ঢাকা-১৭ উপনির্বাচন

মনোনয়নপত্র নিলেন এ আরাফাত, হিরো আলমের ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংসদ সদস্য আকবর হোসেন খান পাঠান ওরফে নায়ক ফারুকের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে এখন পর্যন্ত ১২ জন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ আলী আরাফাতও (মোহাম্মদ এ আরাফাত) রয়েছেন। উপনির্বাচনে মনোনয়ন পেলে কয়েক মাস পর হতে যাওয়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মনোনয়ন নিশ্চিত—এমনটাই মনে করছেন আগ্রহী ব্যক্তিরা। এদিকে উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। 

উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী ঠিক করতে গত শনিবার থেকে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। আজ বিকাল পর্যন্ত দলীয় ফরম সংগ্রহ ও জমা দেয়া যাবে। এ উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে দলের নেতা, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও চিত্রজগতের এক ডজনের বেশি ব্যক্তি দৌড়ঝাঁপ করছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। এ উপনির্বাচনের প্রার্থী ঠিক করতে আগামী শনিবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক হতে পারে।

আওয়ামী লীগের আগ্রহী নেতাদের মধ্যে গতকাল পর্যন্ত যারা দলীয় ফরম সংগ্রহ করেছেন তারা হলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের দুই সহসভাপতি মোহাম্মদ ওয়াকিল উদ্দিন ও মোহাম্মদ আবদুল কাদের খান, বনানী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জসিম উদ্দিন, যুবলীগ ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর কমিটির স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক কানিজ ফাতেমা সুলতানা, যুবলীগের সাবেক নেতা আবদুল খালেক, সেনানিবাস থানা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা আবু সাঈদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের নজরুল ইসলাম তমিজি, সাবেক সচিব মোহাম্মদ মুসা, গুলশান থানা আওয়ামী লীগের নেতা আরাফাত আশওয়াদ ইসলাম, অভিনেতা মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান। এছাড়া ক্রিকেটার ও চিত্রজগতের আরো অনেকেই এ উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে তৎপর রয়েছেন।

এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোট করার ঘোষণা দিয়েছেন হিরো আলম। গতকাল নিজেই বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বগুড়া-৬ (সদর) ও বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) দুটি আসন থেকেই সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করেছেন আলোচিত এ অভিনেতা।

হিরো আলম গতকাল দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন অর রশিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান। পরে সেখান থেকে বেরিয়ে এসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি বগুড়ায় নির্বাচন করতে গিয়ে মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন চলচ্চিত্র জগতের মিয়া ভাই ফারুক ভাই। তিনি মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। তিনি নানা কারণে এলাকায় কাজ করতে পারেননি। আমিও মিডিয়াকর্মী। সেজন্য তার অসমাপ্ত কাজগুলো করতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘অনেকে হয়তো মনে করেন, হিরো আলমকে হয়তো শুধু রিকশা-ভ্যান চালকরাই ভালোবাসেন। কয়েকদিন ধরে এ আসনে নিজে নিজে ঘুরেছি। দেখেছি বেশকিছু কাজ হয়নি। আগামী চার-পাঁচ মাসে দেখি কিছু করতে পারি কিনা। সে চিন্তা থেকেই নির্বাচনের প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা।’ 

চিত্রনায়ক ফেরদৌস, ক্রিকেটার সাকিবসহ অনেক ভাইটাল ব্যক্তি প্রার্থী হতে পারেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে। এমন ভাইটাল প্রার্থীদের বিরুদ্ধে জেতার আশা করেন কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, ‘আপনাদের কী মনে হয়, তাদের থেকে আমি হিরো আলম কম ভাইটাল? আমি কাউকে গুনব না। নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কে ভাইটাল, কে দাঁড়াল, কে এল না সেটা গুরুত্বপূর্ণ না। আমি হিরো আলম ভাইটাল হয়ে তাদের বিরুদ্ধে আসতেছি।’ 

জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী হিরো আলম বলেন, ‘ঢাকা-১৭ আসন ঘুরে দেখলাম। এলাকার মানুষ তো আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। সবাই বলছেন, তুমি আসো, আমরা তোমাকে চাই। সাহস পেয়েই নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছি। অনেকেই গালি দিয়ে বলে, আমি বস্তির ছেলে। ভাসানটেক, মহাখালী কড়াইল বস্তি এলাকার উন্নয়নে কাজ করতে চাই। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।’

তিনি বলেন, ‘বগুড়া থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। সেভাবেই এলাকায় জনসংযোগ করতে চেষ্টা করছি। আর বগুড়াবাসী চায়, আমি এমপি হয়ে তাদের জন্য কাজ করি।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন