কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বৈশ্বিক সম্মেলন করছে যুক্তরাজ্য

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি: বিবিসি

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে বৈশ্বিক সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। আগামী শরতে প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে মানবজাতির ওপর আসা সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে হবে পর্যালোচনা। যদিও সম্মেলনে ঠিক কারা উপস্থিত থাকবেন এখন পর্যন্ত তা জানা যায়নি। প্রধান দেশগুলো থেকে প্রতিনিধিরা যুক্ত হবেন বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। থাকবেন শ্রেষ্ঠ প্রযুক্তি কোম্পানি ও নেতৃত্বদানকারী গবেষকরা। খবর বিবিসি।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক জানান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে মানুষের উপকারিতা নিশ্চিত করতে নেতৃত্ব দেবে যুক্তরাজ্য। তার ভাষায়, ‘আমাদের জীবনকে বদলে দেয়ার সম্ভাবনা ‌কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রয়েছে। তবে প্রযুক্তির অগ্রগতি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। নিরাপদ ব্যবহারের উপায় আনতে হবে সামনে।’ 

সম্মেলনে উপস্থিত ব্যক্তিরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে তাদের অবস্থান ও আগামীতে সম্ভাব্য ঝুঁকি তুলে ধরবেন। আলোচনার জন্য যুক্তরাজ্যই সবচেয়ে যৌক্তিক কেন্দ্র বলে মনে করেন সুনাক। প্রযুক্তি কোম্পানির শীর্ষ ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে আলোচনা করছেন তিনি। প্রযুক্তি খাতে যুক্তরাজ্যের কর্মসংস্থান ৫০ হাজারের বেশি এবং বাজার ৩৭০ কোটি পাউন্ডের বেশি। অবশ্য তার পরও অনেকে যুক্তরাজ্যের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। 

চ্যাথাম হাউজ’স ডিজিটাল সোসাইটি ইনিশিয়েটিভের গবেষক ইয়াসমিন আফিনা বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের সিদ্ধান্ত অতি উচ্চাকাঙ্ক্ষী। কারণ সরকার পরিচালনা ও নীতিমালা পর্যালোচনা করার মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। যুক্তরাজ্যের বরং বর্তমানে গবেষণা ও প্রযুক্তির অগ্রগতি নিয়ে কাজ করা উচিত।’

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে মূলত চ্যাটজিপিটির উত্থানে। গত নভেম্বরে আবিষ্কৃত হয় চ্যাটবটটি। কথোপকথনের আদলে জবাব দেয় জিজ্ঞাসার। ফলে প্রশ্ন জেগেছে বিস্ময়কর আবিষ্কারের সক্ষমতা নিয়ে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গডফাদার হিসেবে বিবেচিত জিওফ্রে হিন্টন ও অধ্যাপক ইশুয়া বেনগিও সংকেত দিয়েছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানবজাতির জন্য বড় ধরনের ক্ষতি বয়ে নিয়ে আসতে পারে। 

অন্যদিকে মে মাসে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কাজ করা প্রতিষ্ঠানের নেতারা সতর্ক করে দেন, প্রযুক্তির অবিবেচনাপ্রসূত অগ্রগতি মানবজাতিকে নির্মূল করে দেয়ার সক্ষমতা রাখে। কারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণ নতুন ধারার রাসায়নিক অস্ত্র বানানো সম্ভব। এমন সতর্কতার পর আরো প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাজ করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আইন প্রণয়ন করা নিয়ে। তবে তার জন্য অন্তত দুই-আড়াই বছর সময় প্রয়োজন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান মারগ্রেথ ভেস্তাগার বলেছেন, ‘নীতিমালা প্রণয়নে দেরি হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে বিশেষ নীতিমালার অধীনে আনতে তৎপর রয়েছে চীনও। অ্যালগরিদম ব্যবহারে কোম্পানিকে ব্যবহারকারীদের জানিয়ে দেয়া উচিত। 

যুক্তরাজ্য সরকারের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কাউন্সিলের সদস্য মার্ক ওয়ার্নার দাবি করেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কিছু বেশি অগ্রসর রূপকে বন্ধ করা যেতে পারে। কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের ভিজিটিং ফেলো ম্যাট শাউনেসি দাবি করেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চীন দুটি বড় বাজার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জন্য। উভয় পক্ষ থেকেই নীতিমালা প্রণয়নের ব্যাপারে জোর দেয়া হচ্ছে। তাদের রেখে এককভাবে যুক্তরাজ্যের নেতৃত্ব দেয়ার প্রচেষ্টা ফলপ্রসূ হবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন