আকাশপথে যাত্রী পরিবহন ৯০ শতাংশ পুনরুদ্ধার

বণিক বার্তা ডেস্ক

কভিড বিধিনিষেধ প্রত্যাহারে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভ্রমণ ও পর্যটন খাত ছবি: দ্য ন্যাশনাল

মহামারী পরিস্থিতি সামলে উঠেছে বৈশ্বিক উড়োজাহাজ খাত। আগের তুলনায় আকাশপথে যাত্রী পরিবহনের পরিমাণও বেড়েছে। তবে শতভাগ পুনরুদ্ধার না হলেও কভিড-১৯ আগের স্তরের তুলনায় আকাশপথে যাত্রী পরিবহনের পরিমাণ ৯০ দশমিক ৫ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দ্রুততম বৃদ্ধির রেকর্ড।

আন্তর্জাতিক এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ) মাসভিত্তিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও এপ্রিলে আকাশপথে বার্ষিক যাত্রী পরিবহন ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। এপ্রিল ২০২২ থেকে আকাশপথে আন্তর্জাতিক যাত্রী পরিবহন বেড়েছে ৪৮ শতাংশ। সব বাজারেই শক্তিশালী বৃদ্ধির রেকর্ড দেখা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের এয়ারলাইনসগুলো। 

আইএটিএর তথ্যানুসারে, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এপ্রিলে অভ্যন্তরীণ ভ্রমণের চাহিদা ৪২ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে সম্পূর্ণমাত্রায় পুনরুদ্ধার পথে রয়েছে, যা ২০১৯ সালের তুলনায় ২ দশমিক ৯ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি। আইএটিএর মহাপরিচালক উইলি ওয়ালশ বলেন, ‘২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে আমরা যে শক্তিশালী পুনরুদ্ধার প্রবণতা দেখেছিলাম, এপ্রিলে তা অব্যাহত রয়েছে।’ 

অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার (ওইসিডি) সদস্য অধিকাংশ দেশে মূল্যস্ফীতি হ্রাস, ভোক্তা আস্থা বৃদ্ধির সঙ্গে জেট ফুয়েলের দাম কমে যাওয়া টেকসই উড়োজাহাজ ভ্রমণের চাহিদা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়, যা নির্দেশ করে যে উড়োজাহাজ ভ্রমণের চাহিদা শক্তিশালী থাকবে এবং এয়ারলাইনসগুলোর খরচের চাপ হ্রাস বা মাঝারি হতে পারে; যা নিকটবর্তী মেয়াদে শিল্পের লাভজনকতা ও টেকসইয়ত্বের নির্দেশ দেয়। 

২০২২ সালে কভিড-১৯-এর প্রভাবে সৃষ্ট বিপর্যয়কর পরিস্থিতি থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য বৈশ্বিক উড়োজাহাজ শিল্প একটি পথপরিকল্পনা তৈরি করে। রেকর্ডসংখ্যক নিয়োগ, এয়ারলাইনসের সক্ষমতা বৃদ্ধি, পুনরায় রুট চালুর মাধ্যমে কয়েক বছরের লোকসানের পর লাভের মুখ দেখতে শুরু করে শিল্পটি। বর্তমানে এয়ারলাইনস ও উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো এখন ইতিবাচক আর্থিক ফলাফলের প্রতিবেদন করছে, যা ইতিবাচক পরিস্থিতির ইঙ্গিত দেয়। 

তবে আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, শিল্পটি বর্তমানে সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবং ভূরাজনৈতিক বৈরী হাওয়ার মুখোমুখি, যা আকাশপথে যাত্রী পরিবহন পরিস্থিতির স্থায়িত্ব ও পুনরুদ্ধার অবস্থার দীর্ঘায়ু নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করছে। 

পশ্চিমা অর্থনীতিতে বহু দশকের রেকর্ড মূল্যস্ফীতি, ক্রমবর্ধমান সুদের হার, মুদ্রা বিনিময় হারের ওঠানামা, জেট জ্বালানির উচ্চ দাম এবং উড়োজাহাজ সরবরাহ শৃঙ্খলের মতো সমস্যার কারণে এয়ারলাইনসগুলো বর্তমানে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এর মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অনিশ্চয়তা অতিরিক্ত ঝুঁকি হিসেবে কাজ করছে। তবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কঠিন বৈরী পরিস্থিতি সত্ত্বেও এশিয়া-প্যাসিফিক এয়ারলাইনসগুলোয় ২০২২ সালের এপ্রিলের তুলনায় আকাশপথে যাত্রী চলাচল ১৯২ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। 

আইএটিএর তথ্য অনুসারে, এপ্রিলে মধ্যপ্রাচ্যের এয়ারলাইনসগুলোয় যাত্রী পরিবহনে ৩৮ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি দেখা যায়। যাত্রীধারণ সক্ষমতাও বেড়েছে ২৭ দশমিক ৮ শতাংশ। লোড ফ্যাক্টর ৫ দশমিক ৬ শতাংশ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ৭৬ দশমিক ২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। 

এ সম্পর্কে উইলি ওয়ালশ বলেন, সাপ্লাই চেইন ঘাটতি ও অন্যান্য পরিচালনা চ্যালেঞ্জ অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও এয়ারলাইনসগুলো যাত্রীদের মসৃণ ভ্রমণ অভিজ্ঞতা প্রদানের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে। 

গতকাল থেকে ইস্তানবুলে শুরু হয়েছে আইএটিএর ৭৯তম বার্ষিক সাধারণ সভা। তিনদিনের এ সভায় বৈশ্বিক উড়োজাহাজ সম্প্রদায়ের সদস্যরা জড়ো হয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন