ছয় দফা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

বিদ্যুতের কষ্ট ১০-১৫ দিন পর থাকবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবসে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন ছবি: পিআইডি

আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে চলমান বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘‌আমরা মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। সেই বিদ্যুতের এখন সমস্যা হচ্ছে, লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছি, আমি জানি মানুষের কষ্ট হচ্ছে, মানুষের কষ্টটা আমি উপলব্ধি করতে পারি। আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি, এই দুই-এক দিনের মধ্যে আরো ৫০০ মেগাওয়াট যুক্ত হবে। এরপর ১০-১৫ দিনের মধ্যে আরো যুক্ত হবে, তারপরে আর কষ্ট থাকবে না। বাংলাদেশে ৪১ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা হবে, এটা তো আমরা ভাবতে পারি না। তারপর বৃষ্টি নেই, মানুষের কষ্ট হচ্ছে আমরা সেটা জানি। তার পরও আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে মানুষের কষ্ট লাঘব করা যায়।’

গতকাল ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‌আমরা আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছি। আমরা বাজেট দিয়েছি, জ্ঞানী, গুণী, বুদ্ধিজীবীরা বলে, এই বাজেট আওয়ামী লীগ কখনো কার্যকর করতে পারবে না। আমি স্পষ্ট করতে চাই, আমরা কতটুকু করতে পারব, তা বুঝে-শুনে বাজেট দিয়েছি। আমরা যা দিয়েছি, আমরা তা করতে পারব।’

তিনি বলেন, ‘‌যে কষ্টটা মানুষের হচ্ছে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি। আর কিছু লোক আছে, সুযোগটা নেয়, মজুদ করে রাখে। পেঁয়াজ, পেঁয়াজের দাম হু হু করে বেড়ে যায়, যেই পেঁয়াজ আমদানি করব, অমনি দাম কমে গেল। যারা মজুদ করে রেখেছিল, তারা যদি এই অপকর্মটা না করত এ পেঁয়াজ দিয়েই আমাদের হতো।’

দেশী-বিদেশী চাপে বাঙালি নতি স্বীকার করে না বলেও জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘‌আমাদের সবসময় এ কথা মনে রাখতে হবে যে এই দেশ আমাদের। এই দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেব না। দেশী-বিদেশী যতই চাপ আসুক না কেন, ওই চাপের কাছে বাঙালি নতি স্বীকার করে না। দেশের মানুষের ভোটের অধিকার আমরাই সুরক্ষিত করব। আমরাই এ দেশে আন্দোলন-সংগ্রাম করে গণতন্ত্র এনেছি। এই গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা আছে বলেই আজ বাংলাদেশে আর্থসামাজিক উন্নতি হয়েছে। আমাদের খাদ্যের কোনো অভাব নেই, খাদ্যের অভাব হবেও না। বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‌আজ আন্দোলন করবে, সংগ্রাম করবে, আর আমাদের উৎখাত করবে। একদিকে ভালো হয়েছে এখন যদি জ্বালাও-পোড়াও করে, যদি অগ্নিসন্ত্রাস করে, এখন যদি মানুষ খুন করে, তাহলে আমেরিকার ভিসা পাবে না। যাদের কথায় নাচে তারাই ভিসা দেবে না, আমাদের কিছু করার নেই। ওটা নিয়ে আমাদের চিন্তার কিছু নেই। আন্দোলন করবে করতে থাকুক, আমি বলি, যতই আন্দোলন করে, করুক।’ 

এদিন জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘‌ঐতিহাসিক ছয় দফার মধ্য দিয়ে দেশের মানুষের ভেতর স্বাধীনতার উন্মেষ জাগ্রত হয়। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। এখন বাংলাদেশের যে অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা তা অব্যাহত থাকবে।’

জাতীয় সংসদে এক অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা এসব কথা বলেন। ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে জাতীয় সংসদে ওই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, ‌‘‌১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশ এগোতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু স্বল্পোন্নত দেশ রেখে গিয়েছিলেন। আবার ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশ পরিচালনা করে দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দেয়। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, “‍কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না।’’ বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। এটাই বাস্তবতা। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের মাথা উঁচু থাকবে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ, এটা অঙ্গীকার।’

অন্যদের মধ্যে সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, সরকারি দলের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য  কাজী ফিরোজ রশীদ প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন