পরিবহন খাতে জ্বালানি তেলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু মজুদ বাড়ার খবরে সে সম্ভাবনায় ভাটা পড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে চলতি সপ্তাহে গ্যাসোলিনের মজুদ ২৭ লাখ ব্যারেল করে বেড়েছে। মার্কিন এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানায়, ৮ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেলের প্রত্যাশা ছিল বিশ্লেষকদের। চলতি সপ্তাহে ডিসটিলেটের মজুদ প্রায় ৫১ লাখ ব্যারেল করে বেড়েছে। ১৩ লাখ ব্যারেল করে বাড়ার প্রত্যাশা ছিল বিশ্লেষকদের।

যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি মার্চের রেকর্ড সর্বোচ্চ পর্যায়ের কাছাকাছি। আগামী মাসে রফতানি আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ সৌদি আরবের উত্তোলন কমিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত। এদিকে রফতানি বাড়ার কারণে দেশটির মজুদও কমছে ক্রমবর্ধমান হারে। এরই মধ্যে মজুদ ইতিহাসের সর্বনিম্নে অবস্থান করছে।

জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর নেতৃস্থানীয় সৌদি আরব। সম্প্রতি দেশটি অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন দৈনিক ১০ লাখ ব্যারেল বা ১০ শতাংশ করে কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে হিসাবে দৈনিক উত্তোলন দাঁড়াবে ৯০ লাখ ব্যারেলে। দেশটি জ্বালানি তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে এ সিদ্ধান্ত অব্যাহত রাখবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন