‘‌বাবা ছিলেন সরলমনা রাজনীতিবিদ’

ফিচার ডেস্ক

সুনীল দত্তের সঙ্গে সঞ্জয় দত্ত ছবি: আউটলুক ইন্ডিয়া

সঞ্জয় দত্তের ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বড় অবদান তার বাবা সুনীল দত্তের। এ নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার নেই। রাজকুমার হিরানীর সিনেমা ‘‌সাঞ্জু’তেই বিষয়টি স্পষ্ট। সিনেমাটি হিরানীর নিজম্ব নির্মাণ বলেই প্রচলিত, তবে এটি সঞ্জয় দত্তের ‘‌ইমেজ ক্লিনার’ বলেও বলিউডে নানা সময় উল্লেখ করা হয়। এ সিনেমায় সঞ্জয়ের পাশাপাশি সুনীল দত্তের ক্যারিয়ার ও রাজনৈতিক জীবনের কিছু ছবি এসেছে। সুনীলকেও একটি ‘‌ক্লিন ইমেজ’ দেয়া হয়েছে সিনেমায়। সিনেমার পাশাপাশি রাজনীতিতে সক্রিয় সুনীল দত্ত সম্পর্কে পুত্র সঞ্জয়ের বক্তব্য, ‘‌বাবা একজন সরলমনা রাজনীতিবিদ ছিলেন।’

বাবাকে নিয়ে সঞ্জয় নানা সময়ই স্মৃতিচারণ করেন। এর মধ্যে নব্বইয়ের দশকে ফিল্মফেয়ারের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, রাজনীতি নিয়ে তাদের মধ্যে নিয়মিত মতবিরোধ হতো। সঞ্জয় মনে করতেন, সুনীল দত্তের রাজনীতি ছেড়ে দেয়া উচিত। সঞ্জয় বলেন, ‘‌বাইরের মানুষ ক্রমাগত বাবাকে দিয়ে নিজেদের কাজ হাসিল করত। বাবাকে তারা বোকা বানিয়ে যেত। আমার মনে হতো, বাবার বিষয়টা বোঝা উচিত। তিনি খুব ভালো একজন মানুষ আর সবসময়ই মানুষকে তিনি সাহায্য করতে চাইতেন, তা তিনি নিজে যে অবস্থায়ই থাকেন না কেন।’

রাজনীতি ও সুনীল দত্তের রাজনীতি নিয়েও সঞ্জয়ের একটি মতামত আছে। তার মতে সুনীল দত্ত রাজনীতির মারপ্যাঁচের দুনিয়ায় খুবই ভালো ও সৎ একজন মানুষ। সঞ্জয় বলেন, ‘‌তিনি দেশের জন্য কাজ করতে চান, দেশের উন্নতি করতে চান। কিন্তু বুঝতে পারেন না যে একজন মানুষের পক্ষে তা করা সম্ভব নয়। রাজনীতিতে আসার পর তিনি প্রতিদিনই নানা দুশ্চিন্তায় থাকেন।’ সঞ্জয় মনে করেন, তার বাবার সিনেমায়ই থাকা উচিত ছিল। তিনি ওই মাধ্যমেই মানুষকে আরো অনেক কিছু দিতে পারতেন।

সঞ্জয় দত্তকে নিয়ে নানা রকম তর্ক আছে। প্রথম জীবনে মাদক, সন্ত্রাসীদের সঙ্গে তার যোগাযোগ, কাজ নিয়ে সিরিয়াস না থাকা ইত্যাদি নিয়ে নানা কথা বলার চেষ্টা হয়েছিল ‘‌সাঞ্জু’তে। সে সিনেমায় এসেছিল নার্গিসের প্রসঙ্গও। সঞ্জয় তার কথোপকথনে জানান, লোকে তাকে মায়ের ন্যাওটা বলে জানে, কিন্তু আসলে তিনি বাবার মাধ্যমে বেশি অনুপ্রাণিত হয়েছেন। নার্গিস দত্ত ১৯৮১ সালেই মারা গিয়েছিলেন। সুনীল দত্ত পরিচালিত সঞ্জয়ের প্রথম সিনেমা ‘‌রকি’র প্রিমিয়ারও দেখতে পারেননি নার্গিস। বাবার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে সঞ্জয় বলেন, ‘‌বাইরে থেকে অনেকেই ধারণা করে আমি “‍মামাস বয়’’ কিন্তু আসলে বাবা আমাকে বেশি প্রভাবিত করেছেন। আমরা নিজের আদর্শ, পছন্দ ভাগাভাগি করতাম।’

সঞ্জয়ের জীবনে সুনীল দত্তের প্রভাব ও অবদান নিয়ে একটা কথা বলাই যথেষ্ট হবে। মুন্নাভাই এমবিবিএস সম্ভবত সুনীল দত্তের একান্ত ইচ্ছা ছাড়া হতো না। সঞ্জয়ের জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হয়েছিল এ সিনেমা দিয়েই। ২০০৩ সালে মুক্তি পাওয়া এ সিনেমায় সুনীল নিজেও অভিনয় করেছিলেন মুন্নার বাবার চরিত্রে। সুনীল দত্তের এটিই শেষ সিনেমা। ২০০৫ সালে মারা যান তিনি।

সূত্র: ফিল্মফেয়ার

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন