এলএনজি রফতানি কমাতে যাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া

বণিক বার্তা ডেস্ক

গত বছর ইন্দোনেশিয়া দেড় কোটি টন এলএনজি বিশ্ববাজারে রফতানি করে ছবি: রয়টার্স

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রফতানি কমাতে যাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া। রফতানিতে নিয়ন্ত্রণ আনতে পণ্যটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। খবর অয়েলপ্রাইস ডটকম।

সরকারি তথ্যের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, স্থানীয় ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতেই সম্ভাব্য এ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে দেশটি।

ইন্দোনেশিয়ার নির্বাহী সমন্বয়ক জ্বালানিমন্ত্রী জোডি মাহারদি বলেন, ‘‌আমরা মনে করছি এ পলিসি দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও চাহিদায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি স্থানীয় শিল্প প্রবৃদ্ধিতে উৎসাহিত করবে। এছাড়া বিদ্যমান রফতানি প্রতিশ্রুতি রক্ষাও সহজ হবে।’ তবে এলএনজি রফতানি পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি। 

দেশটির সমুদ্র ও বিনিয়োগবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানায়, এ সিদ্ধান্তের ফলে স্থানীয় বাজারে এলএনজির দামও কমে আসবে। ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের ষষ্ঠ শীর্ষ এলএনজি রফতানিকারক। গত বছর দেশটি সব মিলিয়ে দেড় কোটি টন এলএনজি বিশ্ববাজারে রফতানি করে।

রফতানি সীমিত করার এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সরকার বিদ্যমান চুক্তি সম্প্রসারণ বন্ধ ঘোষণা করতে পারে। পাশাপাশি নতুন চুক্তির ইতি টানা হতে পারে বলেও বিভিন্ন খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইন্দোনেশিয়া থেকে বছরে এক কোটি টন করে এলএনজি রফতানি চুক্তির মেয়াদ ২০৩০ সালের মধ্যে শেষ হবে। গত বছর আন্তর্জাতিক বাজারে সংকটের কারণে এলএনজির দাম আকাশচুম্বী হয়ে ওঠে। এ পরিস্থিতিতে স্থানীয় সরবরাহ নিশ্চিত করা দুষ্কর হয়ে পড়েছিল। চলতি বছর যাতে একই সমস্যায় পড়তে না হয়, সেজন্যই রফতানি কমানো হবে।

প্রসঙ্গত, লক্ষণীয় মাত্রায় দাম কমা সত্ত্বেও চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে এশিয়ার বাজারে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) চাহিদা। দাম আকাশচুম্বী হয়ে ওঠার পর যেসব ক্রেতা আমদানি বন্ধ করে দিয়েছিলেন তাদের অনেকেই এখনো ফিরে আসেননি। অন্যদিকে ইউরোপে নিম্নমুখী চাহিদাও এশিয়ার বাজারে ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করতে পারেনি।

আইএইচএস মার্কিটের দেয়া তথ্য বলছে, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরে চাহিদা বাড়লেও এশিয়ার বড় বাজার চীন, জাপান ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় কমেছে ব্যাপক হারে। এটিই এ অঞ্চলের মোট চাহিদা কমার পেছনে প্রভাবকের ভূমিকা পালন করেছে।

চাহিদায় এমন নিম্নমুখী প্রবণতার ফলে টানা ষষ্ঠ প্রান্তিকে এশিয়ার দেশগুলোয় এলএনজি আমদানি কমেছে। মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাধলে জ্বালানিটির দাম আকাশচুম্বী হয়ে ওঠার পরই এ প্রবণতা শুরু হয়।

যুদ্ধের প্রভাবে গত বছর ইউরোপের দেশগুলো এলএনজি আমদানি প্রায় ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। ফলে এশিয়ার দেশগুলোর জন্য আমদানি করা চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়ায়। কারণ ইউরোপে ঊর্ধ্বমুখী চাহিদার ফলে দাম লাফিয়ে বাড়তে শুরু করে। ফলে গত বছর এশিয়ায় বার্ষিক চাহিদা ৭ শতাংশ করে কমে যায়। 

শীতের কম তীব্রতা এবং পর্যাপ্ত মজুদ এবং ইউরোপে নিম্নমুখী চাহিদা চলতি বছরের শুরুতেই আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজির দামকে অনেকটাই নিচে নামিয়ে আনে। তবে এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে ইউরোপের দেশগুলোয় এলএনজি আমদানি ৬ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। ঐতিহাসিক গড়ের তুলনায় এখনো ওপরেই অবস্থান করছে জ্বালানিটির দাম।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন