
উচ্চমানসম্পন্ন বৈচিত্র্যময় ডিভাইস উন্মোচনের মাধ্যমে বিশ্ববাজারে ডিভাইস বিক্রিতে শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে অ্যাপল। এরই ধারাবাহিকতায় অপারেটিং সিস্টেম ম্যাক ও আইফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি এবার আরেকটি চমক নিয়ে আসতে যাচ্ছে আসন্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড ডেভেলপারস কনফারেন্সে (ডব্লিউডিসি)। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ডব্লিউডিসিকে সামনে রেখে নতুন সিরিজের দুটি ম্যাক ডিভাইস এবং দুটি নিজস্ব প্রসেসর নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছে অ্যাপল। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, বিক্রয় বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে ম্যাক নির্মাতাটি শিগগিরই ‘প্রফেশনাল’ স্তরের কম্পিউটার ডিভাইস উন্মোচন করতে যাচ্ছে। খবর ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে।
ব্লুমবার্গের তথ্যানুযায়ী, অ্যাপলের নতুন পরিকল্পিত ম্যাক মডেল দুটি অভ্যন্তরীণভাবে লেভেলযুক্ত করা হয়েছে ‘ম্যাক ১৪,১৩’ এবং ‘ম্যাক ১৪,১৪’ নামে। এ ডিভাইস দুটিতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঘোষিত ‘এম২ ম্যাক্স’ প্রসেসর এবং উন্মোচনের অপেক্ষায় থাকা ‘এম২ আল্ট্রা’ চিপ সংযুক্ত করা হয়েছে। দ্বিতীয় অর্থাৎ ‘এম২ আল্ট্রা’ প্রসেসরটি ম্যাক স্টুডিওতে বর্তমানে ফিচারকৃত ‘এম১ আল্ট্রা’ মডেলের চিপকে প্রতিস্থাপন করবে, যা গত বছরের মার্চে উন্মোচিত একটি উচ্চ মানের ডেস্কটপ।
নতুন ঘোষিত কম্পিউটারগুলো ম্যাক সিরিজকে নতুন করে সাজানোর এবং কম্পিউটার শিল্পের বাজার মন্দার সময়ে গ্রাহক আকৃষ্টের চেষ্টার অংশ। উচ্চকার্যক্ষমতাসম্পন্ন ডেস্কটপ মডেলগুলো তৈরির সময় ভিডিও এডিটর বা গ্রাফিক ডিজাইনারদের মতো ‘প্রফেশনাল’ ব্যবহারকারীদের চাহিদার বিষয়টি মাথায় রাখা হয়েছে। ডব্লিউডিসি অনুষ্ঠিত হতে অল্প ক’দিন বাকি। ডেভেলপারদের এ বার্ষিক সম্মেলনটির আগে অ্যাপ নির্মাতাদের জন্য উপযোগী ডিভাইস তৈরির মাধ্যমে বিক্রি বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ের পর্যবেক্ষণে প্রথম ডেস্কটপ কম্পিউটারটিতে ‘৮ হাই-পারফরম্যান্স কোর’সহ একটি ‘এম২ ম্যাক্স’ প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। পাশাপাশি ‘৪ এফিসিয়েন্সি কোর’ এবং ‘৩০ গ্রাফিকস কোর’ যুক্ত করা হয়েছে। এ ধরনের একই স্পেসিফিকেশন ‘ম্যাকবুক প্রো’ মডেলেও রয়েছে। বিশেষ এ চিপে ৯৬ গিগাবাইট মেমরি রয়েছে এবং এটি ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম ১৩.৪ সংস্করণে যুক্ত আছে। সম্প্রতি এ ডিভাইসটি উন্মোচিত হয়েছে।
অ্যাপলের পরীক্ষার দ্বিতীয় ডিভাইসটিতে ‘এম২ আল্ট্রা’ চিপ রয়েছে। বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে যদিও এখনো ঘোষণা করা হয়নি। নতুন এ চিপটি ‘২৪ প্রসেসিং কোর’ নিয়ে কাজ করে, যা ‘এম২ ম্যাক্স’ মডেলের পারফরম্যান্স দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়। এ চিপে ‘১৬ হাই-পারফরম্যান্স কোর’ এবং ‘৮ এফিসিয়েন্সি কোর’, ও ‘৬০ গ্রাফিকস কোর’ রয়েছে। অ্যাপল এটিকে ৬৪ গিগাবাইট, ১২৮ গিগাবাইট এবং ১৯২ গিগাবাইট মেমরির কনফিগারেশনের জন্য যাচাই করছে।
ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ‘এম২ আল্ট্রা’ চিপে আরো কার্যক্ষমতাসম্পন্ন অপশন থাকবে। এর মধ্যে একটি অপশন হলো ৭৬ গ্রাফিকস কোরসম্পন্ন চিপ। বর্তমানে এটি ‘এম২ ম্যাক্স’ চিপে থাকা ‘৩৮ প্রসেসিং’ কোরের দ্বিগুণ। ‘এম২ আল্ট্রা’ চিপটি প্রাথমিকভাবে হাই-এন্ড ‘ম্যাক প্রো’ ডেস্কটপের ভবিষ্যৎ সংস্করণে ডিজাইন করা হয়েছিল। বর্তমানে ডিভাইসটিতে ইন্টেল করপোরেশনের চিপ ব্যবহার করা হচ্ছে।
অ্যাপলের নতুন ‘ম্যাক প্রো’ কবে আসবে তা নিয়ে অস্পষ্টতা ছিল। এক বছরেরও বেশ কিছু আগে বলা হয়েছিল, শিগগিরই একটি আপডেটেড মডেল আসতে যাচ্ছে। অ্যাপলের অভ্যন্তরীণ চিপসহ ভবিষ্যতের ‘ম্যাক প্রো’ মডেলকে ‘ম্যাক ১৪,৮’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বোঝা যায়, পরীক্ষাকৃত সর্বশেষ ডেস্কটপগুলো বর্তমান ‘এম১ ম্যাক্স’ এবং ‘এম১ আল্ট্রা’ চিপের পরিবর্তিত নতুন চিপযুক্ত ডিভাইস ব্লুমবার্গের এপ্রিলের প্রতিবেদন বলা হয়েছে, দুটি নতুন ম্যাক স্টুডিও আপডেট করা হয়েছে।
অ্যাপল ‘ম্যাকবুক এয়ার’-এর একটি ১৫ ইঞ্চি সংস্করণও তৈরি করছে। পাশাপাশি ১৩ ইঞ্চি ম্যাকবুক এয়ার এবং ৩ ন্যানোমিটার এম৩ প্রসেসরসহ ১৫ ইঞ্চি মডেলের ডিভাইসও আনতে যাচ্ছে। এছাড়া একটি লোয়ার-এন্ড ১৩ ইঞ্চি ‘ম্যাকবুক প্রো’ এবং নতুন প্রজন্মের চিপযুক্ত আইম্যাক ডিভাইস চালুর পরিকল্পনা করছে। ডেভেলপার এক্সপোয় অ্যাপলের বহু প্রতীক্ষিত মিক্সড রিয়ালিটি হেডসেট উন্মোচন করার তথ্য জানিয়েছে ব্লুমবার্গ।