
মিথ্যা, বানোয়াট তথ্য দিয়ে আমার মতো যেন
আর কাউকে হযরানি করা না হয় বলে মন্তব্য করেছেন গাজীপুরে সাবেক মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম।
আজ মঙ্গলবার (৬ জুন) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের তিনি
এ কথা জানান।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজির হন জাহাঙ্গীর। পরে দুদকের সহকারী পরিচালক আশিকুর রহমান তাকে
প্রায় চার ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাবেক মেয়র সাংবাদিকের
বলেন, দুদকসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আমার বিরুদ্ধে
মিথ্যা, বানোয়াট গল্প দিয়ে চিঠি ইস্যু করেছে। কে বা কারা এসব চিঠি দিয়েছে তাদের কোনো
হদিস নাই। অভিযোগকারীদের ঠিকানার সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল নাই।
জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে বিষয়ে জাহাঙ্গীর
বলে, যেহেতু দুদক একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, তারা অভিযোগের বিষয়ে আমাকে গত ২১ মে আসতে
নোটিস করেছিল, আমি এর জবাব দিয়েছি। আজ আবার ডেকেছে, আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে
এসেছি।
দুদকে আসা অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার
বিরুদ্ধে সাত হাজার ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাতের গল্প-নাটক সাজানো হয়েছিল। স্থানীয় সরকার
মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় সরকার থেকে ৬০০ থেকে ৬৫০ কোটি টাকার কাজ, সব কাজ চলমান। সে
জায়গায় কাগজে লিখে দিয়েছে সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা।
দুদকে থেকে গাজীপুর সিটি করপোরেশেনের তৎকালীন
মেয়র জাহাঙ্গীরের নামে একটি ভুয়া ব্যাংক হিসাব খোলার যে তথ্য দেয়া হয়েছিল সে বিষয়ে
বলেন, সর্বশেষ আমার নামে একটি ভুয়া মিথ্যা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেখানো হয়েছে কয়েক
কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। আপনারা জানেন, একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুললে মেয়র এবং
সিইওর যৌথ সিগনেচার লাগে। বাংলাদেশে আমার সিগনেচার নিয়ে গোপনীয়তার কিছু নাই।
অ্যাকাউন্ট তার খোলা নয় জানিয়ে জাহাঙ্গীর
বলেন, ছাত্র জীবন, সর্বশেষ কর্মস্থল, আমার পাসপোর্ট, এনআইডি কার্ড ও সিটি করপোরেশেনে
প্রত্যেকটি জায়গায় আমার সিগনেচার আছে, সিগনেচার কেউ ব্যতিক্রম করে? আমার বিরুদ্ধে একটি
মিথ্যা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট দেখানো হয়েছে।
সিগনেচার যাচাই-বাছাই ও ফরেনসিক করার দাবি
জানিয়ে বলেন, আমি বলেছি, ন্যায় বিচারের স্বার্থে ব্যাংকে কে বা কারা একটি মিথ্যা সিগনেচার
দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলেছে সেটির বিচার আমিও চাই। সেজন্য আমি দুদকে কয়েকশ সিগেনেচার দিয়েছি।
এ সময় জাহাঙ্গীর বলেন, আমার মতো যেন বাংলাদেশের
কেউ হয়রানির শিকার না হয়। আমি জনগণের জন্য কাজ করেছি সেটা পরীক্ষিত। গাজীপুরে আমি তিন
বছর দায়িত্ব পালন করেছি। গাজীপুরে জনগণ আমাকে স্মরণ রেখেছে, সেজন্য আমার মাকেও ভোট
দিয়ে সেই জায়গাটা পবিত্র রেখেছে।
সিটি নির্বাচনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লাহ
খানকে নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যে নগরের জন্য
কাজ করবে তাকে স্যালুট জানাই। সে তো আমার বড় ভাই, তাকে দায়িত্ব দিয়েছে। সে তার কর্ম
দক্ষতা দিয়ে সেখানে ভালো কিছু করবে। আমি তাকে সার্বিক সহায়তা করব।’
গত ১৫ মে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে দুটি
পৃথক নোটিসে পাঠিয়ে ২১ ও ২২ মে দুদক প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান
করতে বলা হয়। ১৬ মে তিনি নোটিস গ্রহণ করেন।
গত ১৮ মে আইনজীবীর মাধ্যমে এক মাসে সময় চেয়ে আবেদন করেন।
গত ২১ মে জাহাঙ্গীর আলম স্ব-শরীরে দুর্নীতি
দমন কমিশনে উপস্থিত হন। এ সময় এক মাস সময় আবেদন করলে অনুসন্ধান কর্মকর্তা ১৫ দিন মঞ্জুর
করেন।