ভারতে রেল খাতে বড় বিনিয়োগের মাঝে ভয়াবহ দুর্ঘটনা

বণিক বার্তা অনলাইন

ছবি: রয়টার্স

সাম্প্রতিক ভারতীয় ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিবহন দুর্ঘটনাটি ঘটল গতকাল শুক্রবার (২ জুন)। ওড়িশা রাজ্যের বলেশ্বর শহরে দুটি যাত্রীবাহী ও একটি মালবাহী ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৮৮ জন নিহত ও আহত হয়েছেন সহস্রাধিক। 

উদ্ধারকারীরা ধারণা করছেন মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। তারা বলছেন, অনেক মানুষ উল্টে যাওয়া বগি নিচে আটকা পড়েছে।

এমন এক সময়ে এই দুর্ঘটনা ঘটল, যখন রেল কেন্দ্রিক যোগাযোগ আরো বাড়াতে কাজ করছে দেশটির সরকার।

২০২২-২৩ অর্থ বছরে ভারতের রেল মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ মোট বাজেটের পরিমাণ এক লাখ ৪০ হাজার ৩৬৭ কোটি রুপি।

দুর্ঘটনার কারণ অস্পষ্ট হলেও ভারতের রেল দুর্ঘটনা প্রায় ঘটে থাকে। বছরে হাজার হাজার মানুষ রেল লাইনে প্রাণ হারান। এর জন্য অনেক ক্ষেত্রে দেশটির পুরোনো রেল অবকাঠামোকে এর জন্য দায়ী করা হয়।

১৪০ কোটি জনসংখ্যার ভারতে কয়েক দশক ধরে রেলওয়ে জর্জরিত অবস্থায় রয়েছে। সুরক্ষা ব্যবস্থায় ঘাটতি গতকালের দুর্ঘটনায় নতুন করে সামনে এসেছে।

সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানায়, ভারতের ট্রেনগুলো প্রতিদিন এক কোটি ৩০ লাখ যাত্রী পরিবহন। সম্প্রতি রেলওয়ের উন্নয়নের জন্য সরকার কোটি কোটি রুপি বিনিয়োগ করলেও লাইনগুলো এখনো খারাপ অবস্থায় রয়েছে।

দেশটির বিস্তৃত রেল নেটওয়ার্ক পুরোনো অবকাঠামো ও দুর্বল রক্ষণাবেক্ষণের কারণে ভুগছে। যা প্রায়শই দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়ে থাকে। এক পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালে ভারতে প্রায় ১৮ হাজার রেল দুর্ঘটনা ঘটে। ওই সব ঘটনায় ১৬ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল।

ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস অনুসারে, বেশিরভাগ দুর্ঘটনা অর্থাৎ ৬৭ দশমিক ৭ শতাংশ ঘটে ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়া ও লাইনে ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কার কারণে।

গতকালের দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা এরই মধ্যে ২০১৬ সালের আরেকটি ভয়াবহ ঘটনাকে ছাড়িয়ে গেছে। ওই সময় উত্তর প্রদেশে বগি লাইনচ্যুত হয়ে ১৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল।

সর্বশেষ দুর্ঘটনাটি ঘটল তখনই যখন ভারত রেল অবকাঠামোর পরিসর বৃদ্ধি ও আধুনিকীকরণের জন্য কোটি কোটি রুপি বিনিয়োগ করছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজধানী নয়াদিল্লিকে মুম্বাইয়ের সঙ্গে সংযোগকারী এক হাজার ৩৮৬ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম অংশের উদ্বোধন করেন। বছরের শেষ দিকে জম্মু ও কাশ্মীর চালু হবে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রেলসেতু।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন