শীর্ষ কোম্পানিগুলোর পরিচালক পর্যায়ে ৩০% নারী চায় জাপান

বণিক বার্তা ডেস্ক

গত বছর গ্লোভাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্টে ১৪৬ দেশের মধ্যে জাপানের অবস্থান ছিল ১১৬ ছবি: এপি

উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে কর্মক্ষেত্রে বৈচিত্র্য আনার কথা ভাবছে জাপান। ২০৩০ সালের মধ্যে শীর্ষ সংস্থাগুলোর পরিচালক পদে অন্তত ৩০ শতাংশ নারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়ার খসড়া পরিকল্পনা করছে দেশটির জেন্ডার ইকুয়ালিটি ব্যুরো। সম্প্রতি প্রকাশিত সরকারি নথি থেকে জানা গেছে, টোকিও স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাইম মার্কেট ইনডেক্সের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে এ নিয়ম কার্যকর করার জন্য সরকার চাপ দেবে। খবর ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে।

নীতিমালার প্রথম পদক্ষেপটি শুরু হবে ২০২৫ সালের মধ্যে তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে অন্তত একজন নারী রাখার মধ্য দিয়ে। জাপান তার বার্ধক্যপ্রধান ও ক্রমহ্রাসমান জনসংখ্যার ফলে সৃষ্ট ঘাটতি মেটাতে কর্মক্ষেত্রে আরো বেশি নারীকে সক্রিয় করতে চাচ্ছে। যদিও কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষের এ বৈচিত্র্য আনার জন্য দেশটিকে বড় ধরনের সংগ্রাম করতে হচ্ছে।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ২০২২ সালের গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্টে ১৪৬টি দেশের মধ্যে জাপানের অবস্থান ছিল ১১৬তম, যা উন্নত অর্থনীতির সাত দেশের সংঘ ‘জি৭’ ভুক্ত সব দেশ থেকে অনেক নিচে।

বোর্ডের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে খসড়া নীতি অনুসারে কোম্পানিগুলোকে একটি পরিকল্পনা তৈরি করার জন্য তাগাদা দেয়া হবে। গত বছরের হিসাব বলছে, ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ প্রাইম মার্কেট কোম্পানিতে কোনো নারী পরিচালক ছিল না।

অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) জানাচ্ছে, ২০২২ সালে জাপানের বৃহত্তম কোম্পানিগুলোয় ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ নারী পরিচালক ছিল, যেখানে জি৭ দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছিল ৩১ দশমিক ৩ শতাংশ। এ পরিস্থিতি উতরাতে জাপান সরকার নারীদের নিজস্ব কোম্পানি খুলতেও উৎসাহিত করবে, যাতে উদ্যোক্তার সংখ্যা ২০ শতাংশে উন্নীত হয়। বর্তমানে দেশটিতে উদ্যোক্তাদের মাত্র ৮ দশমিক ৮ শতাংশ নারী।

নতুন পরিকল্পনার আরেকটি লক্ষ্য মহিলাদের জন্য আর্থিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক জাপানি নারীকে সন্তান হওয়ার পর কম বেতনের অনিয়মিত চাকরিতে বাধ্য করা হয়। ফলে সিঙ্গেল মায়েদের প্রায়ই অভাব-অনটনের মুখোমুখি হতে হয়।

সরকার ১০১-৩০১ জনের বেশি কর্মচারী রয়েছে, এমন কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে বেতন বৈষম্যের তথ্য প্রকাশ করার বাধ্যবাধকতা জারি করার কথা ভাবছে। ওইসিডির এক জরিপ থেকে জানা যায়, উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে জাপানে বেতন বৈষম্য সবচেয়ে প্রকট। 

নথি অনুসারে, যেসব কোম্পানি কর্মীদের খণ্ডকালীন থেকে পূর্ণকালীন নিয়োগ দেবে এবং মজুরি সমতা বিধান করবে সরকার তাদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের পুনরায় আইটি প্রশিক্ষণের জন্যও সরকারি সহযোগিতা দেয়া হবে।

খসড়া নীতিতে কর্মীদের জন্য ফ্লেক্সিবল অফিস, নারী-পুরুষের মাঝে গৃহস্থালি কাজের বণ্টন এবং এমন সমাজ তৈরি করা কথা বলা হয়েছে, যেখানে পিতৃত্বকালীন ছুটি নেয়া একটি আবশ্যিক বিষয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন