চাহিদা বৃদ্ধিতে মে মাসে চীনের পরিষেবা খাত সম্প্রসারণ

বণিক বার্তা ডেস্ক

চীনের আনহুই প্রদেশে ইভি নির্মাতা নিওর কারখানায় কাজ করছেন একজন কর্মী ছবি: রয়টার্স

চাহিদা বৃদ্ধির জেরে মে মাসে সম্প্রসারণ হয়েছে চীনের পরিষেবা খাত। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে এসে ক্রয়াদেশ বেড়ে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায়। এমনটাই উঠে এসেছে কাইশিন/এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের জরিপে। মে মাসে পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স (পিএমআই) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৭ দশমিক ১ শতাংশে, যা এপ্রিলে ছিল ৫৬ দশমিক ৪ শতাংশ। উল্লেখ্য, পিএমআই ৫০ পয়েন্টের ওপরে থাকলে পরিষেবা কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও নিচে থাকলে সংকোচন বোঝায়। নতুন ক্রয়াদেশ, উৎপাদন, কর্মসংস্থান, সরবরাহের সময় ও স্টক লেনদেন পর্যালোচনার মাধ্যমে চালানো হয় জরিপটি। খবর রয়টার্স।

১২-২২ মে ব্যাপী চালানো জরিপের ভিত্তিতে নির্ণয় করা হয়েছে পিএমআই, যা দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রকাশিত পিএমআইর ঠিক বিপরীত। সেখানে মে মাসে চীনের কারখানা কার্যক্রমকে প্রত্যাশার চেয়েও ধীর দেখানো হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে সামান্য ও স্বল্পকালীন পুনরুদ্ধারের পর চীনের ভোক্তা চাহিদা পুনরুদ্ধার দ্বিতীয় মাত্রায় প্রবেশ করেছে। নতুন পরিস্থিতি আরো বেশি অভ্যন্তরীণ।

কাইশিন পিএমআই জরিপ করা হয়েছে ৬৫০টি বেসরকারি ও রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত পরিষেবা কোম্পানি নিয়ে। অন্যদিকে পরিসংখ্যান ব্যুরোর পিএমআই জরিপ চলেছে ৪ হাজার ৩০০ কোম্পানি নিয়ে। কোনো কোনো অর্থনীতিবিদ অবশ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া ও বেকারত্ব বেড়ে যাওয়ার কারণে ব্যক্তি পর্যায়ে চাহিদা কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। বিষয়টি পরবর্তী সময়ে নীতিনির্ধারকদের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠতে পারে। এরই মধ্যে বৈদেশিক চাহিদার সংকোচন ও মহামারী-পরবর্তী নাজুক পুনরুদ্ধার গতি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। অবশ্য পরিষেবা খাত, রেল ও উড়োজাহাজ পরিবহন, আবাসন ও রেস্তোরাঁ খাত সম্প্রসারণের দিকে। শ্রমিক দিবসের ছুটির জেরে গতি বেড়েছে খাতগুলোয়। তবে নিয়োগ সৃষ্টির খাত যথেষ্ট ছিল না। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির পর পরিষেবা কোম্পানিগুলোয় ফি বেড়েছে দ্রুতগতিতে।

জরিপে কিছু কিছু নতুন ব্যবসার উত্থান শনাক্ত করা হয়েছে। কাইশিন/এসঅ্যান্ডপি কম্পোজিটের পিএমআই হিসাব করা হয় উৎপাদন ও পরিষেবা খাতকে সমন্বয় করে, যা এপ্রিলের তুলনায় বেড়েছে। এপ্রিলে সূচক ছিল ৫৩ দশমিক ৬ শতাংশ, যা মে মাসে দাঁড়িয়েছে ৫৫ দশমিক ৬ শতাংশে। অর্থাৎ ২০২০ সালের পর সবচেয়ে দ্রুত প্রবৃদ্ধি। ২০২২ সালে মহামারী নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নেয়ার পর গতি পায় অর্থনৈতিক কার্যক্রম।

বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনের অর্থনীতি প্রত্যাশার চেয়েও বেশি গতিশীল ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় প্রান্তিকে এসে এপ্রিলে মন্থর হতে শুরু করে। মে মাসে কারখানা কার্যক্রম প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুত মন্থর হয়েছে। চাহিদা কমে গেছে। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়েছে প্রতিবন্ধকতা। 

কাইশিন ইনসাইট গ্রুপের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ওয়াং জে জানিয়েছেন, চীনা অর্থনীতির বড় একটা বৈশিষ্ট্য হলো পরিষেবা খাত উৎপাদন খাতের চেয়ে শক্তিশালী থাকে। বর্তমান ব্যতিক্রম অবস্থাই প্রমাণ করে দেশটিতে অর্থনীতিক প্রবৃদ্ধি অভ্যন্তরীণ দিক থেকে তেমন সাড়া পাচ্ছে না। বাজার শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারছে না। অনিশ্চিত চাহিদা পুনরুদ্ধার ও সম্প্রসারণ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন