
মৃতদেহকে যথাযথ সম্মান জানিয়ে সমাধিস্থ
করাকে আধুনিক মানুষের অনন্য বৈশিষ্ট্য হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু সেই ধারণার পরির্তনের
পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ পেয়েছেন বলে দাবি একদল গবেষকের।
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই গবেষকরা
দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি গুহার সন্ধান পেয়েছেন। যেখানে আধুনিক মানুষের সবচেয়ে প্রচীন সমাধিগুলোর
চেয়েও অন্তত এক লাখ বছর আগের রহস্যময় প্রজাতির দেহাবশেষের সন্ধান পেয়েছেন।
রহস্যময় ওই প্রাচীন মানব প্রজাতি তাদের
মৃতদেহ গুহায় সমাধিস্থ করে রাখত। সেখানে দেয়ালে তাদের আঁকা কিছু বাঁকানো সংকেতও পাওয়া
গেছে।
বিলুপ্ত হোমো নালোডি প্রজাতির মানুষের
মস্তিষ্কের সঙ্গে রহস্যময় এই প্রজাতির মস্তিষ্কের মিল পাওয়া গেছে। যার আকার আধুনিক
মানুষের মস্তিষ্কের এক-তৃতীয়াংশ।
গবেষকদের নতুন এই উদঘাটন মানুষের বিবর্তনের ইতিহাসকে বদলে দিতে পারে। কারণ এখন পর্যন্ত মৃতদেহ সমাহিত ও সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করার মতো আচরণ কেবল বড় মস্তিষ্কের হোমো স্যাপিয়েন্স ও নিয়ান্ডারথাল প্রজাতির মধ্যে পাওয়া গেছে।
ছবি: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক
২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় খনন করা হয়
রাইজিং স্টার গুহা। সেখানে হোমো নালেডির জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হয়। গুহাটি দক্ষিণ আফ্রিকায়
ইউনেস্কো স্বীকৃত ওয়াল্ড হেরিটেজ সাইট ক্র্যাডল অব হিউম্যানকাইন্ডের অংশ।
গুহায় সমাধি শনাক্ত করার সময় বিজ্ঞানীরা
দেয়ালে খোদাই করা বেশ কিছু চিহ্নও খুঁজে পেয়েছেন। যেগুলো দুই লাখ ৪১ হাজার থেকে ৩
লাখ ৩৫ হাজার বছরের পুরনো বলে অনুমান করা হচ্ছে। কিন্তু আরো সুনির্দিষ্ট তথ্যের জন্য
তারা পরীক্ষা চালিয়ে যেতে চান।
নতুন আবিষ্কৃত চিহ্নগুলোর মধ্যে গভীরভাবে
খোদাই করা হ্যাশট্যাগের মতো ক্রস-হ্যাচিং ও অন্যান্য জ্যামিতিক আকার রয়েছে। অবশ্য
অন্যান্য গুহায় পাওয়া অনুরূপ চিহ্নগুলো অন্তত ৮০ হাজার বছর আগে প্রাচীন হোমো সেপিয়েন্স
ও ৬০ হাজার বছর আগে নিয়ান্ডারথাল মানুষেরা খোদাই করেছিল বলে এর আগে জানা গেছে। ধারণা
করা হয়, সেগুলো তথ্য সংরক্ষণ ও বিনিময় করার কাজে ব্যবহৃত হতো।
নতুন এই উদঘাটন সম্পর্কিত বিশদ তিনটি গবেষণা
প্রকাশিত হবে ইলাইফ জার্নালে।