অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও মূল্যস্ফীতি

কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়লেও বেকারত্ব কমেনি যুক্তরাষ্ট্রে

বণিক বার্তা ডেস্ক

মে মাসে বিপুল কর্মসংস্থান হয়েছে হাসপাতাল, রেস্তোরাঁ, বার ও নির্মাণ স্থাপনাগুলোয় ছবি: বিবিসি

চলমান অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও মূল্যস্ফীতির সময়েও যুক্তরাষ্ট্রে শক্তিশালী হয়েছে চাকরির বাজার। মে মাসে নতুন করে ৩ লাখ ৩৯ হাজার কর্মী যোগ দিয়েছে চাকরিতে। যদিও বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৭ শতাংশে। এপ্রিলে এর হার ছিল ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। নিয়োগের পরিমাণ প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি থাকার পরও বেকারত্বের হার বেড়ে যাওয়া বিস্মিত করেছে বিশ্লেষকদের। মার্কিন শ্রমবিভাগ প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। 

বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসের বরাতে বিবিসিতে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, মূল্যস্ফীতি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার বাড়ার জেরে নিয়োগের পরিমাণ কমতে পারে। কিন্তু বেতন কাঠামো ও চাকরির নিরাপত্তা এখনো যথেষ্ট স্বাভাবিক। এদিকে কাটতে শুরু করেছে আশঙ্কা। যদিও ফেড নিয়ে দ্বিধা সরে যায়নি। 

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক আরো এক দফা সুদের হার বাড়াতে পারে। এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৪ দশমিক ৯ শতাংশ, যা ফেডের নির্ধারিত সহনীয় মাত্রার চেয়ে ২ শতাংশ বেশি। চাকরিপ্রাপ্তির সংখ্যা বাড়ার পরও বেড়েছে বেকারত্ব। সেদিকে ইঙ্গিত করে বিশ্লেষক ইয়ান শেফার্ডসন প্রতিবেদনটিকে ‘‌অদ্ভুত’ আখ্যা দিয়েছেন। মে মাসে বিপুল কর্মসংস্থান হয়েছে হাসপাতাল, রেস্তোরাঁ, বার ও নির্মাণ স্থাপনাগুলোয়। বাকি খাতে সে অনুপাতে বাড়েনি। ফলে ফেড হয়তো আরো এক দফা সুদের হার বাড়াতে পারে। শ্রমবিভাগের দাবি অনুযায়ী, মে মাসে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি মানুষ চাকরিতে যুক্ত হয়েছে। যদিও ৩ দশমিক ৭ বেকারত্বের হারও গত সাত মাসের তুলনায় বেশি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নতুন প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, ‘এটা মার্কিন অর্থনীতি ও কর্মীদের জন্য চমৎকার একটা দিন।’ তবে চাকরি প্রাপ্তির খবর টেকসই হবে না বলে মনে করছেন কেউ কেউ। 

প্রিন্সিপাল এসেট ম্যানেজমেন্টের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সিমা শাহ জানান, অর্থনীতিতে এ উত্তরণ টেকসই নয়। বরং মে মাসের উল্লম্ফনই প্রমাণ করে, ফেডের কাজ এখনো যথেষ্ট বাকি আছে। প্রশ্ন হলো জুলাই পর্যন্ত এ স্রোত টিকবে, নাকি নতুন কোনো জরুরি অবস্থা তৈরি হবে। বেকারত্বের হার বাড়ছে, সেই সঙ্গে ঘণ্টাপ্রতি আয়ের হার কমছে। সার্বিকভাবে শ্রমবাজার স্থিতিশীল হচ্ছে না। আর শ্রমবাজার স্থিতিশীল না হলে মূল্যস্ফীতিও ২ শতাংশে নামানো সম্ভব হবে না। 

যদি মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়াতে থাকে, তাতে বেড়ে যাবে আবাসন, ব্যবসা ও অন্যান্য ঋণের খরচ। আর খরচ বাড়লে অধিবাসীদের মধ্যে ব্যয়ের চাহিদাও কমবে। তবে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রত্যাশাই করছে সবাই। 

এইচএসবিসির বিনিয়োগবিষয়ক কৌশলবিদ হোসাইন মেহদির দাবি, বছরের শেষ দিকে ফেডের অবস্থান অর্থনীতি ও বাণিজ্যিক পদক্ষেপগুলোকে প্রভাবিত করতে পারে। চাকরির বাজার কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়তে পারে তখন। দেখা দিতে পারে নব্বই দশকের মতো আরো একটি অর্থনৈতিক মন্থরতা। 

বর্তমানে ওয়াল স্ট্রিট জুন মাসে ফেডের মিটিংয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। এদিকে শক্তিশালী হয়েছে মার্কিন শেয়ার বাজারের চালচিত্র। দ্য ডৌ জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ বেড়েছে ২ দশমিক ১ শতাংশ, এস অ্যান্ড পি ৫০০ বেড়েছে ১ দশমিক ৪৫ ও নাসডাক বেড়েছে ১ শতাংশ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন