ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনা: এখনও শনাক্ত হয়নি ১০০ মরদেহ

বণিক বার্তা অনলাইন

ছবি : বিবিসি

ভারতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় এখনও নিখোঁজদের সন্ধান করে চলছেন স্বজনরা। অনেক মরদেহের মুখ পুরো পুড়ে গেছে বা কোনটির মাথা থেঁতলানো, বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১০০ জনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। খবর বিবিসি। 

গত শুক্রবার (২ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ওড়িশা রাজ্যের বলেশ্বরের বাহাঙ্গাবাজার স্টেশনের কাছে ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ২৭৫ জন নিহত ও এক হাজারের বেশি আহত হয়। দেশটির গত ২০ বছরের ইতিহাসে এমন দুর্ঘটনা আর ঘটেনি। 

ভারতের পূর্ব-মধ্য বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার রিঙ্কেশ রায় জানান, প্রায় ২০০ জন এখনো উড়িশার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তিনি জানান, প্রায় ১১০০ মানুষ ওই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৯০০ জন ইতোমধ্যেই চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। দুর্ঘটনায় নিহত ২৭৫ জনের মধ্যে ১০০ জনের মরদেহ এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। 

বিবিসি বলছে, দুর্ঘটনায় অনেকের চেহারা বিকৃত হওয়ায় এক লাশকে একাধিক পরিবার তাদের স্বজন বলে দাবি করছে। এতে লাশ হস্তান্তরে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

ওড়িশার রাজধানী ভুবনেশ্বরের লাশ শনাক্তে এসেছেন নিজামউদ্দিন। তার ছেলে ও দুই নাতি-নাতনি এ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। ছেলে নিখোঁজ থাকলেও নাতনি তাফসির আনসারি, নাতি তৌসিফ মারা গেছে। দুর্ঘটনায় তাদের চেহারা বিকৃত হলেও তাদের শনাক্ত করতে সক্ষম হন নিজামউদ্দিন। পরে লাশ নিজ বাড়িতে নেয়ার চেষ্টা করলে বাধা দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা জানায়,  তাফসিরের মৃতদেহ এরই মধ্যেই অন্য একটি পরিবার দাবি করেছে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এটা কীভাবে সম্ভব? আপনি কি বলতে চাচ্ছেন যে আমি আমার নাতি-নাতনিদের চিনতে পারব না?’

ভুবনেশ্বর মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের কমিশনার বিজয় অমরুতা কুলাঙ্গে বিবিসিকে বলেছেন, অনেক মরদেহের অবস্থা বেশ খারাপ। গরমে মরদেহ আরও বিকৃত হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় মৃতদেহ শনাক্ত করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চারপাশের বাতাসে পচা মাংসের গন্ধে ভরে উঠেছে। যারা ছবি দেখে স্বজনদের শনাক্ত করছেন তাদের হাতে একটি করে চিরকুট ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে। ওই চিরকুটের মাধ্যমেই মৃত ব্যক্তিকে দেখার অনুমতি দেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, অনেক মরদেহের মুখ পুরো পুড়ে গেছে, কোনটির মাথা থেঁতলানো বা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, শনাক্ত করাও অসম্ভব হয়ে পড়ছে। স্বজনরা যেন এসব মরদেহ শনাক্ত করতে পারেন সেজন্য শনিবার রাত থেকেই মরদেহগুলো সংরক্ষণের জন্য একটি কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। তারপর সেখান থেকে শহরের মর্গে পাঠানো হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন