স্মার্টফোন প্রসেসরের নেতৃত্বে মিডিয়াটেক

বণিক বার্তা ডেস্ক

স্মার্টফোনের প্রসেসর তৈরিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে তাইওয়ানের সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মিডিয়াটেক। ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে আন্তর্জাতিক বাজারের বড় অংশ দখলে রেখেছিল কোম্পানিটি। যদিও আগের প্রান্তিকের তুলনায় সংকুচিত হয়েছে আধিপত্য। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে বছরের দ্বিতীয় ভাগে মিডিয়াটেকের বাজার আরো সম্প্রসারিত হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কাউন্টার পয়েন্ট রিসার্চ প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর গিজমোচায়না।  

২০২১ সালের চতুর্থ প্রান্তিক থেকে ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিক পর্যন্ত স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশন প্রসেসরের (এপি) বাজার নিয়ে গবেষণা পরিচালনা করে কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ। সেখানে বের হয়ে এসেছে প্রসেসর শিল্পে যুক্ত হওয়া নতুন নিয়ামক ও বর্তমান প্রবণতা। উঠে এসেছে চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মিডিয়াটেক, কোয়ালকম, অ্যাপল, ইউনিসক, স্যামসাং ও হুয়াওয়ে হাইসিলিকন নিয়ে নতুন তথ্য। 

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে স্মার্টফোন এপি বাজারের ৩১ শতাংশ দখলে রেখেছিল মিডিয়াটেক। তবে উৎপাদন ও বাজারজাতের দিক থেকে গত প্রান্তিকের তুলনায় কমেছে আধিপত্য। কমে যাওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে কারখানার সমন্বয় ও চাহিদার সংকোচনকে দায়ী করেছে সংশ্লিষ্টরা। চাহিদা কমে যাওয়ায় ২০২৩ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৫ শতাংশের বেশি কমতে পারে এলটিই প্রসেসরের চালান। 

৫জি সক বা প্রসেসর চালান ৫ শতাংশের মতো বাড়ার প্রাক্কলন করা হয়েছে। কারখানা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে চলতি বছরের দ্বিতীয় ভাগে মিডিয়াটেকের বাজার পুনরুদ্ধার হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে উৎপাদন কিছুটা কমলেও অন্যান্য কোম্পানির তুলনায় এগিয়ে থাকায় কোনো প্রভাব ফেলেনি মিডিয়াটেকের ওপর। বর্তমান চিপের বাজারে নেতৃত্ব দিচ্ছে কোম্পানিটি।

বছরের প্রথম প্রান্তিকে বাজারের ২৮ শতাংশ দখলে নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে কোয়ালকম। ২০২৩ সালে কারখানা কার্যক্রম সংকুচিত হয়ে যাওয়ার কারণে চালান হার কিছুটা পিছিয়ে। আগামী প্রান্তিকেই স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে তুলে নেয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে কোম্পানিটি। 

চিপের জন্য বিখ্যাত অ্যাপলের হিস্যা ছিল ২৬ শতাংশ। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির বাজার কমার ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। অ্যান্ড্রয়েড বাজারে অপেক্ষাকৃত ভালো করেছে আইওএস। চাহিদার দুর্বলতার বিপরীতে প্রমাণ করেছে স্থিতিশীলতা। 

অন্যদিকে প্রথম প্রান্তিকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তি জায়ান্ট স্যামসাংয়ের বাজার কিছুটা প্রসারিত হয়েছে। এর মূল কারণ হিসেবে ছিল এক্সিনোজ ১৩৩০ ও ১৩৮০ চিপসেট। হাই এন্ড বা ফ্ল্যাগশিপ ও সাশ্রয়ীমূল্যের সেলফোন বাজারে বেড়েছে বিক্রি। সাশ্রয়ীমূল্যের স্মার্টফোন বাজারে ভালো অবস্থানে ছিল ইউনিসক।

২০২৩ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বেড়েছে চালান। এলটিই ডিভাইসের চাহিদার কারণেই মূলত বেড়েছে বাজার, যে ডিভাইসের দাম ৯৯ ডলারের কম। এদিকে হুয়াওয়ে হাইসিলিকনের বাজার হিস্যা ছিল ১ শতাংশ। তবে শিগগিরই নতুন চিপ আনতে পারে কোম্পানিটি। 

কাউন্টারপয়েন্টের বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস, ২০২৩ সালে হুয়াওয়ে ২০-৪০ কোটি ইউনিট চিপ সরবরাহ করতে পারে। যার অধিকাংশের দাম থাকবে মধ্যম পর্যায়ের। বিশ্লেষকদের দাবি, চিপ উৎপাদনের পরিকল্পনা থেকে অপোর সরে যাওয়ার কারণে বিশেষভাবে উপকৃত হয়েছে মিডিয়াটেক ও কোয়ালকম। অপোর সরে যাওয়ার মানে বাজার থেকে একটা প্রতিযোগী কমে যাওয়া। অপোর চিপ উৎপাদন ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত বাকিদের জন্য এগিয়ে যাওয়ার পথকে সহজ করবে। এরই মধ্যে চিপ ডিজাইন খাতে প্রবেশের কথা জানিয়েছে অনর। সার্বিকভাবে মিডিয়া টেকের পুনরুদ্ধার গতি, নতুন চিপের আগমনের সম্ভাবনা ও এপি বাজারের বিবর্তন নতুন করে পথ দেখাচ্ছে অর্থনীতিকে। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন