এশিয়ার প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে ভারত ও ইন্দোনেশিয়া

বণিক বার্তা ডেস্ক

২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি থাকবে ৬ দশমিক ২ শতাংশ ছবি: রয়টার্স

মহামারীর অভিঘাত শেষে সংশ্লিষ্ট বিধিনিষেধ তুলে নেয় চীন। পুনরায় শুরু হয় অর্থনৈতিক কার্যক্রম। যদিও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের যাত্রাটি অল্প সময়েই মন্থর হয়ে পড়ে, এশীয় অঞ্চলের প্রবৃদ্ধি ছিল সন্তোষজনক। এক্ষেত্রে চীনকে প্রতিস্থাপন করে চালকের জায়গা নিয়েছে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলো। সম্প্রতি মরগান স্ট্যানলি ও নমুরা প্রকাশিত দুটি ভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিষয়টি। খবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।

মরগান স্ট্যানলির প্রাক্কলন অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি থাকবে ৬ দশমিক ২ শতাংশ। অন্যদিকে নমুরার প্রাক্কলন অনুযায়ী বৃদ্ধির পরিমাণ ৫ দশমিক ৯ শতাংশ।

নমুরা প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘চীনের অর্থনীতি মন্থর হয়ে এলেও অন্য উদীয়মান বাজারের প্রভাবে বাড়তে যাচ্ছে এশিয়ার জিডিপি। দেশগুলোয় গতি পেয়েছে অর্থনৈতিক কার্যক্রম। ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে। যদিও চীনের পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া গোটা অঞ্চলের অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে সচল রাখতে সহায়তা করেছে। তবে চলতি বছরের মাঝামাঝি পৌঁছে ভারত ও ইন্দোনেশিয়া থেকে সাড়া পাওয়া গেছে বেশি।

ভোক্তা ব্যয়, দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা সূচক কিংবা রফতানি চাহিদা রয়েছে সন্তোষজনক অবস্থানে। উদীয়মান বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল। ২০২৪ সালে এ অর্থনীতি পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় আরো অগ্রগতি হবে। ভারতের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়েছে মূলত ভোক্তা ব্যয় ও পুঁজি তৈরির কারণে। উপাত্ত থেকে প্রমাণিত হয় প্রকৃত ক্রেডিট ১২ দশমিক ৬ ও জিএসটি সংগ্রহ ৮ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। এদিকে পিএমআই দাঁড়িয়েছে ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে। পরিষেবা খাতও উঠেছে নজিরবিহীন উচ্চতায়।

ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার অভ্যন্তরীণ চাহিদাই ভোক্তা ব্যয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে নিয়ামকের ভূমিকা পালন করেছে। সচল হয়েছে রফতানি খাত। ফলে রফতানি বৃদ্ধির পাশাপাশি দ্রুততর হয়েছে পুনরুদ্ধার। একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ ভোক্তা বৃদ্ধি ও রফতানি চাহিদা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ফিরিয়েছে। ভোক্তা ব্যয়ের দিক থেকে ভাবতে গেলে শ্রমবাজার ভারতে যথেষ্ট শক্তিশালী বর্তমানেও।

বেসরকারি খাতের ব্যালান্স শিটের পরিস্থিতিও সন্তোষজনক। তবে রফতানি চাহিদা কমে যাওয়া কিংবা অভ্যন্তরীণ চাহিদা সংকুচিত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। কারণ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির চলমান সংকটের সময় ভোক্তারা যেকোনো মুহূর্তে চাহিদা সংকুচিত করে আনতে পারে।

মরগ্যান স্ট্যানলি পূর্বাভাস দিয়েছে, রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে পরিবর্তন আনতে পারে নীতিমালায়। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি ও ঋণ ঘাটতির পরিমাণ নাগালে থাকায় আসতে পারে নতুন সিদ্ধান্ত। বৈশ্বিক পণ্য মূল্যের পরিবর্তন কিংবা আবহাওয়ার প্রতিকূল পরিস্থিতি ঝুঁকি তৈরি করতে পারে প্রবৃদ্ধিতে। বাড়াতে পারে মূল্যস্ফীতি। বিপরীতে নমুরা দাবি করেছে, মূলধন ব্যয় স্বস্তিকর অবস্থানে থাকাটা ভারতের জিডিপি প্রথম ছয় মাসে বছরওয়ারি ৬ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে। ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার নির্মাণ খাত সম্ভাবনাময়। অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও ভোক্তা খাতও বেশ ভালো। বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনের কারণে উপকৃত হয়েছে ভারত ও আসিয়ান অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো। আবাসন খাতে ব্যয় হার বর্তমানে সবচেয়ে বেশি। পরিষেবা খাতে ডিজিটাল রূপান্তরের প্রক্রিয়া ভারতের অর্থনীতিকে টেকসই করার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন